উত্তর-পশ্চিম ভারতে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে থর মরুভূমি। গ্রীষ্মকালে এখানে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠে অসহ্য দাবদাহে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে। সারা বছরে মাত্র ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত বরাদ্দ থাকে এখানকার অধিবাসীদের জন্য। মুম্বই বা কলকাতায় কয়েক ঘণ্টায় এই পরিমাণ বৃষ্টি হয়। আবার শীতেও অসহনীয় অবস্থা। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে চলে যায় প্রতি বছর।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহওরলাল নেহরুর উদ্যোগে ও হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ার কানওয়ার সাইনের পরিকল্পনায় পঞ্জাবের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নদীর জল থরে টেনে আনার জন্য প্রস্তাব করা হয় একটি সেচ খালের মাধ্যমে। সাইন অনুমান করেছিলেন যে, বিকানের ও জয়সলমেরের উত্তর-পশ্চিম কোণে মরুভূমির ২০ লক্ষ হেক্টর জমিতে পঞ্জাবের নদীগুলির জল এনে সেচ করা যেতে পারে।
১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী এবং তাদের শাখানদীগুলির উপর পূর্ণ অধিকার পায় ভারত। তার পরেই রাজস্থানের অন্তর্গত থরের এলাকায় চাষবাষের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলতে ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ সেচখাল ‘ইন্দিরা ক্যানাল’ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।
গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা জানাচ্ছে, এই পরিবর্তিত রূপের নেপথ্যে রয়েছে উষ্ণায়নের পরোক্ষ ইন্ধন। পৃথিবী যত বেশি উষ্ণ হচ্ছে ততই সরে যাচ্ছে ‘ইন্টারট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জ়োন’ বা আন্তঃক্রান্তীয় অভিসারী অঞ্চলের সীমানা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগরে উষ্ণ জলের সম্প্রসারণের ফলে পশ্চিম দিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে আইসিটিজ়েড। ফলে গ্রীষ্মকালে পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ‘সুফল’ পাচ্ছে থরও। বৃষ্টির জলের ছোঁয়ায় সবুজের ঢল নেমেছে থরের মাটিতে। পৃথিবী যত বেশি উষ্ণ হবে, দিনের পর দিন থরের তত সবুজায়ন হবে। থরের জন্য তা শাপে বর হলেও ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির জন্য শঙ্কার বার্তাই বহন করছে। বৃষ্টি কমলে ফসলের ওপর তার প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। কমবে খাদ্য শস্যের ফলন, দেখা দিতে পারে খাদ্য সঙ্কটও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy