এই জনপদটির প্রতি আকর্ষণ আরও বহু গুণে বাড়িয়ে দিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। তাদের দাবি, আলমোড়ার নীচে নাকি লুকিয়ে রয়েছে এক প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ!
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সেখানে পৌঁছে নাকি ঘণ্টা দুয়েক কথাই বলতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন প্রাচীনত্বের গন্ধ মাখা সেই ছোট্ট পার্বত্য জনপদ আলমো়ড়ার সৌন্দর্যে! লিখেছিলেন— ‘এই মাটিতে রইল তাহার বিস্মিত প্রণাম’।
০২১৫
কুমায়ূন হিমালয়ের কোলে চির-দেবদারুর ছায়া আর মেঘ-কুয়াশায় মাখা এই শহরটির সৌন্দর্য দেখার জন্যই এখানে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। শ্রীকান্ত, গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, শতোপন্থ, কামেথ, দ্রোণগিরি, নন্দাদেবী, ত্রিশূল, নন্দকোট, পঞ্চশূল— একই ফ্রেমে এতগুলি পর্বতশৃঙ্গের দেখা মেলে এই আলমোড়াতেই।
০৩১৫
এই জনপদটির প্রতি আকর্ষণ আরও বহু গুণে বাড়িয়ে দিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। তাদের দাবি, আলমোড়ার নীচে নাকি লুকিয়ে রয়েছে এক প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ! যা ‘জীবিত’ ছিল নবম-দশম খ্রিস্টাব্দে। যখন কুমায়ুনে কাতুরি রাজবংশের শাসনকাল চলছে।
০৪১৫
এএসআই-এর অনুমান, প্রাচীন শহরটির ধ্বংসাবশেষ মিলতে পারে রামগঙ্গা নদীর তীরে গেওয়ার উপত্যকায়। ইতিমধ্যেই প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দল ওই জায়গাটিতে সমীক্ষা চালিয়েছে।
০৫১৫
এএসআই-এর দেহরাদূন শাখার পুরাতত্ত্ববিদ মনোজ সাক্সেনা জানান, শীঘ্রই জায়গাটিতে খননকাজ শুরু হবে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
০৬১৫
মনোজের কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা রিপোর্ট এসেছে, তা সন্তোষজনক। উপত্যকার চাখুতিয়া এলাকায় আরও একটি সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। শীঘ্রই যাতে খননকাজ শুরু করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। খননকাজের জন্য প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে এখন।’’
০৭১৫
কিন্তু গেওয়ার উপত্যকার নীচেই যে প্রাচীন শহর লুকিয়ে রয়েছে, এই সিদ্ধান্তে কী ভাবে উপনীত হলেন পুরাতত্ত্ববিদেরা?
০৮১৫
এক এএসআই আধিকারিক জানান, রামগঙ্গা নদী তিরবর্তী ১০ কিলোমিটার সমতল এলাকা জুড়ে প্রচুর মন্দিরের হদিস মিলেছে। যে মন্দিরগুলি মূলত কাতুরি রাজাদের আমলে তৈরি হয়েছিল। নবম-দশম খ্রিস্টাব্দে।
০৯১৫
মন্দিরগুলির অধিকাংশই আকারে ছোট। উচ্চতা মেরেকেটে এক-দু’ফুট! পুরাতত্ত্ববিদদের অনুমান, মন্দির তৈরির আগে থেকেই সেখানে জনবসতি ছিল।
১০১৫
পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের আধিকারিক চন্দ্রসিংহ চ্বহান জানান, ওই অঞ্চলে নব্বইয়ের দশকেও একটি সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা চালিয়েছিল গাঢ়ওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস বিভাগ।
১১১৫
তাদের সমীক্ষাতেও ওই এলাকায় একটি গণেশের মন্দির ও সাতটি নাথ সম্প্রদায়ের মন্দিরের হদিস মিলেছে। যা থেকেই অনুমান, জনবসতি ছিল ওই এলাকায়।
১২১৫
১৯৯৩ সালে হওয়া সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক রাকেশচন্দ্র ভট্ট। তিনি জানান, ওই সময় মাটি খুঁড়ে কবর, শৌচালয়, বড় ব়ড় হাঁড়ির হদিস মিলেছিল।
১৩১৫
রাকেশ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমরা যা যা পেয়েছি, তাতে স্পষ্ট যে, ওই এলাকা খুঁড়লে প্রাচীন সভ্যতার হদিস পাওয়া যাবে। এটা পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের জন্য বড় সাফল্য হবে।’’
১৪১৫
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেও ওই এলাকা থেকে একটি বিরাট শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল। সেটির উচ্চতা ছিল ১.২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ২ ফুট।
১৫১৫
সেই সময়েও পুরাতত্ত্ববিদেরা দাবি করেছিলেন, মন্দিরটি কাতুরি রাজাদের আমলেই তৈরি হয়েছিল।