Chandrakant Sompura, who designed ram temple in ayodhya dgtl
Architect of Ram Mandir in Ayodhya
বাবা রূপ দিয়েছিলেন সোমনাথ মন্দিরের, ছেলের নকশায় হচ্ছে রামমন্দির, স্বপ্নপূরণ চন্দ্রকান্তের
এখন যেখানে মন্দির তৈরি হচ্ছে, বহু বছর আগে অশোকের সঙ্গে সেই জায়গা দেখতে গিয়েছিলেন চন্দ্রকান্ত। কিন্তু তাঁকে তখন সেখানে জমি মাপার ফিতে নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:২৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
চন্দ্রকান্ত সোমপুরা। ভারতের বিখ্যাত এই স্থপতির নকশা ধরেই চলছে অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণের কাজ। নকশা তৈরির ৩৪ বছর পর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে তাঁর।
০২২০
১৯৮৯ সালে অর্থাৎ, ৩৪ বছর আগে রামমন্দিরের নকশা তৈরি করেছিলেন চন্দ্রকান্ত। মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়নি। ফলত, চন্দ্রকান্তের তৈরি সেই নকশাও কাজে লাগেনি। তবে প্রায় তিন দশকের অপেক্ষা শেষে সেই নকশা ধরেই এগোচ্ছে রামমন্দিরের নির্মাণ কাজ।
০৩২০
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৎকালীন প্রধান অশোক সিংহল প্রথম চন্দ্রকান্তকে অযোধ্যায় নিয়ে যান। রামমন্দিরের নকশা তৈরির দায়িত্বও তাঁর কাঁধে তুলে দেওয়া হয়।
০৪২০
অশোকের নির্দেশ মতো ১৯৮৯ সালে রামমন্দিরের নকশা তৈরি করে ফেলেন চন্দ্রকান্ত। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে সেই নকশায় সিলমোহর দেন এলাহাবাদের কুম্ভমেলার কয়েক জন সাধু।
০৫২০
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন যেখানে মন্দির তৈরি হচ্ছে, বহু বছর আগে অশোকের সঙ্গে সেই জায়গা দেখতে গিয়েছিলেন চন্দ্রকান্ত। কিন্তু তাঁকে তখন সেখানে জমি মাপার ফিতে নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
০৬২০
টেপ না থাকায়, পা দিয়ে মেপে পুরো জমির আনুমানিক জরিপ করেন চন্দ্রকান্ত। সেই ধারণার উপর ভিত্তি করেই তৈরি করেন নকশা। তবে একটা নয়, মন্দিরের একাধিক নকশা তৈরি করেছিলেন চন্দ্রকান্ত।
০৭২০
নকশা তৈরির পর সেগুলি নিয়ে অশোক-সহ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাকি নেতৃত্বের কাছে যান চন্দ্রকান্ত। এর পর একটি কাঠের মডেল বানিয়ে সেই কাঠামো কুম্ভমেলায় আগত সাধুদের দেখানো হয়। সাধুরা ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়ার পরেই মান্যতা পায় তাঁর নকশা।
০৮২০
এর পর দীর্ঘ ত্রিশ বছরের অপেক্ষা। অবশেষে বর্তমানে শেষের মুখে অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণে প্রথম পর্যায়ের কাজ। তৈরি হচ্ছে চন্দ্রকান্তের নকশার আদলেই। তবে সেই নকশা আরও উন্নত করা হয়েছে।
০৯২০
চন্দ্রকান্ত সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মন্দিরের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। যা পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ হবে।’’
১০২০
চন্দ্রকান্তের নকশার উপর ভিত্তি করেই, নির্মাণশিল্পীরা দিনরাত পাথর খোদাই করে মন্দিরনির্মাণের কাজ চালাচ্ছেন।
১১২০
২০১৯ সালের নভেম্বরে চন্দ্রকান্ত জানিয়েছিলেন যে, প্রায় ৪০ শতাংশ পাথরের খোদাই শেষ হয়েছে। তিনি এ-ও দাবি করেছিলেন যে, এক বার মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি হয়ে গেলে ২৪ থেকে ৩০ মাসের মধ্যেই মন্দিরটি তৈরি হয়ে যাবে।
১২২০
চন্দ্রকান্তের বাবাও ছিলেন স্থপতি। গুজরাতে এখন যে সোমনাথ মন্দির দেখতে পাওয়া যায়, তার নকশা তৈরি করেন চন্দ্রকান্তের বাবা প্রভাকর সোমপুরা। এ ছাড়াও বহু মন্দিরের নকশা তৈরি করেন প্রভাকর।
১৩২০
চন্দ্রকান্ত তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। পুত্র আশিসের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত ১৩১টি মন্দিরের নকশা তৈরি করেছেন চন্দ্রকান্ত। যার মধ্যে রয়েছে গান্ধীনগরের স্বামী নারায়ণ মন্দির, পালানপুরের অম্বাজি মন্দির-সহ আরও অনেক মন্দির।
১৪২০
চন্দ্রকান্ত জানিয়েছেন, রামমন্দিরের নকশা তৈরি করা তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জন্য গর্বের বিষয়। অযোধ্যার রামমন্দির নাগারা বা উত্তর ভারতীয় মন্দিরশৈলীর আদলে তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
১৫২০
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার চার বছর পর, চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে সেই মন্দিরের প্রথম দফার নির্মাণকাজ। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী বছরের ২২ জানুয়ারিতেই অযোধ্যায় ‘রামলালা বিরাজমান’-এর মূর্তি প্রতিষ্ঠা হতে চলেছে। তা নজরে রেখেই তুঙ্গে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
১৬২০
ট্রাস্ট সূত্রে খবর, গোলাপি বেলেপাথর এবং রাজস্থানের মির্জাপুর ও বংসী-পাহাড়পুর থেকে আনা মার্বেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মন্দিরটি।
১৭২০
এ ছাড়াও মন্দিরে প্রায় ১৭ হাজার গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়েছে বলে ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে। ট্রাস্ট সূত্রে খবর, প্রতিটি পাথরের ওজন দু’টন (১৮০০ কিলোরও বেশি)। সেই গ্রানাইট আনা হয়েছে কর্নাটক থেকে।
১৮২০
অনুষ্ঠানের আগে, মন্দিরের অছি পর্ষদ প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতিতে গর্ভগৃহে স্থাপনের জন্য ‘রামলালা’র তিনটি মূর্তির মধ্যে একটি বেছে নেবে। তিনটি মূর্তিই ৫১ ইঞ্চি লম্বা হবে। মূর্তির হাতে থাকবে তির-ধনুক।
১৯২০
গর্ভগৃহেই ‘রামলালা’র মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে। পুজোও হবে মূর্তি প্রতিষ্ঠার দিনে। ট্রাস্ট সূত্রে খবর, সেই পুজোয় যজমানের ভূমিকায় থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার পরেই হবে বিগ্রহে চক্ষুদান।
২০২০
শুধু যজমানের ভূমিকাই নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজি থাকলে তিনিই পায়ে হেঁটে আধ কিলোমিটার দূরে একটি অস্থায়ী মন্দির থেকে ‘রামলালা’র মূর্তিকে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে আসবেন। ২৭ জানুয়ারি সকাল থেকে জনসাধারণের দর্শনের জন্য মন্দিরের গর্ভগৃহ খুলে দেওয়া হবে বলে ট্রাস্ট সূত্রে খবর।