Aditi Rao Hydari could not succeed in Bollywood in spite of being a good actress dgtl
bollywood
বিয়ে লুকিয়ে বলিউডে, সুঅভিনেত্রী হয়েও বার বার প্রত্যাখ্যাত অদিতি
অদিতির বাবা পরবর্তী সময়ে আবার বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি তাঁর মা একাই বড় করেন অদিতিকে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে অদিতি ভরতনাট্যমের প্রশিক্ষণ শুরু করেন প্রখ্যাত শিল্পী লীলা স্যামসনের কাছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৩:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
তিনি রাজ পরিবারের সদস্য। আমির খানের স্ত্রী কিরণ রাওয়ের আত্মীয়। কিন্তু বলিউডের কূটনীতি এখনও অদিতি রাও হায়দরির কাছে দুর্বোধ্য।
০২২৩
অদিতির প্রপিতামহ আকবর হায়দরি ছিলেন নিজাম এস্টেটের প্রধানমন্ত্রী। মায়ের দিক দিয়েও তিনি রাজপরিবারের উত্তরসূরি। তাঁর মা বিদ্যা রাও ধ্রুপদী সঙ্গীতের প্রখ্যাত শিল্পী।
০৩২৩
অদিতির জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর, হায়দরাবাদে। অদিতির যখন মাত্র দু’বছর বয়স, ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁর বাবা মায়ের। তিনি মায়ের সঙ্গে চলে আসেন দিল্লিতে। তবে পরবর্তীকালে নামের সঙ্গে বাবা ও মা, দু’জনের পদবি ব্যবহার করেন তিনি।
০৪২৩
আশৈশব অদিতির দিন কেটেছে মিশ্র সংস্কৃতিতে। তাঁর বাবা ছিলেন বোহরি মুসলিম সম্প্রদায়ের। মা জন্মসূত্রে হিন্দু, কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের ভক্ত। ফলে বিভিন্ন সংস্কৃতির রীতিনীতিতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। বাবার সঙ্গেও অদিতির সম্পর্ক বজায় ছিল। হায়দরাবাদ থেকে তিনি দিল্লি যেতেন প্রায়ই।
০৫২৩
অদিতির বাবা পরবর্তী সময়ে আবার বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি তাঁর মা একাই বড় করেন অদিতিকে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে অদিতি ভরতনাট্যমের প্রশিক্ষণ শুরু করেন প্রখ্যাত শিল্পী লীলা স্যামসনের কাছে।
০৬২৩
দিল্লির স্কুলের পরে অদিতি পড়াশোনা লেডি শ্রীরাম কলেজে। বাবার ইচ্ছায় কিছু বছর তিনি কাটিয়েছিলেন আবাসিক স্কুলেও। অভিনয়ের প্রথম সুযোগ এসেছিল মাত্র ৮ বছর বয়সে। শেষ অবধি সেই ছবিতে অভিনয় করা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু স্কুলের সহপাঠীদের কাছে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন অদিতি।
০৭২৩
মঞ্চে ভরতনাট্যমের অনুষ্ঠান করার সময় অদিতিকে পছন্দ হয় পরিচালক সারদা রামনাথনের। তিনি তামিল ছবি ‘শৃঙ্গারম’-এ সুযোগ দেন অদিতিকে। তিনটি জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয় ছবিটি।
০৮২৩
‘শৃঙ্গারম’ ছবিতে অদিতিকে দেখে ভাল লেগেছিল রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার স্ত্রী ভারতীর। তিনি রাকেশের বহু ছবির সম্পাদনাও করেছিলেন। ‘দিল্লি সিক্স’ ছবিতে নায়িকা ‘বিট্টু’-র ভূমিকায় প্রথমে অভিনয় করার কথা ছিল অদিতির। কিন্তু শেষ অবধি সুযোগ পান সোনম কপূর।
০৯২৩
পরিবর্তে অদিতি অভিনয় করেন পার্শ্বচরিত্রে। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ফুটিয়ে তোলেন মধ্যবয়সি মহিলার চরিত্র। ঋষি কপূর, ওম পুরী, অতুল কুলকার্নি, দিব্যা দত্ত ওয়াহিদা রহমানের মতো বলিষ্ঠ কুশীলবদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেন অদিতি।
১০২৩
বলিউডে প্রথম ছবি থেকেই নজর কাড়েন অদিতি। তবে ‘দিল্লি সিক্স’ ঘিরে তাঁর স্মৃতি সুখের নয়। একে তো নায়িকার চরিত্র থেকে তিনি বঞ্চিত হন। পাশাপাশি, তাঁর উপর চিত্রায়িত বেশ কিছু দৃশ্য শেষ অবধি বাদ পড়ে ছবি থেকে।
১১২৩
অভিনয় সাবলীল হলেও প্রথম ছবির পরে দীর্ঘদিন অদিতির কাছে কোনও কাজ ছিল না। তাঁর অভিযোগ, প্রযোজকের সঙ্গে আপস করে ‘বিশেষ চাহিদা’ মেটাতে চাননি তিনি। ফলে প্রায় আট মাস তাঁর হাতে কোনও কাজ ছিল না।
১২২৩
আবার তিনি প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হন ২০১১ সালে। ইমতিয়াজ আলির পরিচালনায় ‘রকস্টার’ ছবিতে কাশ্মীরি তরুণীর ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর। কিন্ত সে সুযোগও শেষ অবধি চলে গিয়েছিল নার্গিস ফকরির কাছে। এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও দেখা দিয়েছিল সে সময়।
১৩২৩
এই ছবিতেও তিনি অভিনয় করেন পার্শ্বচরিত্রে। তাঁর অভিনীত বেশ কিছু দৃশ্য বাদও পড়ে ছবি থেকে। বার বার একই ঘটনা ঘটতে থাকায় তিনি ঠিক করেন এ বার সেই ছবিতেই কাজ করবেন, যেখানে তিনি মূল অভিনেত্রী।
১৪২৩
২০১১ সালেই সুধীর মিশ্রর পরিচালনায় তিনি অভিনয় করেন ‘ইয়ে সালী জিন্দগী’-তে। এই ছবিতে মোট বাইশটি চুম্বনদৃশ্যে অভিনয় করেন তিনি। ভেঙে দেন মল্লিকা শেরাওয়াতের রেকর্ডও। কিন্তু এই ছবিও তাঁর কেরিয়ারে বাড়তি গতি যোগ করতে পারেনি।
১৫২৩
ইন্ডাস্ট্রিতে অদিতির পরিচয় হয়ে দাঁড়ায় ‘সাহসী অভিনেত্রী হিসেবে। কিন্তু পরিপূর্ণ নায়িকা কোনওদিনই হয়ে উঠতে পারেননি। ‘মার্ডার থ্রি’ ছবিতে রণদীপ হুডার সঙ্গে বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবির পর থেকেই তাঁর এবং রণদীপের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা যেতে থাকে ইন্ডাস্ট্রিতে। অদিতির জন্যই নাকি পুরনো বান্ধবী নীতু চন্দ্রার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় রণদীপের।
১৬২৩
ঠিক এই সময়েই বিস্ফোরণ ঘটান অদিতি। জানান, তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। ভক্তরা জানতেনই না, অদিতি আদৌ বিবাহিত! এর পর অদিতি নিজেই জানান, তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে ডেটিং করছিলেন। সরকারি কর্মী-আইনজীবী-অভিনেতা সত্যদীপ মিশ্রকে বিয়ে করেছেন ২১ বছর বয়সে।
১৭২৩
২০১৩ সালে অদিতি জানান, তাঁদের সেপারেশন হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছেদের কারণ জানা না গেলেও শোনা যায়, সহঅভিনেতাদের সঙ্গে অদিতির ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি তাঁর স্বামী। তবে কেরিয়ারের শুরুতে নিজের বিবাহিত পরিচয় সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন অদিতি। তিনি চাননি, তাঁর বলিউডের কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হোক।
১৮২৩
অভিনেত্রী জীবনের বেশ কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পরেও অদিতির যাত্রাপথ ছিল বন্ধুর। ২০১৩ সালে মুক্তি পায় অক্ষয়কুমারের বিপরীতে ‘বস’। কিন্তু এই ছবিতেও অদিতির থেকে বেশি গুরুত্ব পায় সোনাক্ষীর আইটেম ডান্স।
১৯২৩
২০১৬ সালে ‘ওয়াজির’ ছবিতে ফরহান আখতার, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেন অদিতি। কিন্তু বিধুবিনোদ চোপড়া প্রযোজিত এই ছবি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
২০২৩
এই সময় রণদীপের সঙ্গে অদিতির পুরনো প্রেম ভেঙে গিয়েছিল। এ বার তাঁর সঙ্গে ফরহান আখতারের প্রেম ঘিরে নতুন গুঞ্জন শোনা যেতে থাকে। অদিতি এ বার মরিয়া হয়ে ওঠেন নিজের ভাবমূর্তি শোধরাতে। জানান, তিনি ফিরে যাচ্ছেন নিজের স্বামীর কাছে।
২১২৩
বলিউডে অমসৃণ কেরিয়ারের মাঝেই অদিতি ফিরে যান দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে। অভিনয় করেন মণিরত্নমের পরিচালনায় ‘চিক্কা চিবন্ত বমন’ ছবিতে। এই ছবিতে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়।
২২২৩
সঞ্জয় দত্তের কামব্যাক ছবি ‘ভূমি’-তে অভিনয় করেন অদিতি। তবে তাঁর সাম্প্রতিক সব কাজকে ছাপিয়ে গিয়েছে সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবত’-এ মেহরুন্নিসার ভূমিকায় অভিনয়।
২৩২৩
সুঅভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও বলিউডে বেশি সুযোগ পাননি অদিতি। তাঁর ভক্তদের মত, শুধু অভিনয় প্রতিভাকে মূলধন করে তিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। স্টারকিডদের কাছে বার বার প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছে তাঁকে। ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও গডফাদার না থাকা বা বিতর্কে জড়িয়ে না পড়াটাও তাঁর পিছিয়ে থাকা কারণ বলে মনে করেন অনেকে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)