Shubha Shankarnarayan, an advocate from Bangalore hatched a plan to kill her fiance with the help of lovers and two others dgtl
Crime
Crime: পাকাদেখার পর প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষে হবু স্বামীকে খুন! ভয়ঙ্কর এই ঘটনা নিয়ে হয় সিনেমাও
হবু স্বামীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল বেঙ্গালুরুর আইনজীবী শুভা শঙ্করনারায়ণের। কে জানত, শুভার কাহিনি দেখা যাবে সিনেমার পর্দায়!
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২২ ১৫:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
২০১৪ সালের অগস্টে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জামিন পেয়েছিল বেঙ্গালুরুর আইনজীবী শুভা শঙ্করনারায়ণ। তত দিনে খুনের দায়ে চার বছরেরও বেশি জেলে কাটানো হয়ে গিয়েছে তার। কে জানত, পরের বছরই ৩১ বছরের শুভার কাহিনি দেখা যাবে সিনেমার পর্দায়!
০২১৯
আইনের পাঠ পড়লেও আইন ভেঙেছিলেন শুভা। পাকাদেখার চার দিন পর হবু স্বামীকে খুনের দায়ে ২০১০ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল তার। শুভার অপরাধে শামিল ছিল তার প্রেমিক-সহ আরও তিন জন। আদালতের রায়ে সকলকেই জেলে যেতে হয়েছিল।
০৩১৯
২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট শুভার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করায় তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও সে সময় শীর্ষ আদালতে তার আইনজীবীর যুক্তি ছিল, এ মামলায় অন্যরা জামিনে ছাড়া পেলেও শুভার বন্দিত্ব ঘোচেনি। অথচ সে ৫২ মাস জেলে কাটিয়ে ফেলেছে। ওই যুক্তিতে সাড়া দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
০৪১৯
শীর্ষ আদালতে আগেও জামিনের আবেদন করেছিল শুভা। সেটি ছিল ২০১১ সালের নভেম্বর। তবে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ সে সময় শুভার জামিন নামঞ্জুর করে দেয়।
০৫১৯
শুভার কীর্তিতে সাড়া পড়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরুতে। খুনের মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, হবু স্বামীকে খুনের জন্য প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষেছিল শুভা।
০৬১৯
২০১০ সালে শুভা, তার প্রেমিক অরুণ বর্মার পাশাপাশি বেঙ্কটেশ এবং দিনাকর নামে দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল বেঙ্গালুরুর একটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। শুভার হবু স্বামী বিভি গিরিশকে খুনের দায় চেপেছিল ওই চার জনের মাথায়।
০৭১৯
বেঙ্গালুরুর বনশঙ্করী-২ স্টেজ এলাকায় প্রায় ১৫ বছর ধরে শুভাদের প্রতিবেশী ছিলেন গিরিশরা। ২০০৩ সালের ৩০ নভেম্বর গিরিশের সঙ্গে শুভার পাকাদেখা হয়েছিল। সে সময় ২৭ বছরের গিরিশ ইন্টেল সংস্থায় সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত। শুভা স্থানীয় বিএমএস ল’ কলেজে তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া।
০৮১৯
বাগ্দানের চার দিন পরেই খুন হয়েছিলেন গিরিশ। সে দিনটি ছিল ৩ ডিসেম্বর। সে দিন শুভার আবদার মেনে তাকে নিয়ে ডিনার সারতে বেরিয়েছিলেন গিরিশ। মোটরবাইকে চড়ে দু’জনে যাওয়ার সময় রিং রোডের কাছে বাইক থামাতে বলে শুভা।
০৯১৯
গিরিশের কাছে শুভার আরও আবদার ছিল, রিং রোডের জাম্বো পয়েন্টে হ্যাল বিমানবন্দরে গিয়ে বিমান ওঠানামা দেখবে সে। হবু স্ত্রীর কথায় সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন গিরিশ।
গিরিশের মাথায় সজোরে আঘাত করে রাস্তায় দাঁড়ানো মোটরবাইকে চড়ে চম্পট দেন এক হেলমেটধারী। ঘটনার পর আহত গিরিশকে হাসপাতালে নিয়ে যায় শুভা।
১২১৯
মাথার আঘাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল গিরিশের। পুলিশের কাছে অভিযোগে শুভার দাবি ছিল, এক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তার হবু স্বামীকে মেরে পালিয়ে গিয়েছে।
১৩১৯
শুভার বয়ানে সন্দেহ হয় পুলিশের। ঘটনার আগে এবং পরের দিনগুলিতে কাদের সঙ্গে তার কথাবার্তা হয়েছে তা জানতে শুভার মোবাইল ঘেঁটে দেখেন তদন্তকারীরা। তাতে বেরিয়ে আসে অরুণ বর্মার নাম।
১৪১৯
ঘটনার আগের রাতে অরুণের সঙ্গেই দীর্ঘ সময় ধরে কথাবার্তা বলেছিল শুভা। তার থেকে বয়সে ছোট অরুণ ছিল শুভার কলেজের আইনপড়ুয়া।
১৫১৯
তদন্তকারীদের দাবি, অরুণের সঙ্গে শুভার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। শুভার অমতে গিরিশের সঙ্গে বিয়ে স্থির হওয়ায় তাঁকে খুনের ছক কষেছিল সে। সঙ্গী ছিল তার প্রেমিক ১৯ বছরের অরুণ।
১৬১৯
তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের পর অরুণকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে সে স্বীকার করে, গিরিশকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছে তারা। অরুণের বয়ানের ভিত্তিতে শুভা, বেঙ্কটেশ নামে এক ভাড়াটে খুনি এবং অরুণের আত্মীয় দিনাকরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই খুনে দিনাকর শুভাদের সাহায্য করেছিল বলে দাবি।
১৭১৯
২০১০ সালের জুলাইয়ে চার জনকেই খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছিল কর্নাটকের এক দায়রা আদালত। কর্নাটক হাই কোর্ট তাদের যাবজ্জীবনের সাজা বহাল রেখেছিল।
১৮১৯
এই মামলায় হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, তদন্তকারীরা খুনের কোনও প্রমাণ দেখাতে না পারলেও অভিযুক্তদের মোবাইল কললিস্টের রেকর্ডে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে প্রত্যেকেই একে অপরের বেশ ঘনিষ্ঠ। শুভাই ষড়ষন্ত্র করে গিরিশকে খুন করিয়েছে। তার সঙ্গে পরিকল্পনায় শামিল ছিল বাকি তিন জন। খুনের আগে এবং পরে শুভার গতিবিধিও তার অপরাধের সাক্ষ্য বহন করে। সেগুলিই তাকে নির্দোষ প্রমাণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯১৯
শুভার কাহিনি প্রকাশ্যে আসার বেশ কয়েক বছর পর তা দেখা গিয়েছিল সিনেমার পর্দায়। ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রিং রোড শুভা’ নামে ওই কন্নড় সিনেমার পরিচালক ছিলেন প্রিয়া বেলিয়াপ্পা। যদিও প্রিয়ার দাবি, শুভার ঘটনার সঙ্গে এই সিনেমার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ‘রিং রোড শুভা’ দেখার পর উল্টোটাই মনে হয়েছিল দর্শকদের!