How Virat Kohli made his spectacular innings against Pakistan dgtl
Virat Kohli against Pakistan
পাকিস্তানের মুখের গ্রাস কাড়লেন শুধু ব্যাটের জোরে নয়, বিরাট কোহলির অঙ্কের মাথাও বেশ ভাল
পরতে পরতে চমক। ঠান্ডা মাথায় অঙ্ক কষে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি। আফ্রিদি-রউফ-নাসিমদের দুরন্ত বোলিং সামলে যে ভাবে ব্যাট করলেন বিরাট, তাতে এই ইনিংসকেই সেরা বলছেন অনেকে।
সংবাদ সংস্থা
মেলবোর্নশেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ২০:২৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
সদ্য দ্বিতীয় ওভার। নাসিম শাহের ৮৮ মাইল গতির বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেট ছিটকে গেল কে এল রাহুলের। ব্যাট হাতে মেলবোর্নের ময়দানে নামলেন বিরাট কোহলি। সেই শুরু। যার শেষটা হল দু’হাত আকাশে তুলে জয়ধ্বনির মধ্যে দিয়ে অপরাজিত কোহলির প্যাভিলিয়নমুখী ছবিতে।
০২১৭
শুধু কি ক্রিকেটীয় দক্ষতা? না, আরও কিছুর মিশেলে কোহলির ইনিংস হয়ে উঠল বিশ্ব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা নিদর্শন। বিশেষজ্ঞদের মতামতের তোয়াক্কা করেননি কোহলি। নিজেই বলে দিলেন, উত্তেজনা যতই থাক, অঙ্ক ছিল মাথায়।
০৩১৭
কী সেই অঙ্ক? কোহলি বলছেন, সহজ অঙ্ক। নওয়াজকে একটি ওভার দিতেই হত বাবরকে। তাই যদি হ্যারিসের ওভারে বেশ কিছু রান কুড়িয়ে নেওয়া যায়, পাকিস্তান চাপে পড়তে বাধ্য।
০৪১৭
কিন্তু কী ভাবে শুরু হয়েছিল কোহলির ইনিংসের যাত্রা? প্রথম বল। নাসিমের ১৪০ কিলোমিটার গতিকে স্টিয়ার করে পয়েন্টের দিকে ঠেললেন কোহলি। ওভার শেষ হল। কোহলি তখনও শূন্য রানে। অপর দিকে অধিনায়ক রোহিত।
০৫১৭
খেলার মোড় ঘোরানো শুরু ম্যাচের ১১ তম ওভারে। মহম্মদ নওয়াজের ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মারেন হার্দিক। পরের বলে খুচরো রান নিয়ে অন্য প্রান্তে হার্দিক। এ বার নওয়াজকে খেলবেন কোহলি। একটি বল দেখে নিয়েই চতুর্থ বলে নওয়াজকে উড়িয়ে দেন বিরাট। সেই ওভারে ওঠে মোট ২০ রান।
০৬১৭
বোলার বদল করেন বাবর। এ বার আফ্রিদির সামনে বিরাট। চতুর্থ বলে ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে চার মারেন বিরাট। ১২তম ওভারে ওঠে ৯ রান।
০৭১৭
১৩তম ওভারে বল করতে আসেন শাদাব খান। প্রথম বলেই কভার অঞ্চল দিয়ে চার মারলেন কোহলি। ওভারের বাকি বলগুলো ভাল করেন শাদাব। ওভারে ওঠে ৭ রান।
০৮১৭
এ বার বল হাতে ফেরেন নাসিম। ওভারের চতুর্থ বলে এগিয়ে এসে নাসিমকে ফ্লিক করে চার মারলেন বিরাট। সেই ওভারে ওঠে ১০ রান।
০৯১৭
এ বার শুরু অঙ্কের পালা। অস্ট্রেলিয়ায় মাঠ বড়। তাই এশিয়ার মতো ছক্কা মারা সেখানে যথেষ্টই কঠিন। পাশাপাশি পাকিস্তানের জোরে বোলারদের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে দুর্বল স্পিনাররা। তাই কোহলির অঙ্কে ছিল স্পিনারের এক ওভার। কিন্তু তার আগে প্রয়োজন জোরে বোলারের বিরুদ্ধে একটি ভাল ওভার খেলা।
১০১৭
১৮ তম ওভার শুরু করেন পাকিস্তানের জোরে বোলিংয়ের মেরুদণ্ড বলে পরিচিত শাহিন শাহ আফ্রিদি। এ হেন আফ্রিদির প্রথম বলেই অনবদ্য বিরাট। ডিপ মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে বল মাটি কামড়ে বাউন্ডারির বাইরে। সেই ওভারে আরও দু’টি চার মারেন কোহলি। শেষ ১২ বলে ভারতের তখনও দরকার ৩১ রান।
১১১৭
হাতে আর দু’ওভার। তার মধ্যে একটি ওভার করবেন স্পিনার নওয়াজ। অন্যটি হ্যারিস রউফ। ১৯তম ওভারে বল হাতে তুলে নেন রউফ। অর্থাৎ শেষ ওভারে নওয়াজকে পাবেন কোহলি।
১২১৭
রউফের ওভারের পঞ্চম বলে স্বমহিমায় বিরাট। রউফের বিদ্যুৎগতির বল ঠিক তাঁরই মাথার উপর দিয়ে তুলে পাঠিয়ে দিলেন এমসিজির গ্যালারিতে। ষষ্ঠ বলে আবার ছয়! কব্জির মোচড়ে এ বার বল উড়ে গেল ফাইন লেগের উপর দিয়ে গ্যালারিতে। শেষ ৬ বলে ভারতের দরকার ১৬ রান।
১৩১৭
শেষ ওভারে বল হাতে নওয়াজ। কিন্তু প্রথম বলেই নওয়াজকে গ্যালারিতে ফেলতে গিয়ে সোজা ক্যাচ তুলে দিলেন হার্দিক। অধিনায়ক বাবর ভুল করেননি। শেষ ৫ বলে ভারতের জিততে দরকার ১৬ রান। ব্যাট হাতে দীনেশ কার্তিক। অন্য প্রান্তে কোহলি।
১৪১৭
এক রান নিয়ে বিরাটকে স্ট্রাইক দিলেন কার্তিক। নওয়াজের ইয়র্কার লেংথের বলকে লং অনে পাঠিয়ে দু’রান নিলেন কোহলি। কিন্তু দরকার যে বড় শটের! চতুর্থ বলটি নওয়াজ রেখেছিলেন একটু উপরের দিকে, যদিও ফুলটস। ভুল করেননি বিরাট, ছক্কা! উচ্চতার জন্য বলটিকে নো বল ডাকেন আম্পায়ার। ফ্রি হিট পেল ভারত।
১৫১৭
নওয়াজের প্রথম তিন বলে ওঠে ১৩ রান। শেষ তিন বলে দরকার ৬ রান। ক্রমশ চাপে পাকিস্তান, ফুরফুরে ভারত। চাপের বহিঃপ্রকাশ চতুর্থ বলেই। ফ্রি হিটে কোহলি যেন ব্যাট ছোঁয়াতে না পারেন এই ছিল লক্ষ্য। কিন্তু ওয়াইড করলেন নওয়াজ। পরের বলে স্যুইপ করতে গিয়ে বোল্ড বিরাট, কিন্তু ফ্রি হিট থাকায় আউট হলেন না, উল্টে তিনটি রান পেলেন। ম্যাচ কার্যত বিরাটের পকেটে।
১৬১৭
শেষ ওভারের পঞ্চম বলে নওয়াজ আউট করলেন কার্তিককে। স্ট্যাম্পড! ব্যাট করতে নামলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ম্যাচের শেষ বলে জিততে ভারতের দরকার ২ রান। কিন্তু অতিরিক্ত চাপের জেরে নওয়াজ আবার ওয়াইড বল করলেন। এ বার এক বলে দরকার এক রান। না, এ বার আর ওয়াইড নয়, অশ্বিনের আলতো স্কুপে ম্যাচ জিতল ভারত। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড় ৯০ হাজারি এমসিজির গ্যালারি। দু’হাত আকাশে তুলে জয়ের দৌড় বিরাটের। চোখে আনন্দের অশ্রু।
১৭১৭
প্রথম ২০ বলে ১১ করেছিলেন বিরাট। তার পরের ৩৩ বলে ৭১। সব মিলিয়ে ৫৩ বলে ৮২ রানের এই ইনিংস প্রমাণ করল, ব্যাট হাতে রাজত্ব করতে গেলে হিসাবের মাথাটাও খুব পরিষ্কার থাকতে হয়।