গত কয়েক বছরে চোখে পড়ার মতো অবনতি হয়েছে জাপানের অর্থনীতিতে। মুদ্রাস্ফীতি কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০২৪ সালে মন্দার মুখোমুখি হতে পারে জাপান।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। আমেরিকার পরেই তার স্থান। তাই বিশ্বের অধিকাংশ দেশের উপরেই চিনা অর্থনীতির ভাল বা মন্দ প্রভাব পড়তে বাধ্য।
০২১৯
চিনের অর্থনীতি এত বিপুল ভাবে প্রসারিত যে, তার জিডিপি এক শতাংশ কমলেও সার্বিক ভাবে এশিয়া মহাদেশের জিডিপি ০.৩ শতাংশ কমে যায়।
০৩১৯
তবে চিনের অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে জাপানের। চিনের পূর্ব সীমান্ত থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্র। দুই দেশের মাঝে আছে কেবল উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, পূর্ব চিন সাগর এবং জাপান সাগর।
০৪১৯
চিনা অর্থনীতির ওঠাপড়ায় জাপান প্রত্যক্ষ ভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে। সম্প্রতি চিনের কারণে বড়সড় সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
০৫১৯
জাপান থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে পণ্য চিনে রফতানি করা হয়। এই রফতানির উপরে জাপানের অর্থনীতির বড় অংশ নির্ভর করে থাকে।
০৬১৯
পরিসংখ্যান বলছে, জাপান থেকে চিনে রফতানি ১০ শতাংশ কমলে জাপান দেশটির জিডিপি ০.৪ শতাংশ পড়ে যায়। তাই অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে চিনের উপর নির্ভরশীল জাপান সরকার।
০৭১৯
২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে জাপান থেকে চিনে রফতানির পরিমাণ ১০ শতাংশই কমেছে। জাপানের অর্থনীতিতে তা বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
০৮১৯
গত কয়েক বছরে চোখে পড়ার মতো অবনতি হয়েছে জাপানের অর্থনীতিতে। মুদ্রাস্ফীতি কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জাপানের বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ক্রমে সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
০৯১৯
ব্যাঙ্ক অফ জাপানের নতুন গভর্নর কাজ়ুয়ো উয়েদার উপর জাপানের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা ভরসা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর হাতে অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার পরিবর্তে আরও দমে গিয়েছে।
১০১৯
পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির বাজার নতুন করে শঙ্কিত। এই যুদ্ধের ফলে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। জাপানের অর্থনীতিও নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুদ্ধের কারণে।
১১১৯
গত কয়েক বছরে ডলারের সাপেক্ষে জাপানের মুদ্রা ইয়েনের মূল্য অনেক কমে গিয়েছে। শুধুমাত্র চলতি বছরেই ইয়েনের মূল্য কমেছে ১৪ শতাংশ। এর ফলে আমদানির খরচও বেড়েছে।
১২১৯
২০২০ সালে কোভিড অতিমারি, পরে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ অন্যান্য দেশের মতো জাপানের অর্থনীতিতেও বড় ধাক্কা দিয়েছিল। তার পর থেকে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে টোকিয়ো।
১৩১৯
কিন্তু জাপান সরকারের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও অর্থনীতির উন্নতি হয়নি। উল্টে টোকিয়োর আকাশে নেমে এসেছে অন্য চিন্তার মেঘ। পশ্চিম এশিয়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে যুদ্ধ।
১৪১৯
জাপানের অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০২৪ সালের মধ্যেই মন্দা দেখা দিতে পারে জাপানে। তা রোখার জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন।
১৫১৯
একই সঙ্কটে চিনও। কোভিড এবং ইউরোপে যুদ্ধ পরিস্থিতি চিনের অর্থনীতিকেও পিছনে ঠেলে দিয়েছে। নতুন ধরনের অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে বেজিং।
১৬১৯
চিনের সমস্যার নাম মুদ্রাস্ফীতি নয়, মুদ্রাসঙ্কোচন। দেশে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে ক্রমশ কমছে। কারণ, পণ্যের চাহিদা কমে গিয়েছে চিনের বাজারে।
১৭১৯
চাহিদা হ্রাসের কারণেই আমদানির পরিমাণও চিনে কমে গিয়েছে। দেশের জিনিস রফতানি করছে চিন। তবে আমদানির প্রয়োজন আগের চেয়ে কমেছে।
১৮১৯
সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ, চিনারা সঞ্চয়ী হয়ে উঠেছেন। সরকারের প্রতি ভরসা হারিয়ে ফেলায় তাঁদের মধ্যে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই টাকা খরচ করতে চাইছেন না কেউ।
১৯১৯
চিনের আমদানি কমায় জাপান প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দিন দিন জাপানের অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছে চিন। ইয়েনের মান উন্নত করতে জাপান সরকারকে অবিলম্বে অর্থনীতির হাল ধরতে হবে। তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।