Picture of Farmer’s celebration in Singhu, Tikri, Ghazipur dgtl
Farmer's Protest
Farmer's Celebration: আনন্দের কান্না, হাতে হাতে জিলিপি, মোদীর ঘোষণার পর সিঙ্ঘু যেন বিজয়চক
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১০
অ্যালুমিনিয়ামের থালায় থরে থরে সাজানো ‘জলেবি’। সেই থালা হাতে হাতে ঘুরছে। যে যত খুশি তুলে নিচ্ছেন। মুখে পুরছেন। প্যাঁচের পরত ভেঙে খাইয়ে দিচ্ছেন ‘কমরেড’কে।
০২১০
পিছনে বাঁশের গায়ে কাপড় জড়ানো বিক্ষোভ মঞ্চ। এক দিক খোলা। গত দেড় বছর ধরে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে এখানে নিয়ম করে বসেছেন, দুপুরে বাড়ি থেকে বেঁধে আনা ডাল-রুটি- ছাতু খেয়ে কেউ বা না খেয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে জিইয়ে রেখেছেন আন্দোলন।
০৩১০
গাজিপুর, টিকরি, সিঙ্ঘু সীমান্তে শুক্রবার তাঁরা জিলিপি খেতে খেতেই সমস্বরে গাইছেন, ‘‘এক সাল সে ঝেল রহে হ্যায়/ অ্যায়সে হালত নেহি হোতে/... অন্নদাতা কি তাকত কো যো/পহেলে জান গয়ে হোতে।’’
০৪১০
শুক্রবার। ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর সকাল। কিছুক্ষণ আগেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন, তিনি দুঃখিত। তাঁরই ভুল যে তিনি কৃষকদের বোঝাতে পারেননি। তিনটি কৃষি আইন তিনি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কৃষকরা যেন এ বার ঘরে ফেরেন। মাঠে ফেরেন।
০৫১০
দেড় বছর ধরে এই কয়েকটি শব্দ শোনার জন্যই কান পেতে অপেক্ষা করেছেন কৃষকরা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর তাই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে সিংঘু সীমান্তে, টিকরি, গাজিপুরে। দলে দলে কৃষক এসে হাজির হয়েছেন। শুরু হয়েছে ঢালাও মিষ্টি বিতরণ।
০৬১০
সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে একের পর এক উদ্যাপনের দৃশ্য। গান বেঁধেছেন কৃষকেরা। বয়স ভুলে নেচেছেন। আনন্দাশ্রুতে ভেসেছেন। একে অপরকে বুকে টেনে নিয়েছেন, তারপর গাল ধরে মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছেন আদর করে।
০৭১০
সাফল্য অবশ্য অনেক কঠিন পথ ধরে এসেছে। আন্দোলন চলাকালীন বহু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যা কত, তার হিসেব এক একজনের কাছে এক একরকম। সেই সব দিনে, কখনও আবার আশাহত হয়ে হয়ত মাঝে মধ্যে ঝিমিয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তবে হাল ছাড়েননি। ছাড়েননি বলেই আজ সিঙ্ঘু সীমান্ত উৎসব-উল্লাসের বিজয় চক।
০৮১০
তবু এত আনন্দেও ঢাকা পড়ছে না চিন্তা। সামনে কঠিন পথ। প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা মুখে বলেছেন। তা বাস্তবে পরিণত হতে এখনও ঢের দেরি। টিকায়েত জানিয়েছেন, সামনে এখনও লড়াই বাকি। বলেছেন, ‘‘সবে তো শুরু! যতদিন না কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সংসদে পাশ হচ্ছে ততদিন অবস্থান জারি থাকবে। খুঁটি তখনই উঠবে যখন কাজ পাকা হবে।’’
০৯১০
তা ছাড়াও আছে, সংযুক্ত মোর্চা বলেছে, ‘‘আমরা কৃষকদের মেহনতের পুরো দাম চেয়েছিলাম। যাকে বলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য। প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে কিছু বলেননি। আরও অনেক দাবি ছিল। সেগুলিরও উল্লেখ করেননি। আমাদের অনেকে শহিদ হয়েছেন। শহিদ কৃষকদের পরিবারের জন্য কিছু ঘোষণা করলে ভাল হত।’’
১০১০
তবে কৃষি আইন প্রত্যাহারকে স্বাগতই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। একইসঙ্গে বলেছেন, তাঁদের আন্দোলন এখনও জারি থাকবে। আন্দোলন কী ভাবে করা হবে তা সংযুক্ত কৃষক মোর্চার সব শরিক দল মিলে ঠিক করবে এবং তা বাকিরা মেনে চলবে।