যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরদের এ হেন পদক্ষেপের নেপথ্যে অনুঘটকের কাজ করেছিল কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কট। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ঠান্ডা লড়াইকে কেন্দ্র করে আমেরিকা ও সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে তখন চলছিল তুমুল রেষারেষি। এই পরিস্থিতিতে হাভানায় ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট সরকারের প্রতিষ্ঠা ওয়াশিংটনের গলার কাঁটা হয়ে ওঠে।
কিউবায় ফিদেল সরকার প্রতিষ্ঠার পর সেখানে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে মস্কো। সালটা ছিল ১৯৬২। ফলে সোভিয়েত আক্রমণের আতঙ্ক গোটা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। সিআইএর কর্তারা ভেবেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে ‘অ্যাডাম অ্যান্ড ইভ স্টোরি’ আমজনতার হাতে গেলে আরও বেশি ভয় পাবেন তাঁরা। সেখান থেকে জন্ম নেবে সামাজিক অস্থিরতা।
কিউবার সঙ্কট কাটার ৫৭ বছর পর ‘তথ্যের স্বাধীনতা’ আইনের উপর ভিত্তি করে ২০১৩ সালে থমাসের লেখা বই প্রকাশের অনুমতি দেয় ওয়াশিংটন। সেটি হাতে পেতেই পাঠকদের চোখ কপালে ওঠে। বইটিতে দুনিয়ার সেরা পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে বর্ণিত মানুষের গণবিলুপ্তিকে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের মাধ্যমে সত্যি বলে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন চ্যান।
উদাহরণ হিসাবে খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘বাইবেল’ বর্ণিত নোয়ার নৌকার গল্পের কথা বলেছেন চ্যান। এর সঙ্গে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ‘বিষ্ণু পুরাণ’-এর সাদৃশ্য রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বিষ্ণুর প্রথম অবতার হল মৎস্য। সেই রূপে আবির্ভূত হয়ে মানবসমাজকে মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা করেন তিনি। নোয়ার গল্পতেও একই রকমের প্লাবনের উল্লেখ রয়েছে।
শুধু তাই নয়, বাইবেল এবং পুরাণ— দুই পৌরাণিক কাহিনিতেই মানবজাতিকে প্লাবনের হাত থেকে রক্ষার জন্য সুবিশাল নৌকার কথা লেখা রয়েছে। পাশাপাশি সামুদ্রিক সুনামির উল্লেখ রয়েছে অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতার পৌরাণিক উপাখ্যানেও। এর মধ্যে ব্যাবিলনের ‘গিলগামেশ’, মিশরের ‘জিউসুদ্রা’, চিনের ‘গিনিউ’ এবং গ্রিসের ‘ডিউক্যালিয়ন’র নাম সর্বজনবিদিত।
প্লাবনের জেরে সভ্যতা ধ্বংসের পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের নেপথ্যে আজীবন ছুটে বেড়িয়েছেন থমাস। নিজের বইয়ে তেমনই দু’টি হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার উল্লেখ করেছেন তিনি। এর প্রথমটির নাম ‘আটলান্টিস’। তাঁর দাবি, আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তরে ছিল এর অবস্থান। বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর লেখা ‘টাইমেউস’ এবং ‘ক্রিটিয়াস’ বইতেও আটালান্টিস সভ্যতার উল্লেখ রয়েছে।
পুরাতত্ত্ববিদেরা অবশ্য ওই কাঠামোকে প্লেটো বর্ণিত হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিস শহরের ধ্বংসাবশেষ বলে মেনে নেননি। উল্টে সেটি প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠেছে বলে দাবি করেন তাঁরা। থমাসও হাল ছাড়ার পাত্র নন। কিছু দিনের মধ্যে জাপানের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে নিমজ্জিত পিরামিড আকারের বিশাল মন্দির শহরের খোঁজ মিলতেই তাঁর তত্ত্বে ফের সিলমোহর পড়ে।
চ্যানের পরিশ্রম পুরোপুরি বৃথা যায়নি। খুঁজতে খুঁজতে নাকি আস্ত একটা পৌরাণিক শহরের হদিস পান তিনি। থমাসের দাবি, সংশ্লিষ্ট শহরটি পূর্ব-পশ্চিমে ফিলিপিন্স থেকে ইস্টার্ন আইল্যান্ড এবং উত্তর-দক্ষিণে হাওয়াই থেকে কুক দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর মধ্যে ইস্টার্ন আইল্যান্ডে সমুদ্রের তীরে মাটিতে পোঁতা অবস্থায় পড়ে থাকা অদ্ভুত কিছু মূর্তির খোঁজ পান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy