How the Bilkis Bano case went through any ups and downs from CBI probe to Supreme Court dgtl
Bilkis Bano Case
কোন যুক্তিতে বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার? কী কী ঘটেছিল সেই সময়?
২০০৪ সালে বিলকিস বানো সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ করেন যে, নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন তিনি। গত দু’বছরে ২০টি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বিলকিস বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি সরকার। মেয়াদ শেষের আগেই ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
০২১৯
সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেওয়ায় বিলকিস মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকে আবার ফেরত যেতে হবে জেলে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত এ-ও জানিয়ে দিয়েছে, এই মামলার শুনানি চলবে।
০৩১৯
২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়।
০৪১৯
বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়।
০৫১৯
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিলকিসের বিষয়টি নিয়ে লড়াই শুরু করে। হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিলকিস গণধর্ষণের তদন্তে নামে সিবিআই।
০৬১৯
তদন্ত করে সিবিআই জানিয়েছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। অভিযুক্তদের বাঁচাতেই তৈরি হয়েছিল রিপোর্ট। ঘটনার ভয়াবহতায় চমকে উঠেছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরাও।
০৭১৯
তার পর মামলা ওঠে গুজরাতের আদালতে। ২০০৪ সালে বিলকিস সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ করেন যে, নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন। গত দু’বছরে ২০টি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে।
০৮১৯
২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুম্বইয়ের আদালতে সরানো হয় বিলকিসের মামলা। ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ছ’জন পুলিশ অফিসার এবং এক জন সরকারি চিকিৎসক।
০৯১৯
এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই আদালত।
১০১৯
প্রমাণের অভাবে বাকি সাত জন বেকসুর খালাস পান। পরে শুনানি চলাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। শুনানি চলাকালীন প্রত্যেক অভিযুক্তকেই শনাক্ত করেছিলেন বিলকিস। জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তেরা সকলেই তাঁর পরিচিত।
১১১৯
২০২২ সালের মে মাসে মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা। বিচারপতি অজয় রাস্তোগি ১১ জনের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
১২১৯
২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
১৩১৯
১১ জনের মুক্তির পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক ও খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাঁধে।
১৪১৯
বিতর্কের মধ্যেই গুজরাত সরকার জানায় যে, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক ও খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন। সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে।
১৫১৯
যদিও অন্য একটি পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল।
১৬১৯
এই সংক্রান্ত শুনানিতে বিলকিস মামলার ১১ জন অপরাধীকে কেন সময়ের আগেই মুক্তি দেওয়া হল, তা নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এবং গুজরাতের বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘‘অপরাধীদের মুক্তির আগে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত ছিল।’’
১৭১৯
এই নিয়ে কেন্দ্র এবং গুজরাত সরকারের কাছে দোষীদের মুক্তি সংক্রান্ত নথি চাওয়া হলে প্রাথমিক ভাবে তা দিতে অস্বীকার করে গুজরাত সরকার। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কথাও জানায়।
১৮১৯
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নিয়ে অনড় থাকার পরে এ দিন কেন্দ্র এবং গুজরাত সরকার আদালতে জানিয়েছে, ওই ১১ জনের মুক্তি সংক্রান্ত নথি জমা দিতে প্রস্তুত তারা।
১৯১৯
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ, জালিয়াতি করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এ দিন আদালত জানিয়েছে, ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই ছিল না গুজরাত সরকারের। যে হেতু মামলার শুনানি মহারাষ্ট্রে হয়েছে, তাই মহারাষ্ট্র সরকারই পারে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।