How fight between Virat Kohli and Gautam Gambhir intensifies over the IPL years dgtl
Virat Kohli and Gautam Gambhir Fight History
কোহলিকে ভালবেসে নিজের পুরস্কারও দিয়ে দেন! গম্ভীরের সেই বন্ধুত্ব কী ভাবে বদলাল তিক্ততায়
দিল্লির দুই ক্রিকেটারের বন্ধুত্ব একদিন চোখ ভরে দেখেছিলেন ক্রিকেট সমর্থকেরা। আজ সেই তাঁদের দ্বন্দ্বই সবচেয়ে চর্চিত এবং সমালোচিত। আইপিএলের মঞ্চে বার বার তাঁরা বিতর্কে জড়িয়েছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ১২:০৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
সালটা ২০০৯। ডিসেম্বরের কোনও এক দুপুরে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ভারতীয় দল। বিপক্ষে ছিল শ্রীলঙ্কা।
০২১৮
ম্যাচটি অনেক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকই মনে রেখে দিয়েছেন। শুধু ভারত সেই ম্যাচে জিতেছিল বলেই নয়, ম্যাচে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে অনবদ্য বোঝাপড়া এবং ক্রিকেটীয় পেশাদারিত্বের সাক্ষী থেকেছিল ইডেন।
০৩১৮
সেই দুই ক্রিকেটারের নাম বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীর। দু’জনেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইডেনের সেই ম্যাচে শতরান করেছিলেন। ২১ বছরের উঠতি তারকা বিরাটের ব্যাট থেকে সেটাই ছিল একদিনের ম্যাচের প্রথম শতরান।
০৪১৮
বিরাট সেদিন ১১৪ বলে ১০৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছিলেন। আর গম্ভীরের ব্যাট থেকে এসেছিল ১৫০ রান। তাঁদের ২২৪ রানের যুগলবন্দির উপর ভর করেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেসেখেলে জয় এসেছিল।
০৫১৮
সেই ম্যাচে বিরাট এবং গম্ভীরের বন্ধুত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হলেও পুরস্কারটি বিরাটের হাতে তুলে দিয়েছিলেন গম্ভীর। বিরাটের প্রথম শতরানটি স্মরণীয় করে রাখার জন্যই সিনিয়র হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দিল্লির দুই ক্রিকেটারের মধ্যে এই বন্ধুত্ব চোখ ভরে দেখেছিল ইডেন।
০৬১৮
পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ ২০১৩ সালের। ঘটনাস্থল এ বার এম চিন্নস্বামী স্টেডিয়াম, বেঙ্গালুরু। আইপিএলের একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয় রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি) এবং কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। সেই ম্যাচে জন্ম নেয় ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম তিক্ত দ্বন্দ্ব। চার বছর আগের বন্ধুত্ব বদলে যায় ‘শত্রুতা’য়।
০৭১৮
বেঙ্গালুরুর ওই ম্যাচে গম্ভীরের অধিনায়কত্বে খেলতে নেমেছিল কেকেআর। ম্যাচটি জিতেছিল বিরাটের আরসিবি। বিরাট সেই ম্যাচে ৩৫ রান করে আউট হন। লক্ষ্মীপতি বালাজির বলে বিরাটের উইকেট পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা যায় গম্ভীরকে।
০৮১৮
গম্ভীর এবং কোহলি, দু’জনেই আগ্রাসী খেলোয়াড়। কিন্তু সে দিন বাইশ গজের আগ্রাসন যেন মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কোহলি আউট হয়ে ফেরার সময় গম্ভীর সম্ভবত কোনও মন্তব্য করেছিলেন। দেখা যায়, কোহলি রাগে গজগজ করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছেন কেকেআরের খেলোয়াড়দের দিকে। চলছে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়।
০৯১৮
অন্য খেলোয়াড় এবং মাঠে উপস্থিত আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কোনও রকমে সামাল দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু বিরাট এবং গম্ভীরের সম্পর্কে যে তিক্ততার ছাপ সে দিন চোখে পড়েছিল, তা ভুলতে পারেননি সমর্থকেরা।
১০১৮
বিরাট বা গম্ভীর, মুখে দু’জনেই এই দ্বন্দ্বকে মাঠের মধ্যে ফেলে আসার কথা বলেছেন বার বার। ব্যক্তিগত সম্পর্কে এর কোনও প্রভাব পড়েনি বলেও জানান তাঁরা। কিন্তু আইপিএলের মঞ্চে ক্রমেই তিক্ত থেকে তিক্ততর হয়েছে দুই দিল্লি তারকার সম্পর্ক।
১১১৮
২০১৬ সালে কেকেআর বনাম আরসিবির আরও এক ম্যাচে কোহলি, গম্ভীরের তিক্ততার পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল। সে দিনও হেরে গিয়েছিল কলকাতা। ১৮৩ রান তাড়া করেও জয় আসেনি। তবে তাতে গম্ভীরের আগ্রাসনে খামতি ছিল না।
১২১৮
ম্যাচের শুরু থেকেই কলকাতার অধিনায়কের আগ্রাসী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল। ১৯তম ওভারে, ব্যাঙ্গালোরের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, একটি রান নেন কোহলি। রান নিয়ে তিনি নন-স্ট্রাইকার এন্ডে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন সে দিকে বল ছোড়েন গম্ভীর। দেখে মনে হয়েছিল, যেন কোহলিকে লক্ষ্য করেই বলটি ছুড়ে মারা হয়েছে।
১৩১৮
এই ঘটনার পর মাঠে ফের আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই তারকার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরিস্থিতি সামাল দেন আম্পায়ার। অপ্রীতিকর আচরণের জন্য গম্ভীরকে সমালোচনা এবং শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল।
১৪১৮
সময় বদলেছে। বিরাট এখন আর আরসিবির অধিনায়ক নন। গম্ভীরও নেই কেকেআরে। তিনি এখন লখনউয়ের মেন্টর। পরিস্থিতি বদলে গেলেও বিরাট-গম্ভীরের তিক্ততায় বিরাম নেই আজও। সোমবার লখনউয়ের ঘরের মাঠে দুই তারকার ঝামেলা প্রকাশ্যে দেখা গেল আবার।
১৫১৮
ম্যাচটি জিতেছে আরসিবি। মাত্র ১২৬ রান করেও কোহলিরা লখনউকে জিততে দেননি। ১০৮ রানে শেষ হয়ে যায় লোকেশ রাহুলদের ইনিংস। খেলা শেষে দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাত মেলানোর সময় বচসায় জড়িয়ে পড়েন কোহলি।
১৬১৮
ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের এক একটি উইকেট পড়তেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন বিরাট। কখনও গ্যালারিতে বসে থাকা স্ত্রী অনুষ্কার দিকে ছুড়ে দিচ্ছিলেন চুম্বন, কখনও আবার মাঠের বাইরে বসে থাকা লখনউয়ের খেলোয়াড়দের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন।
১৭১৮
আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু বলতে দেখা যায় তাঁকে।
১৮১৮
পাল্টা লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটারকেও জবাব দেন কোহলি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ঘটনাস্থলে আসেন মেন্টর গম্ভীর। তিনিও পুরনো ‘শত্রু’ কোহলির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। শাস্তি হিসাবে কোহলি এবং গম্ভীরের ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়েছে। আফগান ক্রিকেটারের জরিমানা হয়েছে ৫০ শতাংশ ম্যাচ ফি।