Tin can curt man who made one million pound from recycling can dgtl
Tin Can Curt
ফেলে দেওয়া খাবার খেয়ে পেট ভরাতেন, মৃত্যুর পর সেই ভবঘুরের অ্যাকাউন্টে মেলে কোটি কোটি টাকা!
নিজের বলতে তেমন কেউ ছিলেন না। সেই ‘ভবঘুরে’ই যখন হঠাৎ মারা গেলেন, দেখা গেল তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে ১০ লক্ষ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
দিনের পর দিন একটাই পোশাক। গায়ে বোঁটকা গন্ধ। রাস্তায় পড়ে থাকা টিনের ক্যান কুড়িয়ে বিক্রি করতেন। লোকের ফেলে দেওয়া স্যান্ডউইচ খেয়ে পেট ভরাতেন। এ ভাবেই কেটেছিল জীবনের চল্লিশটা বছর। নিজের বলতে তেমন কেউ ছিলেন না। সেই ‘ভবঘুরে’ই যখন হঠাৎ মারা গেলেন, দেখা গেল তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে ১০ লক্ষ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
০২১৪
নাম কার্ট ডেগেরম্যান। লোকে ডাকত টিন ক্যান-কার্ট বলে। উত্তর সুইডেনের স্কেলেফটিয়ার বাসিন্দা ছিলেন কার্ট। কখনও কারও কোনও ক্ষতি করেননি। দিনভর রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। আর রাস্তা থেকে টিনের ক্যান কুড়িয়ে নিতেন। অনেকেই তাঁকে পাগল বলতেন।
০৩১৪
রাস্তা থেকে টিনের ক্যান কুড়িয়ে নিয়ে দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন কার্ট। তখন কারও মাথাতেও আসেনি, ওই টাকা দিয়ে কী করেন তিনি? কোথায় খরচ করতেন?
০৪১৪
প্রায় সারা জীবন একটা নীল জ্যাকেট পরেই কাটিয়েছেন কার্ট। খুব দরকার না পড়লে সে সব কাচতেনও না। রাস্তায় যা কুড়িয়ে পেতেন, তা-ই খেতেন। কখনও কোথাও বিনা খরচে কিছু খাবার মিললে তা নিতে চলে যেতেন কার্ট। অনেক দিন কিছু না খেয়েও কাটিয়ে দিতেন।
০৫১৪
কার্টকে রোজ যাঁরা দেখতেন, কোনও দিন ভাবতেই পারেননি কিসে তাঁর ঝোঁক। আসলে শেয়ার কেনাবেচায় দারুণ ঝোঁক ছিল কার্টের। বাতিল ক্যান বিক্রির টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করতেন।
০৬১৪
শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য পরিশ্রমও কম করতেন না কার্ট। কী করতেন? রোজ খবরের কাগজে ব্যবসা এবং শেয়ার সংক্রান্ত সব খবর পড়তেন। ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা খতিয়ে দেখতেন।
০৭১৪
খবরের কাগজও কিনে পড়তেন না কার্ট। রোজ স্থানীয় লাইব্রেরি যেতেন। সেখানে গিয়ে খবরের কাগজ পড়তেন। তাঁর এক ভাগ্নে জানিয়েছেন, লাইব্রেরি গিয়ে সুইডেন বিজনেস ডেলি পড়তেন তিনি।
০৮১৪
কার্টের তুতো ভাইয়ের দাবি, কোন শেয়ার কখন কেনা দরকার, কখন বিক্রি করা দরকার, তা খুব ভাল বুঝতেন তিনি।
০৯১৪
এক দিন হঠাৎই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান কার্ট। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর। তাঁর আত্মীয়রা জানতে পারেন, সুইস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ৭ লক্ষ ৩১ হাজার পাউন্ড রয়েছে কার্টের নামে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সওয়া ৭ কোটি টাকা।
১০১৪
এখানেই শেষ নয়। সোনার বারও কিনে রেখেছিলেন কার্ট। সেই সোনার বারের মূল্য ২ লক্ষ ৫০ হাজার পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। বাড়িতে খুচরো হিসাবে পড়েছিল ২৭৫ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় ২৭ হাজার টাকারও বেশি।
১১১৪
মৃত্যুর আগে উইল করেছিলেন কার্ট। নিজের যাবতীয় সম্পত্তি এক তুতো ভাইয়ের নামে লিখে গিয়েছিলেন। সেই তুতো ভাই মাঝেমধ্যে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। তাঁর খোঁজখবর নিতেন।
১২১৪
সেই ভাই জানিয়েছিলেন, পড়াশোনায় বেশ ভাল ছিলেন কার্ট। স্কুলে পড়েছিলেন। তার পর ব্যক্তিগত কারণে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন। কেন? সে কথা জানাতে চাননি কার্টের ভাই।
১৩১৪
তবে এক ভাই এত সম্পত্তি পেয়েছেন দেখে কার্টের অন্য তুতো ভাই মামলা ঠুকে দেন। তিনি দাবি করেন, কার্টের কাকা হিসাবে তাঁর বাবারও কিছু প্রাপ্য রয়েছে। সেই মামলা চলেছিল বেশ কয়েক বছর।
১৪১৪
শেষ পর্যন্ত আদালতের বাইরেই রফা করেছিলেন কার্টের দুই ভাই। কার্টের সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ নেন তাঁরা। কে কত টাকা পেয়েছিলেন, তা অবশ্য জানাতে চাননি দু’জনের কেউই। তবে জানিয়েছিলেন, যা পেয়েছেন, তাতে দু’জনেই খুশি।