সচরাচর চিনের পূর্বাংশে জে-২০ যুদ্ধবিমানগুলি মোতায়েন থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারত সীমান্তের এত কাছে এগুলি কেন মোতায়েন করা হল, তা নিয়েই শুরু হয়েছে ধন্দ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৪ ০৮:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
ভারতের নাকের ডগায় চুপিসারে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছে চিন। কিন্তু রেডারে ধরা না পড়ায় সাধারণ ভাবে বিমানগুলিকে ঠাহর করাও সম্ভব নয়।
০২১৭
সম্প্রতি উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, সিকিম সীমান্ত থেকে অন্তত ১৫০ কিলোমিটার দূরে চিন অধিকৃত তিব্বতের শিগাৎসে বিমানবন্দরে ছ’টি অত্যাধুনিক জে-২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে চিন।
০৩১৭
পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা সেনাঘাঁটি থেকে বিমানবন্দরটির দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটারেরও কম। এই হাসিমারাতেই রয়েছে ভারতের দ্বিতীয় রাফাল বিমানঘাঁটি।
০৪১৭
শিগাৎসে তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। সেই শহরেই রয়েছে বিমানবন্দরটি। সেখানে সারা বছরই জে-১০ যুদ্ধবিমান এবং কেজে-৫০০ বিমান রাখা থাকে। তবে, জে-২০ যুদ্ধবিমান এই প্রথম।
০৫১৭
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বিমানবন্দরটির উচ্চতা ১২ হাজার ৪০৮ ফুট। বায়ুসেনা ঘাঁটির পাশাপাশি অসামরিক ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। সেখানে একটি ওয়াই-২০ মালবাহী বিমানও দেখা গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেনাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ওই বিমানের মাধ্যমেই সরবরাহ করা হচ্ছে।
০৬১৭
গত ২৭ মে তোলা উপগ্রহে চিত্রে জে-২০ বিমান দেখতে পাওয়ার পরেই শুরু হয়েছে হরেক জল্পনাকল্পনা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, জে-২০ আধুনিক যুদ্ধবিমান। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৪৬৮ কিলোমিটার।
০৭১৭
এগুলো বিশেষ ধরনের ‘স্টেলথ’ যুদ্ধবিমান, অর্থাৎ শক্তিশালী রেডার ছাড়া এগুলি ধরা পড়ে না। কূটনীতিকদের একাংশের দাবি, সম্ভবত ২৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান ভারত সীমান্তের কাছে মোতায়েন করেছে চিন। কিন্তু রেডারে ধরা পড়ছে না।
০৮১৭
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে মন্ত্রক যে বিষয়টি জানে না, তেমনও নয়। ভারতে এই মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচন চলছে। আগামী মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল। তার আগে হঠাৎ করে চিনের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
০৯১৭
সচরাচর চিনের পূর্বাংশে জে-২০ যুদ্ধবিমানগুলি মোতায়েন থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারত সীমান্তের এত কাছে এগুলি কেন মোতায়েন করা হল, তা নিয়েই শুরু হয়েছে ধন্দ। এর আগেও ২০২০ এবং ২০২৩ সালে শিনজিয়াং-এ দেখা গিয়েছিল এই বিমান। তবে এত বেশি পরিমাণে এই যুদ্ধবিমান এর আগে মোতায়েন করা হয়নি।
১০১৭
জে-২০তে রয়েছে একাধিক সেন্সর। এমনকি, চিনের উন্নততম ক্ষেপণাস্ত্র (এয়ার টু এয়ার মিসাইল) বহন করতে পারে এই বিমান। তার মধ্যে রয়েছে পিএল-১৫ নামের দীর্ঘতম রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র, যা ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নির্ভুল ভাবে আঘাত হানতে পারে।
১১১৭
২০২০ সালে গলওয়ান সংঘর্ষ, ২০২২ সালে তাওয়াংয়ের কাছে প্রকৃত সীমান্তরেখার কাছে ভারত এবং চিনের সেনার মধ্যে সংঘাত দেখা গিয়েছিল। গত কয়েক বছরে একাধিক বার বেজিংয়ের বিরুদ্ধে সীমান্তে আগ্রাসন এবং ভারতের এলাকা দখলের অভিযোগ উঠেছে।
১২১৭
মাঝে কিছু দিন স্থিতাবস্থা বজায় থাকলেও অনেকেরই আশঙ্কা লোকসভা নির্বাচনে আবহে ফের ভারতের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছে শি জিনপিংয়ের দেশ। সমর বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ধীর গতিতে ভারতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরতে চাইছে চিন।
১৩১৭
গত পাঁচ বছরে তিব্বত-সহ ভারতের কাছাকাছি এলাকাগুলিতে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে সে দেশ। গড়ে তুলছে নতুন বায়ুসেনা ঘাঁটি। উন্নত করছে পুরনো ঘাঁটিগুলিও। নিয়মিত যুদ্ধবিমানের মহড়াও চলছে।
১৪১৭
জে-২০ যুদ্ধবিমান রুখতে ভারতের ভরসা এখন রাফাল। ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান রয়েছে ভারতের, তার মধ্যে আটটি এখন আলাস্কায় আমেরিকার সঙ্গে মহড়া দিচ্ছে।
১৫১৭
আরও ২৬টি রাফাল কেনার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে ভারত। হাসিমারায় ভারতের ১৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে। তবে চিনের ‘মেঘনাদের’ সঙ্গে ভারতের ১৬টি রাফাল কতখানি এঁটে উঠতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
১৬১৭
তবে সীমান্তের সুরক্ষায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না নয়াদিল্লি। রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা মজুত রয়েছে পূর্ব ভারতে। ‘স্টেলথ’ যুদ্ধবিমানকেও চিনে ফেলার ক্ষমতা রয়েছে এর। ফলে চিনের যুদ্ধবিমান কিংবা ক্ষেপণাস্ত্রকে রুখে দিতে পারবে এস-৪০০।
১৭১৭
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ভারতের শত্রু হিসেবে বার বার পাকিস্তানের নাম করলেও চিন নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে সে রকম কিছু বলতে দেখা যায়নি। যদিও এর আগে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সরকার সদা তৎপর।