Uganda's district has been affected by a mysterious illness named dinga dinga dgtl
dinga dinga disease
অজানা রোগে কাঁপছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ! ফিরল প্রাচীন ভয়ঙ্কর রোগ? না আর এক মহামারির ইঙ্গিত?
আফ্রিকার উগান্ডার একটি জেলা বুন্ডিবুগিওতে দেখা দিয়েছে একটি সংক্রমণ, স্থানীয় ভাষায় যার নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
অজানা আতঙ্কে কাঁপছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডা। সে দেশের শয়ে শয়ে নারী ও কিশোরীরাই মূলত আক্রান্ত হচ্ছেন এক রহস্যময় সংক্রমণে। করোনা অতিমারির পর থেকে নতুন রোগের আগমনের কথা ছড়িয়ে পড়তেই তা নিয়ে শঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন বিশ্ববাসী।
০২১৬
উগান্ডার একটি জেলা বুন্ডিবুগিওতে দেখা দিয়েছে এমনই একটি সংক্রমণ। সোয়াহিলি ভাষায় যার নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
০৩১৬
যেমন অদ্ভুত নাম এই রোগটির, তেমনই অদ্ভুত এর উপসর্গ। উগান্ডার স্থানীয় ভাষায় ডিঙ্গা ডিঙ্গা নামের অর্থ ‘নাচের মতো কাঁপুনি’। যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের শরীরে দেখা দিচ্ছে ভয়াবহ কাঁপুনি, যা নিয়ন্ত্রণ করা কার্যত কঠিন হয়ে পড়েছে।
০৪১৬
ডিঙ্গা ডিঙ্গার লক্ষণগুলি উদ্বেগজনক ও একই সঙ্গে বেশ অস্বাভাবিকও। আক্রান্তদের জ্বর, কাঁপুনি, দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। হাঁটাচলা করতে সমস্যা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পঙ্গুও হয়ে যাচ্ছেন। তবে, এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
০৫১৬
ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড-১৯, ম্যালেরিয়া বা হামের মতো শ্বাসযন্ত্রের প্যাথোজেনগুলি এই অসুস্থতার জন্য দায়ী কি না তা জানতে উগান্ডার স্বাস্থ্য দফতর গবেষণা চালাচ্ছে। পরীক্ষার ফলাফল এখনও হাতে না-আসায় রোগের উৎস বা কারণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।
০৬১৬
উগান্ডার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে প্রথম বার ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ রোগের কথা প্রকাশ্যে আসে। যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, সর্দিকাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
০৭১৬
সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ও জ্বরের ওষুধ দিয়েই আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছেন স্থানীয় চিকিৎসকেরা। অধিবাসীদের অনেকেই ভেষজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করছেন।
০৮১৬
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কিয়িতা ক্রিস্টোফার জানিয়েছেন, কোনও ভেষজ ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তাই তিনি স্থানীয় অধিবাসীদের জেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ করেছেন।
০৯১৬
ঠিক কী কারণে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, তা স্পষ্ট নয়। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলেই এই রোগ ছড়াচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর।
১০১৬
সংক্রমণ রোধে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, আক্রান্তদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলা ও নতুন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে খবর দিতে অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
১১১৬
রোগীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। আপাতত বুন্ডিবুগিও জেলার বাইরে সংক্রমণ ছড়ায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ক্রিস্টোফার।
১২১৬
আচমকা কোথা থেকে এই রোগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠল সে সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে একই উপসর্গ সমেত কয়েক শতাব্দী পুরনো একটি রোগের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। রোগের ইতিহাস ঘেঁটে যে রোগটির সঙ্গে ডিঙ্গা ডিঙ্গার সাদৃশ্য পাওয়া গিয়েছে তা হল ‘ড্যান্সিং প্লেগ’।
১৩১৬
১৫১৮ সালে ফ্রান্সে স্ট্রাসবর্গে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই রোগে আক্রান্তরা টানা কয়েক দিন ধরে সর্ব ক্ষণ নেচে যেতেন। কোনও ভাবেই এই নাচ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল না। একই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা যেত। একটানা নাচের ফলে ক্লান্তি, এমনকি মৃত্যুও ঘটেছিল।
১৪১৬
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে ডিঙ্গা ডিঙ্গার কোনও সরাসরি যোগসূত্র নেই। আপাতত সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সাধারণত রোগীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে উগান্ডার স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়েছে।
১৫১৬
আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের দেশ কঙ্গোতে আর একটি অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেখানকার পাঞ্জি অঞ্চলে অজানা সংক্রমণে ৩৯৪ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর পক্ষ থেকে এই রোগ ছড়ানোর খবরে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। হু জানিয়েছে, এই রোগে ৩০ জন মারা গিয়েছেন।
১৬১৬
কঙ্গোতে যে সংক্রমণ হয়েছে তার আক্রান্তদের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, সর্দি এবং শরীরে ব্যথা। দুই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে উগান্ডার স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।