Thousands of bees chased SUV for 2 long days in Wales to rescue their valuable thing dgtl
Bee
গাড়িতে আটকে ‘অমূল্য রতন’, দু’দিন ধাওয়া করে ছিনিয়ে নিল হাজার মৌমাছির ঝাঁক
গাড়ির পিছু নিয়েছিল এক ঝাঁক মৌমাছি। দু’দিন গাড়িটিকে তারা ধাওয়া করে। নেপথ্যে ছিল গূঢ় কারণ। তবে সেই কারণ প্রকাশ্যে আসে অনেক পরে। মৌমাছিদের নিয়ে তার আগে আরও অনেক কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা
লন্ডনশেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সাদা এসইউভি গাড়ি। মসৃণ পথ বেয়ে ছুটছিল আপন খেয়ালে। কিন্তু গাড়িটির সঙ্গে যে আরও অনেক সঙ্গী জুটে গিয়েছিল, তার দিকে নজরই পড়েনি চালকের।
০২১৫
সাদা রঙের মিৎসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ৬৮ বছরের ক্যারোল হোয়ার্থ। দক্ষিণ ওয়েলসের একটি সংরক্ষিত বনভূমিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন।
০৩১৫
তার গাড়ির পিছু নিয়েছিল এক ঝাঁক আগন্তুক। তারা মানুষ নয়। মৌমাছি। জঙ্গলের হাজার হাজার মৌমাছির ঝাঁক চার চাকা গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিল। নেপথ্যে ছিল গূঢ় কারণ। তবে সেই কারণ অনেক পরে জানা গিয়েছিল।
০৪১৫
মৌমাছিরা কখনও সাদা গাড়িটির উপর নজর রাখতে তার পিছন পিছন উড়ছিল, কখনও আবার গাড়ির পিছনের কাচে ভিড় করে বসেছিল। গাড়ির কাচ ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ। যে কারণে চাইলেও ভিতরে ঢুকতে পারেনি একটিও মৌমাছি।
০৫১৫
২০১৬ সালের মে মাসের ঘটনা। জঙ্গল থেকে ফেরার পথে কেনাকাটা করতে হ্যাভারফোর্ডওয়েস্ট শহরে থেমেছিলেন বৃদ্ধা। সে সময় মৌমাছিগুলিকে দেখতে পান জনৈক বনকর্মী। তাঁর নাম টম মসেস। মৌমাছির ঝাঁক দেখে বিপদের গন্ধ পেয়েছিলেন টম। ফলে নিজেই আসরে নামেন।
০৬১৫
বনকর্মী হিসাবে জঙ্গলের পশুপাখি, কীটপতঙ্গ নিয়েই টমের কারবার। একটি গাড়ির পিছনে এত মৌমাছিকে জড়ো হতে দেখে তাঁর প্রধান চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পতঙ্গগুলির নিরাপত্তা। পাছে কেউ তাদের কোনও ক্ষতি করে ফেলে, তাই তড়িঘড়ি নিজেই মৌমাছিগুলিকে সরানোর জন্য উদ্যোগী হন টম।
০৭১৫
ওই বনকর্মীর কথায়, ‘‘উপযুক্ত বনজঙ্গলের অভাব, নানা আধুনিক কৃষি প্রকল্পের কারণে এমনিতেই মৌমাছির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তার মধ্যে কেউ যদি মৌমাছি তাড়াতে ওদের উপর ফুটন্ত জল ঢেলে দেয়, সেটা খুব খারাপ হত।’’
০৮১৫
স্থানীয় মৌমাছি সংরক্ষণ কেন্দ্রে খবর দেন বনকর্মী টম। পেমব্রোকশায়ার বিকিপার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৌমাছিগুলিকে সুকৌশলে একটি বাক্সের মধ্যে বন্দি করে ফেলেন। তার পর আবার তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
০৯১৫
গোটা প্রক্রিয়াটি কিন্তু একেবারে নির্বিঘ্ন ছিল না। মৌমাছিদের বাক্সবন্দি করতে গিয়ে তাদের হুল ফুটেছে অনেকের শরীরে। বনকর্মী থেকে শুরু করে পথচলতি মানুষ, অনেকেই জখম হয়েছিলেন।
১০১৫
কিন্তু এর পরেই আসে কাহিনিতে ‘টুইস্ট’। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আরও এক বার চমক লাগে সেই সাদা চার চাকার মালিক বৃদ্ধা ক্যারোলের। তিনি দেখেন, মৌমাছির ঝাঁক আবার তাঁর গাড়িতে এসে বসেছে। হাজার হাজার মৌমাছির গুঞ্জনে ছেয়ে গিয়েছে চার দিক।
১১১৫
তড়িঘড়ি আবার মৌমাছি সংরক্ষণ কেন্দ্রে সাহায্যের আর্জি জানান বৃদ্ধা। কর্মীরা আবার ছুটে আসেন। সে দিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে গাড়িটি মৌমাছিমুক্ত করা গিয়েছিল। কিন্তু কী এমন ছিল সেই গাড়িতে? কিসের টানে বার বার ছুটে এসেছিল পতঙ্গের দল?
১২১৫
বনকর্মীরা জানান, গাড়ির মধ্যে আটকে পড়েছিল রানি মৌমাছি। সমগ্র মৌমাছির ঝাঁক তাকে খুঁজতেই বার বার গাড়িতে ফিরে যাচ্ছিল। রানি মৌমাছিকে উদ্ধার করার আগে হাল ছাড়েনি কেউ। সে যে রানি! মৌমাছিদের ‘অমূল্য রতন’।
১৩১৫
বিশেষজ্ঞেরা জানান, রানি মৌমাছি থাকে মৌচাকের কেন্দ্রে। সে-ই মৌমাছির ঝাঁককে পরিচালনা করে। রানি মৌমাছি কোনও কারণে মৌচাক ছেড়ে কোথাও গেলে তাকে তৎক্ষণাৎ অনুসরণ করে বাকিরা।
১৪১৫
মূলত দু’টি কারণে পুরনো মৌচাক ছেড়ে নতুন জায়গার সন্ধানে যায় রানি মৌমাছি। মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণী তাদের বিরক্ত করলে মৌচাক বদল করে। এ ছাড়া, অন্য কোনও রানি মৌমাছি তাদের জায়গায় দখল নিতে এলে পুরনো বাস উঠিয়ে সদলবদলে পালায় সে।
১৫১৫
বনকর্মীদের অনুমান, বৃদ্ধা যখন জঙ্গলে বেড়াতে গিয়েছিলেন, মৌচাক বদলের ছক কষছিল রানি মৌমাছিটি। গাড়ির আশপাশে উড়তে উড়তে কোনও কারণে ভিতরে ঢুকে পড়ে সে। তার পর আর বেরিয়ে আসার পথ পায়নি। রানির ‘প্রজা’রা তাকে উদ্ধারে ‘হামলা’ চালায়।