China refuses co-operation to Pakistan projects dgtl
China Pakistan Relationship
বেরিয়ে এল ড্রাগনের আসল চেহারা! পাকিস্তানকে আর সাহায্য করতে নারাজ চিন, বড় বিপদে ইসলামাবাদ
ভারতের সঙ্গে বিরোধের সূত্রেই ঘনিষ্ঠ পাকিস্তান এবং চিন। এই দুই দেশের ‘অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের’ কথা কারও অজানা নয়। সেই বন্ধুত্বের বন্ধনে কি এ বার চিড় ধরল?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম, দু’দিকে দুই ‘শত্রু’ দেশ ভারতের। চিন বা পাকিস্তান, কারও সঙ্গেই নয়াদিল্লির সম্পর্ক মধুর নয়। বরং, এই দুই সীমান্তে বিদেশি সেনার সঙ্গে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধে ভারতীয় জওয়ানদের।
০২১৮
ভারতের সঙ্গে বিরোধের সূত্রেই ঘনিষ্ঠ পাকিস্তান এবং চিন। এই দুই দেশের ‘অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের’ কথা কারও অজানা নয়। পাকিস্তানে একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেছে চিন। অতীতে অনেক আর্থিক সাহায্যও বেজিংয়ের থেকে পেয়েছে ইসলামাবাদ।
০৩১৮
চিন-পাকিস্তানের সেই গাঢ় বন্ধুত্বে কি এ বার ফাটল ধরতে চলেছে? সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাপ্রবাহ তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকেই বলছেন, চিন এ বার হয়তো পাকিস্তানের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চলেছে।
০৪১৮
মোট তিনটি খাতে পাকিস্তানকে সহায়তায় আর রাজি নয় বেজিং। শক্তি, জল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কাজে পাকিস্তান কিছু সাহায্য চিনের কাছ থেকে চেয়েছিল। সূত্রের খবর, তাতে ‘না’ করে দিয়েছে বেজিং।
০৫১৮
পাকিস্তানে ৩০০০ কিলোমিটারের চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডরে (সিপিইসি) বিপুল বিনিয়োগ করেছে জিনপিং সরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক দিকে যেমন চিনের আর্থিক লাভ হচ্ছে, তেমন পাকিস্তানেও কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্যিক উন্নয়ন হচ্ছে।
০৬১৮
চিনের সাম্প্রতিক মতবদলে সিপিইসি প্রকল্প ধাক্কা খেতে চলেছে। এই প্রকল্পের অধীন কয়েকটি বিষয়েই চিন সহযোগিতায় বেঁকে বসেছে। জিনপিংয়ের মন জুগিয়ে চলার জন্য পাকিস্তানকে কিছু পরিকল্পনা বাতিলও করতে হয়েছে।
০৭১৮
পাকিস্তানের গোয়াদারে একটি আমদানিকৃত কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ছিল। পাক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছে ইসলামাবাদ।
০৮১৮
পাক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিদ্যুৎশক্তি, জলবণ্টন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সিপিইসি-র অধীনে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা ছিল। গিলগিট বাল্টিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটন বিষয়ক পরিকল্পনাও বাতিল হয়েছে।
০৯১৮
পাকিস্তানের এই পরিকল্পনাগুলিতে প্রথমে সায় দিয়েছিল চিন। সিপিইসি-র অধীনে চুক্তিতে স্বাক্ষরও করেছিল দুই দেশ। কিন্তু তার ন’মাস পর ১১ তম জয়েন্ট কো-অপারেশনের বৈঠকে চিন বেঁকে বসে। মনে করা হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যেই দুই দেশের সম্পর্কে কোনও প্রতিকূলতা তৈরি হয়ে থাকতে পারে।
১০১৮
জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নাগরিক কাঠামোর উন্নয়নকে সিপিইসি-র আওতাভুক্ত করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। চিন তাতে রাজি হয়নি। জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নতুন একটি যৌথ গোষ্ঠী স্থাপনের প্রস্তাবও তারা নাকচ করে দিয়েছে।
১১১৮
বেশ কিছু ক্ষেত্রে চিনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগোতে চেয়েছিল পাকিস্তান। ধাতব খনিজগুলির যৌথ অনুসন্ধান, উন্নয়ন এবং বিপণনের প্রস্তাব চিন খারিজ করে দিয়েছে।
১২১৮
কেন হঠাৎ পাকিস্তানের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চিন? কয়েকটি সূত্রের দাবি, নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তানের উপর চটেছেন জিনপিং। তবে এর নেপথ্যে অন্য কিছু কারণও থাকতে পারে।
১৩১৮
করাচিতে সিপিইসি সংক্রান্ত কাজে চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতা জিনপিংকে রুষ্ট করেছে বলে খবর। তা ছাড়া, আফগানিস্তানের সঙ্গে চিনের ঘনিষ্ঠতাও পাকিস্তানকে অবহেলার কারণ হতে পারে।
১৪১৮
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সঙ্কটের দিনে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল চিন। বিশ্ব অর্থভান্ডারের সাহায্য না পেয়ে পাকিস্তান যখন চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি, তখন চিনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
১৫১৮
সিপিইসি-তে বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়িয়েছে চিন। প্রথমে এই প্রকল্পের অর্থমূল্য ছিল ৪,৬০০ কোটি ডলার। পরে তা বৃদ্ধি করে ৬,২০০ কোটি ডলার করা হয়েছে।
১৬১৮
২০১৩ সালে চিন এবং পাকিস্তানের বাণিজ্যিক বন্ধন হিসাবে সিপিইসি ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে জিনপিং পাকিস্তানে গিয়ে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। পরে আফগানিস্তানেও এই প্রকল্পের সম্প্রসারণ করে চিন।
১৭১৮
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিনের ভূমিকা। চিনের সহায়তাতেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছে ইসলামাবাদ। এই পরিস্থিতিতে চিন হাত গুটিয়ে নিলে ফাঁপরে পড়তে হবে পাকিস্তানকে।
১৮১৮
সেই কারণে আপাতত চিনের মন জুগিয়ে চলার নীতিই নিয়েছে ইসলামাবাদ। চিনের দাবি অনুযায়ী তারা কাজ করছে। পাকিস্তানে চিনের যে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে, তার কথা মাথায় রেখেই চিনও সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন করবে না, মত বিশেষজ্ঞদের।