culprits are setting fraud qr codes for commoners to scan and scam them off of their money dgtl
Cyber Fraud
বিজ্ঞাপনের কিউআর কোডেও রক্ষা নেই! অভিনব ফাঁদে খোয়া যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা
বাজারে আসা নতুন মোবাইল, গাড়ি, কিংবা বাড়ি, মোবাইলে সহজে চোখ বুলিয়ে নিতে রোজ শয়ে-শয়ে মানুষ স্ক্যান করেন কোড।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
আপাত ভাবে নিরীহ বা ছিমছাম বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। প্রসাধন সামগ্রী থেকে বাড়ি বিক্রি, বিজ্ঞাপনের সঙ্গে প্রায়শই জুড়ে থাকে একটি কিউআর কোড। চোখধাঁধানো কিউআর কোড স্ক্যান করে নেওয়ার আগে অনেকেই দু’বার ভাবেন না।
০২১৭
মুঠোফোনের দৌলতে টাকা দেওয়া-নেওয়া হোক বা কোনও বিষয়ে বিস্তারিত খবর নেওয়া, কিউআর কোড যেন সব কিছুর সহজ সমাধান। বাজারে আসা নতুন মোবাইল, গাড়ি, কিংবা বাড়ি, মোবাইলে সহজে চোখ বুলিয়ে নিতে রোজ শয়ে-শয়ে মানুষ স্ক্যান করেন এই কোড।
০৩১৭
তবে এ বার সাবধান। পথে যেতে যেতে এমন হোর্ডিং-বিজ্ঞাপন দেখে মোবাইল নিয়ে কোড স্ক্যান করলেই ঘটতে পারে বিপদ।
০৪১৭
নিমেষে উধাও হয়ে যেতে পারে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা। বেহাত হতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য। মোবাইল ফোনের দখল নিতে পারে সাইবার প্রতারকেরা।
০৫১৭
এমনই হোর্ডিং-বিজ্ঞাপন নিয়ে চিন্তিত পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, গত দু’মাসে তাদের কাছেই এমন বিষয়ে অভিযোগ এসেছে কয়েকটি।
০৬১৭
রাজ্যের অন্যান্য পুলিশ কমিশনারেটের মধ্যে এমন বিজ্ঞাপনী-হোর্ডিং নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে বেশি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে। এর পরেই রয়েছে বিধাননগর।
০৭১৭
জানা যাচ্ছে, অভিযোগকারীদের বড় অংশের দাবি, পথে যেতে যেতে রাস্তার ধারে লাগানো বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং দেখে মোবাইলে কিউআর কোড স্ক্যান করেছিলেন তাঁরা। এর পরেই কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আড়াই লক্ষ টাকা, আবার কারও খোয়া গিয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকারও বেশি।
০৮১৭
এমনও অভিযোগকারী রয়েছেন, যাঁর অজানতেই ঋণ চালু হয়ে গিয়েছে। ঋণের কিস্তি না মেটানো সংক্রান্ত ব্যাঙ্কের চিঠি পেয়ে অভিযোগকারী জানতে পেরেছেন যে, তাঁর নামে ঋণ আছে!
০৯১৭
তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি একটি বাড়ির বিজ্ঞাপন দেখে কিউআর কোড স্ক্যান করেছিলেন। তাতেই সেই বাড়ি কেনার জন্য নাকি তাঁর নামে ঋণের কাগজ জমা পড়ে গিয়েছে।
১০১৭
বাগুইআটির বাসিন্দা কলেজপড়ুয়া এক অভিযোগকারিণী পুলিশকে জানিয়েছেন, বাইপাসের ধারের একটি প্রসাধন সামগ্রীর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং দেখে তিনি কিউআর কোড স্ক্যান করেছিলেন।
১১১৭
পরে ফোনটি তাঁর অকেজো হয়ে যায়। তরুণীর কথায়, ‘‘কিছুই কাজ করা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, অন্য জায়গা থেকে আমার ফোনটা কেউ পরিচালনা করছে। এর পরে আমার সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট দু’টি হ্যাক হয়ে যায়।’’
১২১৭
ডায়মন্ড হারবার রোডের এক বাসিন্দার আবার অভিযোগ, ‘‘হঠাৎ আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ দফায় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা কেটে যায়। কিছুই না বুঝতে পেরে পুলিশে অভিযোগ জানাই।”
১৩১৭
তিনি আরও জানান, “দিন কয়েক বাদে থানা থেকে ডেকে জানতে চাওয়া হয়, কোনও কিউআর কোড আমি স্ক্যান করেছিলাম কি না। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসার সময়ে একটি আসবাবপত্রের বিজ্ঞাপন দেখে আমি স্ক্যান করেছিলাম বলে মনে পড়ে। পুলিশ জানায়, সেটা থেকেই হয়েছে।’’
১৪১৭
কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, এমন প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক করতে প্রচারে নামার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্তা বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলিকে ডেকে কথা বলা হচ্ছে। বড় বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলির তালিকা তৈরি হচ্ছে।”
১৫১৭
তাঁর মতে, “গত কয়েক মাসে কোন কোন সংস্থা তাদের সঙ্গে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছে, তা দেখা হবে। প্রতারণার এই ধরন একেবারে অভিনব।’’
১৬১৭
সাইবার গবেষক বিতনু দত্ত অবশ্য বললেন, ‘‘কিউআর কোড স্ক্যান করা মানেই সব কিছু বেহাত হয়ে গেল বা প্রতারিত হলাম, তেমনটা কিন্তু নয়। প্রতারকেরা কিউআর কোডের মধ্যে একটি লিঙ্ক দিয়ে রাখে।”
১৭১৭
বিতনুর দাবি, “কিউআর কোড স্ক্যান করে যদি মনে হয় যে কোনও সন্দেহজনক লিঙ্ক খুলেছে, তা হলে আর এগোনো উচিত নয়। মোদ্দা কথা, যে কোনও কোড স্ক্যান করার আগে সতর্ক হতে হবে।’’