Flood like situation landslide in Sikkim due to heavy rain dgtld
Heavy Rain in Sikkim
টানা বৃষ্টির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত সিকিম, রেশ কালিম্পঙেও, ছবিতে ধরা দিল প্রকৃতির রোষ
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম। প্রভাব পড়েছে কালিম্পঙেও। তিস্তা নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় কালিম্পং জেলার বহু অংশ জলের নীচে। তিস্তাবাজার এলাকার দেওগ্রামের রাস্তা জলমগ্ন।
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ২১:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ক্রমাগত বৃষ্টি। তার জেরে ধস নেমেছে সিকিমে। সেখানে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। বেশ কিছু জায়গার সঙ্গে বাকি রাজ্যের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে উদ্ধার করা হবে পর্যটকদের? চিন্তায় প্রশাসন।
০২১৬
অন্য দিকে, উত্তর সিকিমে বৃষ্টির কারণে তিস্তায় জল বৃদ্ধি পেয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে কালিম্পং জেলার কিছু অংশে। মে মাসের শেষে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছে। তার পর থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলছে। এর মধ্যে তিস্তা নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় কালিম্পং জেলার বহু অংশ জলের নীচে। তিস্তাবাজার এলাকার দেওগ্রামের রাস্তা জলমগ্ন। কিছু রাস্তায় ধস নেমেছে। বহু মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে প্রশাসন।
০৩১৬
সিকিম সরকার জানিয়েছে, বিপর্যয়ের জেরে সে রাজ্যে এখনও ১,২০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশি পর্যটক রয়েছেন। ওই ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশের, তিন জন নেপাল ও দু’জন তাইল্যান্ডের বাসিন্দা। তাঁদের কী ভাবে উদ্ধার করা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগে প্রশাসন।
০৪১৬
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গন এবং চুংথাংয়ের সংযোগকারী বেইলি সেতুটি ভেঙে গিয়েছে। ধস নেমে বহু রাস্তা বন্ধ। বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ভেঙে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটিও।
০৫১৬
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে প্রথমে ত্রাণ নিয়ে সিকিমের বিভিন্ন অংশে পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে রাস্তা থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়েছে। তার পরেই ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মীরা। আটকে পড়া পর্যটকেরা সুস্থই রয়েছেন বলে খবর।
০৬১৬
আটকে পড়া পর্যটকদের বিমানে চাপিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। তবে আবহাওয়া ভাল না-হলে তা সম্ভব নয়। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই সিকিমের মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। সড়কপথেও কী ভাবে পর্যটকদের উদ্ধার করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
০৭১৬
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিংহ তামাং জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘরছাড়াদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ করছে সরকার।
০৮১৬
সিকিমে বন্যা পরিস্থিতি এবং ধসের কারণে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক চলাচলের অযোগ্য। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ছোট গাড়ি আপাতত মানসং-১৭ মাইল-আলগাড়া-লাভা-গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে পারবে। তুলনামূলক বড় এবং ভারী গাড়িগুলি পেডং-আলগাড়া-লাভা-গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছতে পারবে। পাশাপাশি, কালিম্পং থেকে দার্জিলিং যাওয়ার জন্য ২৭ মাইল থেকে তিস্তা ভ্যালি হয়ে পৌঁছনো যাবে।
০৯১৬
যদিও আশঙ্কা এখনও কাটেনি। কারণ, সিকিমে এখনও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। লাল সতর্কতা রয়েছে উত্তর সিকিমে। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে বৃষ্টি কিছুটা কমেছিল। তার ফলে তিস্তার জলস্তর নেমেছিল।
১০১৬
শুক্রবার সকাল থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয় সিকিমে। তার জেরে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। তবে পরিস্থিতি এখনও বিপদসীমার বাইরে যায়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
১১১৬
সিকিমে ভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কালিম্পঙে। জলপাইগুড়ির সরস্বতীপুর চা-বাগান এলাকা থেকে শুরু করে গজলডোবা ব্যারেজ পার করে মিলনপল্লি চর থেকে বোদাগঞ্জের গৌরিকোন, বারোপাটিয়া চর, রন্ধামালির চর-সহ দোমোহনি সেতু পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১২১৬
তিস্তাপারের বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। গত দু’দিন ধরে আতঙ্কে রয়েছেন দেওগ্রামের বাসিন্দারা। সেখানে বেশির ভাগ অংশই জলের নীচে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, হড়পা বানের পর হঠাৎই জল বেড়ে যাচ্ছে নদীতে। এর ফলে নদী থেকে বাড়ি অনেক দূরে হলেও সেখানে জল ঢুকে যাচ্ছে।
১৩১৬
সিকিম এবং কালিম্পঙে বিপর্যয়ের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা গিয়েছে, টানা বৃষ্টির কারণে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। বহু পাহাড়ি রাস্তায় ধস নেমেছে। নয়তো রাস্তার একাংশ গিলেছে নদী। স্থানীয়দের আতঙ্ক, গত অক্টোবর মাসে যে বন্যা হয়েছিল, আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে না তো!
১৪১৬
নদীর জল নেমে যাওয়ার পর বহু রাস্তার উপর জমে রয়েছে পলিমাটি। তার উপর দিয়েই স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, দু’চাকা আটকে রয়েছে কাদামাটিতে।
১৫১৬
কোথাও আবার রাস্তায় ধস নামার কারণে যাতায়াত বন্ধ। তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। প্রয়োজন থাকলেও যাতায়াত করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটকেরা।
১৬১৬
কিন্তু কেন বার বার এই বিপর্যয়? এখনও পর্যন্ত এমন কিছু বৃষ্টি হয়নি যে, নদীর জলস্তর এ ভাবে বৃদ্ধি পাবে! পরিবেশবিদদের একাংশের মতে, গত বছর অক্টোবর মাসে প্রবল বৃষ্টির জেরে হড়পা বানে উত্তর সিকিমের চুংথাম বাঁধ ভেঙে যে বিপর্যয় হয়েছিল, তাতে জলের সঙ্গে পাথর, বালি, পলি-সহ অনেক কিছুই নীচের দিকে নেমে এসেছে। জমা হয়েছে নদীখাতে। এর ফলে নদীগুলি নাব্যতা হারিয়েছে। তাই একটু বৃষ্টিতেই ফুলেফেঁপে উঠছে তিস্তা। — নিজস্ব চিত্র।