China attempts to gain control over Pakistan Media dgtl
China on Pakistani Media
পাক সংবাদমাধ্যম দখল করছে চিন? কোন খবর প্রকাশ পাবে, কোনটা বাদ, সব ঠিক করে দেবেন জিনপিং?
আমেরিকার সরকারি রিপোর্টে ফাঁস করা হয়েছে চিনের গোপন উদ্দেশ্য। আন্তর্জাতিক ক্রিয়াকলাপের একটি ওয়েব তৈরি করেছে চিন। যার মাধ্যমে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের উপর বেজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় হবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের উপর ছড়ি ঘোরাতে চাইছে চিন। শুধু পাকিস্তান নয়, অনুগামী সব দেশের সংবাদমাধ্যমেই প্রভাব বিস্তার করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে শি জিনপিংয়ের দেশ।
০২১৮
আমেরিকার সরকারি রিপোর্টে চিনের এই ‘মতলবের’ বিষয়ে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিয়াকলাপের একটি ওয়েব তৈরি করেছে চিন। এর মাধ্যমেই অন্য দেশের সংবাদমাধ্যমের উপর বেজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
০৩১৮
তথ্যপ্রযুক্তি এবং মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে চিন। অন্য ঘনিষ্ঠ দেশগুলিকেও কাজে লাগাতে চাইছে তারা। চিনের বিরুদ্ধে যে মত প্রচার করা হয়, তাতে রাশ টানাই জিনপিংয়ের লক্ষ্য।
০৪১৮
যে যে দেশের হাত ধরে এই চিনবিরোধী প্রচারে রাশ টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, তার একটি তালিকা তৈরি করেছে বেজিং। আমেরিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিকায় প্রথম দিকেই আছে পাকিস্তানের নাম। পাকিস্তানকে দিয়েই ‘অভিযান’ শুরু করতে চলেছে চিন।
০৫১৮
আমেরিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিনবিরোধী যে কোনও প্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে চিন। সেই লড়াইয়ে পাকিস্তানকে পাশে চাইছে তারা। এই পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ‘বন্ধুত্ব’ আরও গাঢ় করার চেষ্টা চলছে।
০৬১৮
চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি)-এর মাধ্যমে এমনিতেই পাকিস্তানের উপর প্রভাব বিস্তার করে বেজিং। এই সিপিইসি-র একটি বিভাগের নাম সিপিইসি মিডিয়া ফোরাম। তার মাধ্যমেই না কি পাক সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে চিন।
০৭১৮
চিন-পাকিস্তান মিডিয়া করিডরের অধীনে পাক সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল বেজিং। তেমনটাই দাবি আমেরিকার রিপোর্টে। এ ভাবে পাকিস্তানের জনগণের চিন্তাভাবনার স্তরে চিনা নিয়ন্ত্রণকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
০৮১৮
আমেরিকার দাবি, সমস্ত মিত্র দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি নাক গলাতে চায় চিন। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হচ্ছে। পাক জনতা কোন খবর শুনবেন, কী ভাববেন, সেটিও নির্দিষ্ট করে দিতে চাইছেন জিনপিং।
০৯১৮
পাকিস্তানকে দিয়ে শুরু করে ক্রমে অন্য মিত্র দেশের উপরেও চিন একই ‘ফর্মুলা’ প্রয়োগ করতে চাইবে। আমেরিকার পর্যবেক্ষকেরা সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
১০১৮
কী ভাবে সংবাদমাধ্যমের কার্যকলাপে নাক গলাতে চাইছে চিন? মূলত তিনটি প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে আমেরিকার সরকারি রিপোর্টে।
১১১৮
প্রথমত, চিনের বিচারে যে খবর গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলি উর্দুতে অনুবাদ করে প্রকাশ করা। এতে বৃহত্তর জনমানসকে প্রভাবিত করা যাবে। চিনের পছন্দ করা খবর সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে।
১২১৮
দ্বিতীয়ত, চিনের দূতাবাস থেকে বিভিন্ন প্রতিবেদন, রিপোর্ট সরাসরি পাকিস্তানের সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে চিনের বক্তব্য সরকারি ভাবে পাকিস্তান প্রকাশ করতে পারবে। তার গুরুত্বও বাড়বে।
১৩১৮
তৃতীয়ত, চিনকে নিয়ে পাকিস্তানে যে বিরূপ মনোভাব, আলোচনা রয়েছে সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রয়োজনে তার জবাব দিয়ে জনগণের ‘ভুল’ ভেঙে দেওয়ার কাজটিও করবে চিন।
১৪১৮
আমেরিকার অভিযোগ, বিদেশে প্রচারিত তথ্য বিকৃত করার জন্য প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে চিন। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি সম্পর্কে ইতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে দিতে মিথ্যা এবং একতরফা প্রচার চলে মিত্র দেশগুলিতে।
১৫১৮
কিন্তু একইসঙ্গে আবার তাইওয়ান প্রসঙ্গ, দক্ষিণ চিন সাগর, চিনা অর্থনীতি, চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যাবতীয় বিতর্কিত সংবাদ তারা বাইরে প্রচার করতে দেয় না। বরং ওই নেতিবাচক খবর চেপে দেওয়া হয় সুকৌশলে।
১৬১৮
পাকিস্তান এবং চিনের সম্পর্কের বন্ধন কারও অজানা নয়। ভারতবিরোধী এই দুই পড়শি দেশই একে অপরের ঘনিষ্ঠ। পাকিস্তানকে নানা সময়ে নানা সাহায্য করেছে বেজিং।
১৭১৮
পাকিস্তানের অর্থনীতির অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। ঋণের দায়ে ডুবতে বসা দেশটিকে অর্থসাহায্য করেছে চিন। সিপিইসির মাধ্যমেও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছে তারা।
১৮১৮
পাকিস্তানের উপর চিনের প্রভাব আগে থেকেই অনেক দৃঢ়। এ বার পাক সংবাদমাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে সে দেশের জনমত গঠনে হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন জিনপিং। বিশেষজ্ঞদের অনেকে চিনের এই প্রবণতাকে ভাল চোখে দেখছেন না।