কোন জীব কোন রঙে বেশি আকৃষ্ট হয়, তা নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। নানা মুনির নানা মতও প্রকাশ্যে এসেছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
পোকামাকড় মারার জন্য আজকাল প্রায় সমস্ত বড় হোটেল-রেস্তরাঁতেই আলোর ফাঁদ দেখা যায়। ইদানীং কৃষিজমিতেও এই আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা হয় কীটপতঙ্গ দমনে। তার কারণ, তারা আলোয় আকৃষ্ট হয়।
০২১৫
কিন্তু কোন জীব কোন রঙে বেশি আকৃষ্ট হয়, তা নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। নানা মুনির নানা মতও প্রকাশ্যে এসেছে। বিস্তর আলোচনাও হয়েছে তা নিয়ে।
০৩১৫
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় যেমন দাবি করা হয়েছে, নীল রঙেই বেশি আকৃষ্ট হয় বিষাক্ত পতঙ্গরা। একদল গবেষকের দাবি, খাদ্য ভেবেই নীল রঙের দিকে ধেয়ে যায় তারা।
০৪১৫
এই তথ্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। অতীতের গবেষণাতেও তা-ই দেখা গিয়েছে। সেই কারণে পতঙ্গদের জন্য নীল রঙের মরণফাঁদ তৈরির রীতি প্রচলিত বিশ্ব জুড়ে। কিন্তু যত বিতর্ক ছিল এর নেপথ্য-কারণ নিয়ে।
০৫১৫
অতীতের গবেষণায় দাবি করা হয় যে, নীল রং জোরালো ভাবে পতঙ্গদের চোখে ধরা পড়ে না। ওই রঙের ধূসর ভাব ওদের কাছে আরামদায়ক। ফলে নীল রঙের বস্তুকে তারা বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা হিসাবে বেছে নেয়।
০৬১৫
কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, আফ্রিকার টেটসি প্রজাতির বিষাক্ত পতঙ্গ নীল রংকে খাদ্য হিসাবেই দেখে। যে সব পোকা তাদের খাদ্য, নীল রঙের মধ্যে সেই সব পোকামাকড়কেই দেখতে পায় টেটসি বা হর্স ফ্লাইয়েরা।
০৭১৫
ব্রিটেনের অ্যাবারিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রজার স্যান্টারের নেতৃত্বে এই গবেষণা চলেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘রয়্যাল সোসাইটি’ জার্নালে।
০৮১৫
কিন্তু কী ভাবে ওই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন গবেষকেরা? স্যান্টার জানিয়েছেন, তাঁরা টেটসি জাতীয় পতঙ্গের মতো হুবহু কৃত্রিম স্নায়ুতন্ত্র তৈরি করেছিলেন প্রথমে। মেশিন লার্নিং পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তা তৈরি করা হয়।
০৯১৫
পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, পতঙ্গের আলোকসংবেদী কোষগুলি কোন রঙে বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। দেখা গিয়েছে, নীল এবং সবুজ রঙের মধ্যে নীল রংকেই বেছে নিচ্ছে তারা।
১০১৫
গবেষকেরা জানান, নীলফাঁদে যে ক’টি টেটসি মাছি ধরা পড়েছে, সেগুলি অনেক ক্ষণ অভুক্ত ছিল। এর থেকেই গবেষকেরা বুঝতে পেরেছেন, মূলত খাদ্যের খোঁজে নীল রঙের দিকে ছুটে যায় পতঙ্গেরা।
১১১৫
স্যান্টার জানান, পতঙ্গে কোন রঙে বেশি আকৃষ্ট হয়, তা বুঝতে পারলে আরও সঠিক ভাবে আলোর ফাঁদ তৈরি করা সম্ভব হবে।
১২১৫
বিভিন্ন প্রজাতির পতঙ্গ থেকে রোগজীবাণু ছড়ায় মানুষ এবং গবাদি পশুর শরীরে। তা রুখতে ভবিষ্যতে এই গবেষণা কাজে আসবে বলেই মত স্যান্টারের।
১৩১৫
আফ্রিকার সেটসি মৌমাছির মতো দেখতে। এরা এতটাই বিষাক্ত যে, এতে মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে। পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, এরা মানুষ-সহ বিভিন্ন প্রাণীর রক্ত চুষে শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়।
১৪১৫
এই মাছি আফ্রিকান ট্রাইপ্যানোসোম নামক ভাইরাসের বাহক। যার ফলে স্লিপিং সিকনেসের মতো রোগ হয়ে থাকে।
১৫১৫
পতঙ্গবাহিত রোগে বিশ্ব জুড়ে প্রচুর গবাদি পশুর মৃত্যু হয়। গবেষকেরা জানান, এই জাতীয় পতঙ্গ দমনে এই গবেষণা ভবিষ্যতে কাজে আসবে।