Mumbai man sells books for 10 rupees, refused any financial help during lockdown dgtl
Inspirational Story
‘সব পেয়েছি’র দেশের রাজা! তাঁর রাজত্বে যে কোনও বই পড়া যায় ১০ টাকা দিলেই! তবে রয়েছে বিশেষ শর্ত
বাঁ হাতটি হারিয়েছেন তিনি। তবে একটি হাত নেই বলে কোনও ক্ষোভ, আফসোস নেই। দিব্য রয়েছেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
অর্থ, সাফল্যের পিছনে দৌড় যেন চিরকালীন। এই ‘প্রতিযোগিতা’ দিনের পর দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে আরও। কিন্তু প্রতিযোগিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন রাকেশ। তবে তিনিও ‘ছুটছেন’। তবে ছুটছেন অন্য পথে। ফুটপাথে বসে বই পড়েন তিনি, বই ভাড়াও দেন। তিনিই তাঁর জীবনের রাজা।
০২১৩
যে মুম্বইয়ে হাজারো স্বপ্ন নিয়ে লোকে আসেন, সেই মুম্বইয়েই থাকেন রাকেশ। বাঁ হাতটি হারিয়েছেন তিনি। তবে একটি হাত নেই বলে কোনও ক্ষোভ, আফসোস নেই। দিব্য রয়েছেন তিনি।
০৩১৩
মুম্বইয়ের অন্ধেরির ফুটপাথে বসে থাকতে দেখা যায় রাকেশকে। বুকখোলা শার্ট, ভিতরে স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বই। বিভিন্ন ভাষার, বিভিন্ন ঘরানার। ওই ফুটপাথে বসেই বই পড়েন তিনি।
০৪১৩
জীবনে কোনও রকম বিলাসিতা চান না রাকেশ। বই পড়তে ভালবাসেন। তাই সারা দিন বই পড়েই সময় কাটান। ফুটপাথে বসে বই ভাড়া দিয়ে রোজগারও করেন তিনি।
০৫১৩
২০২০ সালে অবনীশ শরন নামের এক আইএএস আধিকারিক তাঁর এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) রাকেশের একটি ছবি পোস্ট করে তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন। তার পর থেকেই ঝড় ওঠে সমাজমাধ্যমে। অনেকেই আর্থিক সাহায্য করতে চেয়েছিলেন রাকেশকে। কিন্তু কোনও রকম সাহায্যই নেননি তিনি।
০৬১৩
কোভিড অতিমারির সময় যখন চারদিক আতঙ্কগ্রস্ত, তখনও সাহায্য নেননি রাকেশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘মানুষ ভাল ভাবে বাঁচার জন্যই তো অর্থ উপার্জন করেন। আমি যা করতে ভালবাসি, যা আমায় বাঁচিয়ে রাখে তা সর্ব ক্ষণ আমাকে ঘিরে রয়েছে। এতেই আমার আনন্দ।’’
০৭১৩
সাক্ষাৎকারে রাকেশ বলেছিলেন, ‘‘খাবারের কোনও অভাব নেই। আমার কাছে আমার বই রয়েছে। মাথার উপরে ছাদও রয়েছে। আমার আবার আলাদা করে টাকাপয়সার কী দরকার? যা রয়েছে, প্রচুর রয়েছে।’’
০৮১৩
তাঁকে সাহায্য না করে বরং যাঁরা সেই পরিমাণ অর্থ পেলে ভাল ভাবে দিনযাপন করতে পারবেন তাঁদের আর্থিক সহায়তা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাকেশ।
০৯১৩
সাক্ষাৎকারে রাকেশের বক্তব্য, ‘‘যাঁদের কোনও রকম আশ্রয় নেই, যাঁদের দিনের শেষে খাবার জো়টে না, রাস্তায় রাস্তায় দিশাহীন হয়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের সাহায্য করুন। আমার চেয়ে তাঁরা সাহায্য পেলে বরং উপকৃত হবেন।’’
১০১৩
বই ভাড়া দিয়ে রোজগার করেন রাকেশ। নানা রকমের, নানা ভাষার বই সংগ্রহে রয়েছে তাঁর। অন্ধেরির ফুটপাথে সেই বইগুলি সাজিয়ে বসেন রাকেশ। কম দামে ওই পুরনো বইগুলি ভাড়া দেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বইও পড়েন রাকেশ।
১১১৩
সংগ্রহে রাখা প্রতিটি পুরনো বই মাত্র ১০ টাকা মূল্যে ভাড়া দেন রাকেশ। কিন্তু গ্রাহকদের জন্য রয়েছে বিশেষ শর্ত।
১২১৩
১০ টাকার বিনিময়ে পুরনো বই দেওয়ার সময় ক্রেতাদের কাছে শর্ত রাখেন রাকেশ। বই পড়ার পর আবার তা ফেরত দিতে হবে ঠিক যেমন অবস্থায় নেওয়া হয়েছিল সেই অবস্থাতেই।
১৩১৩
রাকেশের দাবি, মানুষ তাঁদের শখ পূরণ করার জন্য টাকা খরচ করেন। কিন্তু তাঁর জীবনের সমস্ত শখ-আহ্লাদ বইয়ের পাতার ভিতরেই লুকিয়ে রয়েছে। রাকেশের মতে কোনও টাকা খরচ না করে বিনামূল্যেই জীবনের শখ পূরণ করতে পারেন তিনি।