‘ক্লাউড সিডিং’ পদ্ধতিতে আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য বিমান, রকেট বা ড্রোন ব্যবহার করে বরফের আকারে সিলভার আয়োডাইড ছোড়া হয় আকাশের দিকে।
সংবাদ সংস্থা
বেজিংশেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ১৫:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
১৯৬১ সাল থেকে চিনে উল্লেখযোগ্য হারে গরম বাড়তে শুরু করে। দাবদাহ থেকে ফসল বাঁচাতে ‘ক্লাউড সিডিং’ শুরু করেছে সে দেশ। ‘ক্লাউড সিডিং’-এর অর্থ রাসায়নিক ব্যবহার করে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানো।
০২১৬
রকেটের মাধ্যমে বায়ুস্তরে সিলভার আয়োডাইড পাঠিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করছে চিন।
০৩১৬
সমগ্র চিন জুড়ে, বিশেষ করে চিনের দক্ষিণ সিচুয়ান এবং চংগিং প্রদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ফসলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেই কারণে এই এলাকাগুলির কয়েক হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করছে সে দেশের সরকার।
০৪১৬
খরার হাত থেকে বাঁচতে জল-ধারণকারী বিভিন্ন রাসায়নিক ছিটিয়ে সেচ এবং জলের অভাব রয়েছে এমন জায়গায় কৃষিকার্যের অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা চলছে সরকারি উদ্যোগে।
০৫১৬
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ইয়াংসি নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে আরও বৃষ্টিপাত ঘটাতে ‘ক্লাউড সিডিং’ পদ্ধতি ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে। এই নদীর তীরবর্তী কিছু অঞ্চল ইতিমধ্যেই শুকিয়ে গিয়েছে। আর সেই জন্যই এই অভিনব পন্থা গ্রহণ করেছে চিন সরকার।
০৬১৬
যদিও এই পরিকল্পনা এখনই বাস্তবায়িত করার কথা ভাবছে না চিন। এই এলাকাগুলির আকাশে মেঘের স্তর পাতলা হওয়ার কারণেই আপাতত এই পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে।
০৭১৬
‘ক্লাউড সিডিং’ আসলে কী? আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য বিমান, রকেট বা ড্রোন ব্যবহার করে বরফের আকারে সিলভার আয়োডাইড ছোড়া হয় আকাশ। এই রাসায়নিক মেঘে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে বিক্রিয়া ঘটায় এবং ফোঁটা ফোঁটা হয়ে বৃষ্টি হিসাবে ঝরে পড়ে।
০৮১৬
ক্লাউড সিডিংয়ের ক্ষেত্রে বৃহত্তর পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে কি না, সে সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। যদিও বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ রয়েছে, যে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে প্রতিবেশী দেশগুলিতেও জলবায়ু পরিবর্তন ঘটতে পারে।
০৯১৬
ক্লাউড সিডিং-এর মাধ্যমে আবহাওয়ার অবস্থা পরিবর্তন করার ক্ষমতা সীমিত। মেঘের ধরন এবং বায়ুমণ্ডলের অবস্থা সম্পর্কিত কিছু শর্ত পূরণ করলে তবেই এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত সম্ভব।
১০১৬
পাশাপাশি, এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় যখন-তখন তা ব্যবহার করে বৃষ্টিপাত ঘটানো সম্ভব নয়। অন্তত সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরেই আছে ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি।
১১১৬
নাসা-র জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা গ্যাভিন স্মিডের মতে এত টাকা ব্যয় করে এই পদ্ধতির দ্বারা জলবায়ুর পরিবর্তন করার চেষ্টা করা খুব একটা লাভজনক এবং ফলপ্রসূ নয়।
১২১৬
শুধু বৃষ্টিপাত নয়, ক্লাউড সিডিং করে তুষারপাত ঘটানোও সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে। আইডাহোর গবেষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃত্রিম ভাবে তুষারপাত ঘটিয়েছেন।
১৩১৬
বেজিং ওয়েদার মডিফিকেশন অফিস এবং অন্যান্য প্রাদেশিক সংস্থার হয়ে ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে আবহাওয়া পরিবর্তন করার জন্য হাজারো মানুষ কাজ করছেন বলেও ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৪১৬
২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিকের আগে এবং ২০২১ সালে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষ সমাবেশের আগেও দূষিত এবং মেঘলা আবহাওয়া দূর করা হয় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
১৫১৬
কেবল চিন নয়, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ১৯৯০-এর দশক থেকে ক্লাউড সিডিং শুরু করছে এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্তত পক্ষে ১৮৫ বার ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আবহাওয়ার পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে।
১৬১৬
মেঘ ভেঙে বড় ঝড় এবং সাইক্লোনের দাপট ঠেকাতে আমেরিকাও এই পদ্ধতির ব্যবহার করেছে। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জ ক্লাউড সিডিংয়ের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর থেকে এই পদ্ধতির প্রয়োগ নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে আমেরিকা।