নলিনী বলেছেন, ‘‘আমি জানি, আমি দোষী সাব্যস্ত হয়েছি। কিন্তু আমার বিবেক জানে আমি নির্দোষ। আমার স্বামীর কিছু বন্ধুর জন্য আমি ফেঁসে গিয়েছি। ওঁদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। দোকান, বাজার, মন্দির, সিনেমা হল কিংবা হোটেলে ওঁদের সঙ্গে আমিও যেতাম। কিন্তু সে ভাবে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলতাম না। ওঁদের সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত যোগাযোগও ছিল না।’’
রাজীব গান্ধীকে হত্যা করেছিলেন ধানু নামের এক মহিলা। লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলম (এলটিটিই)-র সদস্য ছিলেন তিনি। নির্বাচনী জনসভায় পুষ্পস্তবকের মধ্যে বোমা বেঁধে নিয়ে সটান প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাজির হন তিনি। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে তীব্র বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। মৃত্যু হয় রাজীবেরও। শ্রীলঙ্কা থেকে নৌপথে দু’মাস আগে এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের নির্দেশে ভারতের মাদ্রাজ (এখনকার চেন্নাই) শহরে আসেন রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার জন্য।
কেন রাজীবকে মারার ছক কষে এলটিটিই? শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার লক্ষ্যে ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীকে শ্রীলঙ্কায় মোতায়েন করা হয়। ১৯৮৭ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার তামিল জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহী দলগুলি, বিশেষত এলটিটিইকে, নিরস্ত্র করার প্রচেষ্টা চালায় ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল যে, ভারতীয় শান্তিরক্ষীরা শ্রীলঙ্কায় বড় ধরনের কোনও সামরিক অভিযান চালাবে না। কিন্তু এলটিটিই যোদ্ধাদের সঙ্গে অনেকগুলো খণ্ডযুদ্ধে লিপ্ত হয়। শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল রাজীবের।
১৯৯০ সালে ‘সানডে’ পত্রিকার ২১ অগস্ট সংখ্যায় রাজীব গান্ধী একটা সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি বলেন, পরবর্তী নির্বাচনের পর যদি তিনি প্রধানমন্ত্রী হন, তা হলে শ্রীলঙ্কায় আবার ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হবে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পরই এলটিটিই মরিয়া হয়ে ওঠে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার জন্য।
চলতি বছরের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব খুনের মামলায় আর এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালনকে মুক্তি দিয়েছিল। তার পর নলিনী এবং রবিচন্দ্রন ওই একই যুক্তি দেখিয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টে মুক্তির আবেদন জানান। গত জুন মাসে মাদ্রাজ হাই কোর্ট এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে ‘পরামর্শ’ দেয় নলিনীদের। তার পরেই শনিবার তিন দশক জেলবন্দি নলিনীদের মুক্তি দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy