Delhi is in financial crisis as extra spending indicates they can fall into revenue deficit dgtl
Delhi
আর্থিক সঙ্কটে ‘লক্ষ্মীমন্ত’ দিল্লি, দু’মাসের খরচ চালানোরও ক্ষমতা নেই সরকারের! কেন এই অবস্থা
২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ থেকে রাজস্বে লাভের মুখ দেখছে দিল্লির সরকার। ওই অর্থবর্ষে আর্থিক উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় পাঁচ হাজার কোটি। অর্থাৎ, সে বছর যে পরিমাণ রাজস্ব দিল্লি আদায় করেছিল, তার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা কম ব্যয় করেছিল সরকার।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
আর্থিক সঙ্কটের মুখে দিল্লি। গত কয়েক বছর আর্থিক ঘাটতির মুখ দেখেনি দেশের রাজধানী। বরং উদ্বৃত্ত হত অর্থ। অর্থাৎ আদায় হওয়া রাজস্বের তুলনায় সরকারের খরচের পরিমাণ ছিল কম। হাতে থাকত অতিরিক্ত টাকা।
০২১৭
কিন্তু সেই হিসাবে বদল হতে চলেছে এ বছর। চলতি অর্থবর্ষে হাতে আসা টাকার তুলনায় বিভিন্ন খাতে বেশি খরচ হতে পারে বলে মনে করছে সে রাজ্যের আম আদমি পার্টির সরকার। ফলে আর্থিক ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
০৩১৭
এই হিসাব প্রকাশ্যে আসতেই তাতে রাজনৈতিক রং লেগেছে। কেন্দ্রের বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে আপ সরকারকে। অন্য দিকে, দিল্লির অতিশী সরকারের দাবি, বিজেপি শাসিত এমন একটি রাজ্যও নেই যেখানে আর্থিক ঘাটতি দেখা যায়নি।
০৪১৭
২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ থেকে রাজস্বে লাভের মুখ দেখছে দিল্লির সরকার। ওই অর্থবর্ষে আর্থিক উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, সে বছর যে পরিমাণ রাজস্ব দিল্লি আদায় করেছিল, তার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা কম ব্যয় হয়।
০৫১৭
২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে সেই টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছিল ১৪,৪৫৬ কোটি টাকা। এমনকি, ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষেও প্রাপ্ত রাজস্বের তুলনায় ৬,৪৬২ কোটি টাকা কম ব্যয় করেছিল সরকার। অর্থাৎ, অন্য রাজ্যের তুলনায় ‘লক্ষ্মী’ ছিল রাজধানী দিল্লি।
০৬১৭
দিল্লি সরকারের হিসাব বলছে, পুরোনো সেই ধারা বজায় থাকবে না। বরং ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে বড়সড় আর্থিক ঘাটতি দেখা যেতে পারে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক বাজেটে দিল্লি সরকার অনুমান করেছিল, চলতি অর্থবর্ষেও আদায় করা রাজস্বের থেকে সরকারের ব্যয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কম হবে।
০৭১৭
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অতিক্রান্ত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষে প্রাপ্ত রাজস্বের থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হতে পারে। আর্থিক ঘাটতি হতে পারে ১,৪৯৫.৪৮ কোটি টাকার। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি সরকারকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
০৮১৭
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? চলতি অর্থবর্ষে রাজস্বের কথা মাথায় রেখে ৬১ হাজার কোটির বাজেট অনুমোদন করা হয়েছিল দিল্লির বিধানসভায়।
০৯১৭
এই তহবিল প্রাথমিক ভাবে প্রয়োজনীয় রাজস্ব ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়। যার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থা, পরিষেবা পরিচালনা এবং জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ভর্তুকির খরচও ধরা থাকে।
১০১৭
দিল্লির সরকারি সূত্রে খবর, চলতি অর্থবর্ষে বেশ কয়েকটি দফতরে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে দফতরগুলির খরচও বেড়েছে। দিল্লি সরকার জানিয়েছে, পেনশন এবং ভাতা প্রদানের জন্য চলতি অর্থবর্ষে সংশ্লিষ্ট দফতরের জন্য ১৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
১১১৭
বিদ্যুৎ দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫১২ কোটি টাকা। অন্য দিকে, বৈদ্যুতিক বাস চালানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিবহণ দফতরের প্রয়োজন ৯৪১ কোটি টাকা।
১২১৭
এ ছাড়া, এই অর্থবর্ষে সরকারি হাসপাতালগুলি পুনর্নির্মাণ খাতে এবং স্বাস্থ্য দফতরের অন্যান্য কাজের জন্য মোটা টাকা বরাদ্দ করেছে দিল্লির আপ সরকার। প্রয়োজনীয় ডি-সিল্টিং এবং পুনর্গঠন সংক্রান্ত কাজ বাবদ সেচ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ দফতরকে ৪৪৭ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
১৩১৭
একই সঙ্গে, কোভিড মহামারিতে হওয়া আর্থিক ক্ষতি পূরণের জন্য এবং জাপান থেকে নেওয়া ঋণ মেটাতে দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের জন্য ৩,২৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার।
১৪১৭
স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের অধীনে থাকা মেডিক্যাল কলেজগুলির জন্যও ২৫০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে দিল্লি সরকারের তরফে। অর্থাৎ, সব দফতর মিলিয়ে খরচের পরিমাণ প্রায় ৭,৩৬২ কোটি টাকা।
১৫১৭
এ ছাড়াও বেতন, মজুরি এবং সুদ পরিশোধ বাবদ সরকারের মাসিক ২,২৪০ কোটি টাকার খরচা তো রয়েইছে।
১৬১৭
অন্য দিকে, বর্তমানে সরকারের হাতে থাকা নগদের পরিমাণ ৪,৪৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এই আর্থিক পরিস্থিতিতে দিল্লি সরকারের হাতে দু’মাসের খরচপাতি চালানোর মতো অর্থও নেই। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চাপে দিল্লির নয়া মুখ্যমন্ত্রী অতিশী।
১৭১৭
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে দিল্লি সরকারকে আর্থিক দিক থেকে অভিনব কৌশল খুঁজে বার করতে হবে। পাশাপাশি অতিরিক্ত রাজস্ব উৎপাদন বা খরচ কমানোর কী ব্যবস্থা করা যায়, সে দিকেও নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।