ভারতীয় নৌবাহিনীতে জুড়ল নতুন সাবমেরিন আইএনএস বাগির। সোমবার মুম্বইয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাগিরকে অন্তর্ভুক্ত করা হল ভারতীয় নৌবাহিনীতে।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
ভারতীয় নৌবাহিনীতে জুড়ল এক নতুন ডুবোজাহাজ। নাম আইএনএস বাগির। জলসীমান্তের নজরদারি চালানোর পাশাপাশি ভারত মহাসাগরে গোয়েন্দাগিরিও করবে বাগির।
০২১৭
বাগিরের কাঁধে নৌসেনা এই দায়িত্ব দিয়েছে তার বিশেষ গুণের কারণে। আধুনিক প্রযুক্তির জোরে নিজেকে কৌশলে লুকিয়ে রাখার ক্ষমতা আছে বাগিরের। শত্রুপক্ষকে নিজের অবস্থান না বুঝতে দিয়ে অনেক আগেই তাদের অবস্থান বুঝে নিতে পারে সে।
০৩১৭
বাগিরের এই বৈশিষ্ট্যের কথা ঘোষণা করেছে নৌসেনাই। তারা জানিয়েছে, বাগিরের এই গুণই নৌসেনার গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা বাড়াবে। শত্রুপক্ষের উপর নজরদারি চালানো, তাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে রণকৌশল সাজাতেও সুবিধা হবে বাগিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। কিন্তু কী ভাবে?
০৪১৭
নৌবাহিনীর এই নতুন ডুবোজাহাজের নামকরণ হয়েছে সামুদ্রিক হাঙরের নামে। যার ইংরেজি নাম স্যান্ড সার্ক। বাগিরের কাজের বিশেষত্ব লুকিয়ে রয়েছে এই নামকরণেই।
০৫১৭
ভারত মহাসাগরের বাসিন্দা এই হাঙর তার শিকারের অবস্থান বুঝে নেয় অনেক দূর থেকে তাদের দেহের কম্পনের মাত্রা থেকে। একই ক্ষমতা রয়েছে নৌবাহিনীর নতুন ডুবোজাহাজ আইএনএস বাগিরেরও।
০৬১৭
বাগিরের শরীরে রয়েছে অসংখ্য সেন্সর। নৌবাহিনীর কথায় বিশ্বের সেরা সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে এই সাবমেরিনে। এই সেন্সরের সাহায্যেই শত্রুপক্ষের অবস্থান অনেক দূর থেকে বুঝতে পারবে সে এবং আড়াল করতে পারবে নিজেকে।
০৭১৭
বস্তুত এই সেন্সরই বাগিরকে সাহায্য করবে শত্রুপক্ষের বিষয়ে জরুরি তথ্য সংগ্রহ করতে।
০৮১৭
ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, বাগির যেমন নিঃশব্দে বিচরণ করতে পারে, তেমনই প্রয়োজনে শত্রুপক্ষকে আঘাত করতেও পারে। বাগিরের অস্ত্রের তূণে থাকছে শত্রুশিবিরের লক্ষ্যে যথাযথ আঘাত করার টর্পোডো, জলের সামান্য তলা থেকে ভূপৃষ্ঠে আঘাত করার মতো ক্ষেপণাস্ত্রও।
০৯১৭
এই দুই অস্ত্রে শত্রুপক্ষের বড় বহরকেও বেশ কিছু ক্ষণের জন্য ঘায়েল করতে পারবে বাগির। অর্থাৎ গোয়েন্দাগিরির পাশাপাশি মারধর করতেও সিদ্ধহস্ত বাগির।
১০১৭
আবার বিপক্ষের হামলাকে ঠেকিয়ে রাখতেও পারবে এই সাবমেরিন। কারণ বাগিরে রয়েছে স্টেট অব দ্য আর্ট টর্পোডো ডেকয় সিস্টেম। বিপক্ষের টর্পেডোকে বিভ্রান্ত করে ভুল পথে চালনা করতে পারবে বাগির।
১১১৭
যে কোনও গোপন অভিযানেও সাহায্য করার ক্ষমতা রয়েছে বাগিরের। অবস্থান গোপন রেখে নৌ কম্যান্ডোদের যথাস্থানে পৌঁছে দিতে পারবে সে।
১২১৭
এ ছাড়া এর শক্তিশালী ডিজেল ইঞ্জিন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যাটারি রিচার্জ করার ক্ষমতাও রাখে।
১৩১৭
গত কয়েক মাস ধরেই ভারতীয় মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনী তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। তবে কি চিনকে ঠেকাতেই ভারতীয় নৌবাহিনীর এই নতুন সদস্যের নিয়োগ?
১৪১৭
নৌবাহিনী অবশ্য জানাচ্ছে, এই ডুবোজাহাজের ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্য হওয়ার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল বছর তিনেক আগেই। ২০২২ সালে এটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালানোও হয়। তখনই ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
১৫১৭
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আইএনএস বাগির নামের আরও একটি সাবমেরিন নৌবাহিনীতে ছিল। তবে সেই ডুবোজাহাজটি ছিল রাশিয়া এবং স্পেনের যৌথ প্রযুক্তিতে বানানো।
১৬১৭
নতুন আইএনএস বাগির বানিয়েছে মুম্বইয়ের মাজাগন ডক শিপবিল্ডার লিমিডেট। ফ্রান্স থেকে আনা প্রযুক্তির সাহায্যেই বানানো হয়েছে নতুন ডুবোজাহাজ।
১৭১৭
ভারতীয় নৌবাহিনীতে কালভারি শ্রেণির পঞ্চম সাবমেরিন এটি। নৌবাহিনীর তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনীর গোয়েন্দা হিসাবে কাজ করবে বাগির।