This is the world largest residence which is housed in india and have a bengal connection too dgtl
World's Largest Residence
বাকিংহাম প্রাসাদের চার গুণ, রয়েছে বাঙালি যোগ! কোথায় রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বসতবাড়ি?
ইট-কাঠ-পাথরের বড় বড় ইমারত তৈরি করা সহজ। কিন্তু সেই ইমারতকে বাড়ি বানাতে দরকার আরও অনেক কিছু। পৃথিবী জুড়ে তেমন বড় ইমারত অনেক আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় বসত বাড়িটি রয়েছে আমাদের ভারতে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১৩০
ইট-কাঠ-পাথরের বড় বড় ইমারত তৈরি করা সহজ। কিন্তু সেই ইমারতকে বাড়ি বানাতে দরকার আরও অনেক কিছু। পৃথিবী জুড়ে তেমন বড় ইমারত অনেক আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় বসত বাড়িটি রয়েছে আমাদের ভারতে।
০২৩০
আকারে এতটাই বড় সেই বাড়ি, যে বাকিংহাম প্রাসাদকেও টেক্কা দেয়!
০৩৩০
যদিও এই বাড়ি দেশের ধনীশ্রেষ্ঠ মুকেশ অম্বানির সাধের অ্যান্টিলিয়া নয়। আদানি কিংবা বিড়লাদের বাড়িও নয়।
০৪৩০
এই বাড়ির ঠিকানা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে। যদিও তাঁর সঙ্গে এই বাড়ির কোনও যোগ নেই।
০৫৩০
যোগ রয়েছে এই বাংলারই দুই অভিনেত্রীর। রিয়া সেন এবং রাইমা সেনের।
০৬৩০
বাংলা সিনেমার মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের দুই নাতনির সঙ্গে এই প্রাসাদের যোগ কী ভাবে? সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি। তার আগে জেনে নেওয়া যাক এই বাড়ির ইতিহাস।
০৭৩০
আকারে ব্রিটেনের রাজবাড়ি বাকিংহাম প্রাসাদের থেকে চারগুণ বড় এই প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক বরোদার গায়েকোয়াড় রাজপরিবার। মরাঠী এই রাজবংশ এককালে গুজরাতের বরোদাতেও রাজত্ব করেছে।
০৮৩০
এই বংশেরই রাজা মহারাজা তৃতীয় সওয়াজি রাও গায়কোয়াড় বানিয়েছিলেন এই রাজপ্রাসাদ। নাম ‘লক্ষ্মীবিলাস প্যালেস’। সেটা ১৮৯০ সাল।
০৯৩০
৫০০ একর বিস্তৃত জমির উপর ওই বিরাট প্রাসাদ বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্রিটেনের নামী স্থপতি মেজর চার্লস মন্তকে।
১০৩০
মন্ত ততদিনে কোলাপুর আর দ্বারভাঙ্গার প্রাসাদ বানিয়ে বিখ্যাত। বরোদার মহারাজার প্রস্তাবে তিনি রাজি হন। তবে মোটা পারিশ্রমিকও নেন। কারণ কাজটা ছিল তাঁর অন্যান্য কাজের থেকে অনেক বেশি কঠিন।
১১৩০
তিন কোটি চার লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুটের একখানা বিশাল রাজপ্রাসাদকে দাঁড় করানো মুখের কথা নয়। বিষয়টা কতখানি বড় তা ব্রিটেনের রাজপ্রাসাদের সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে।
১২৩০
বাকিংহাম প্যালেস দাঁড়িয়ে রয়েছে মাত্র আশি লক্ষ ২১ হাজার ৮২১ বর্গফুট এলাকায়। বরোদার লক্ষ্মীবিলাস প্যালেসে এমন চারটি প্রাসাদ অনায়াসে ঢুকে যাবে।
১৩৩০
শোনা যায় এই প্রাসাদটি বানাতে সেই সময় খরচ হয়েছিল এক লক্ষ ৮০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড স্টারলিং। আর আজকের দিনে এই প্রাসাদের মূল্য কম করে হলেও দাঁড়াবে ২৫ হাজার কোটি টাকায়।
১৪৩০
মন্তের মোটা পারিশ্রমিকের অবশ্য আরও অনেক কারণ আছে। সে যুগে এই প্রাসাদে ছিল আধুনিক এবং বিলাসবহুল ব্যবস্থাপনার খনি।
১৫৩০
আজ থেকে ১৩৩ বছর আগে তৈরি সেই প্রাসাদে ছিল লিফট। রাজবাড়িতে আসা ইউরোপীয় অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ‘টেন হোল গল্ফ কোর্স’ বা গল্ফ খেলার মাঠ। প্রাসাদের প্রশস্ত উদ্যানে ছিল ক্লাব হাউসও। এখন সেই গল্ফের মাঠ অবশ্য অবারিত জনতার জন্য।
১৬৩০
প্রাসাদের ভিতরেই ছিল রাজকন্যা এবং রাজপুত্রদের জন্য স্কুল। আর সেই স্কুলে তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আসত বিশেষ ট্রেন। সেই ছোট রেলগাড়ি এবং ছোট রেললাইনও প্রাসাদের ভিতরেই তৈরি করিয়েছিলেন মহারাজা সওয়াজি রাও। সেই স্কুল অবশ্য এখন জাদুঘর। নাম মহারাজা ফতে সিংহ মিউজিয়াম। আর সেই রেলগাড়ির ইঞ্জিনটিও প্রদর্শিত রয়েছে সেখানেই।
১৭৩০
রাজবাড়ির ভিতরে মোতিবাগে তৈরি করা হয়েছিল ক্রিকেট খেলার মাঠ। তবে সেই মাঠে শুধু ক্রিকেট নয়, ব্যবস্থা ছিল টেনিস এবং ব্যাডমিন্টন খেলারও। কাঠের মেঝে তৈরি করে বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছিল সেই ব্যাডমিন্টনের কোর্ট। এক কালে এই কোর্টে অল ইন্ডিয়া ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ খেলাও হয়েছে।
১৮৩০
লক্ষ্মীবিলাস প্রাসাদে সে যুগেও ছিল শরীর চর্চার কেন্দ্র, ছিল সাঁতার সরোবর। সে সবের এখন আধুনিকীকরণ হয়েছে। এখন প্রাসাদের ভিতরে রয়েছে বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মূল দফতর।
এ হেন প্রাসাদটি প্রায় পুরোটাই তৈরি করে ফেলার পর ব্রিটিশ স্থপতির হঠাৎ মনে হয় প্রাসাদটি খুব শীঘ্রই ভেঙে পড়বে। প্রবল অপরাধবোধ থেকে তিনি কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই আত্মহত্যা করেন। যদিও ওই প্রাসাদ আজও নিজের জায়গা থেকে টলেনি।
২১৩০
মন্তের বাকি থাকা কাজ সম্পূর্ণ করেন ব্রিটেনেরই আরও এক স্থপতি রবার্ট ফেলোজ ক্রিসহোম।
২২৩০
বর্তমানে এই প্রাসাদ বংশানুক্রমে হাতে এসেছে মহারাজা সমরজিৎ সিংহ গায়কোয়াড়ের। তাঁর স্ত্রী রাধিকারাজে গায়কোয়াড়।
২৩৩০
আর এঁরা জন্মসূত্রে বাংলার অভিনেত্রী রাইমা এবং রিয়ার আত্মীয়।
২৪৩০
সম্পর্কের সূত্র অবশ্য এই প্রাসাদের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা সওয়াজি রাও নিজেই।
২৫৩০
তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা ইন্দিরা দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় কোচবিহারের রাজপুত্র জিতেন্দ্র নারায়ণের সঙ্গে। যিনি পরে কোচবিহারের রাজা হন।
২৬৩০
ইন্দিরা দেবী ছিলেন সওয়াজি রাওয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিমিবাইয়ের কন্যা। এবং কোচবিহারের রানি।
২৭৩০
তাঁরই পাঁচ পুত্র কন্যার মধ্যে বড় মেয়ে ইলাদেবীর সন্তান ভারত দেববর্মণ। যিনি ত্রিপুরার রাজপুত্র এবং বিয়ে করেছিলেন বাঙালি অভিনেত্রী সুচিত্রা-কন্যা মুনমুন সেনকে।
২৮৩০
ইন্দিরা দেবীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে জগৎ সিংহ ছিলেন কোচবিহারের রাজা। কনিষ্ঠা কন্যা রাজকুমারী গায়ত্রী দেবী পরে হন রাজস্থানের রাজা মান সিংহের রানি।
২৯৩০
তিন কন্যার মধ্যে জ্যেষ্ঠ ইলা দেবীর (ছবিতে ডান দিকে) বিয়ে হয়েছিল ত্রিপুরার মহারাজা রমেন্দ্রকৃষ্ণ দেববর্মার সঙ্গে। তাঁদেরই সন্তান ভরত। রিয়া-রাইমা সম্পর্কে ইলা দেবীর নাতনি।
৩০৩০
অর্থাৎ বিশ্বের অন্যতম বড় প্রাসাদ আর সবচেয়ে বড় বাসস্থান গুজরাতের বরোদায় হলেও তার সঙ্গে খুব দূরের সম্পর্ক নয় বাংলার। বরং সুতোয় হালকা টানেই একে একে চলে আসবে কলকাতা থেকে কোচবিহার।