যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রির বিপণিগুলিতে মজুত গাড়ির পরিমাণ বিগত বছরের সব পরিসংখ্যানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
উৎসবের মরসুমেও গাড়ির চাহিদা তলানিতে। সারা বছর ব্যবসা যতই খারাপ যাক, উৎসবের মরসুমে বরাবর বিক্রি বাড়তে দেখেছে গাড়িশিল্প। সেই আশায় জল ঢেলে দিয়ে গাড়ির বিক্রির সংখ্যা এই বছরে সর্বনিম্ন।
০২২০
দেশের শীর্ষ গাড়ি ডিলারদের অ্যাসোসিয়েশন, ‘ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (ফাডা), বলেছে যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রির বিপণিগুলিতে মজুত গাড়ির পরিমাণ বিগত বছরের সব পরিসংখ্যানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।
০৩২০
ফাডা বলেছে, মোট ৭.৯ লক্ষ গাড়ি শোরুমেই পড়ে রয়েছে বিগত ৮০-৮৫ দিন ধরে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।
০৪২০
খুচরো গাড়ি বিক্রির পরিমাণ সেপ্টেম্বরে প্রায় ২০ শতাংশ কমে গিয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮১ টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে বলে ফাডা জানিয়েছে।
০৫২০
গাড়ি সংস্থাগুলি উৎপাদন এবং সরবরাহ ক্রমাগত বাড়াচ্ছে। তার ফলে বিপণিগুলির (শোরুম) গুদামেও জমে চলেছে অবিক্রিত গাড়ি। সে কারণে আর্থিক দিক থেকেও কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ডিলারদের মধ্যে।
০৬২০
কারণ, মজুত গাড়ির বয়স ৩০ দিনের বেশি হয়ে যাওয়া ডিলারদের কাছে উদ্বেগের। সেই সময়সীমা বাড়তে বাড়তে ৭০-৭৫ দিন পেরিয়ে ৮০-৮৫ দিনে পৌঁছে গিয়েছে।
০৭২০
ফাডার উদ্বেগের কারণ হল, ডিলারেরা ব্যাঙ্ক থেকে যে ঋণ নেন তা ৬০ দিনের মধ্যে সুদ-সহ ফেরত দেন।
০৮২০
গত বছর একটা সময়ে ৬৫ দিনের মজুত তৈরি হয়েছিল। এ বছরের অগস্টে সেই সময়সীমা এসে দাঁড়ায় ৭০-৭৫ দিনে। এর ফলে মজুতের পরিমাণ ও বিক্রির মধ্যে ব্যবধানও বাড়ছে।
০৯২০
জুলাই ও অগস্ট মাসেও গাড়িনির্মাতারা ডিলারদের মাসিক চাহিদার ভিত্তিতে গাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার ফলে মজুত আরও বেড়েছে।
১০২০
অক্টোবরের পরিসংখ্যান বলছে, পাইকারি গাড়ির হিসাব অনুযায়ী ভারতীয় গাড়ি নির্মাতারা সেপ্টেম্বরে ডিলারদের কাছে ৩ লাখ ৫০ হাজার লাখ গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।
১১২০
যার ফলে শুধুমাত্র এক মাসে পাইকারি এবং খুচরো বিক্রির মধ্যে ৮০ হাজারের বেশি ব্যবধান তৈরি হয়েছে।
১২২০
ফাডা বলছে, উৎসবের মরসুমের আগে মজুতের পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষ চিন্তিত হতেন না ডিলারেরা। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে গা়ড়ি কেনার চাহিদায় ভাটা পড়েছে। গণেশ চতুর্থী এবং ওনামের মতো উৎসবেও গাড়ি চাহিদায় ভাটা পড়তে দেখা গিয়েছে বলে ফাডা জানিয়েছে।
১৩২০
এই প্রবণতা গত জুলাই এবং অগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে। যে পরিমাণ গাড়ি মজুত করতে হয়েছে ডিলারদের, তার ফলে চাহিদা ও মজুতের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে।
১৪২০
গাড়ির মূল সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক ও গাড়িনির্মাতা সংস্থা নিজেদের বাজার স্থির রাখার জন্য ডিলারদের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে, এমন অভিযোগও তুলেছে ফাডা।
১৫২০
সম্প্রতি ফাডার প্রেসিডেন্ট মণীশ সিঙ্ঘানিয়া জানিয়েছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ তাঁদের কাছে ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। গাড়িবাজারের ঝিমুনির মধ্যে দেশে ২৮০টি বিপণির ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকেই তাঁরা মজুত নিয়ে সতর্ক।
১৬২০
টাটা মোটরস, মারুতি, টয়োটা, মাহিন্দ্রা প্রভৃতি শীর্ষ গাড়িনির্মাতাদের যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি বছরে মোট ১০ শতাংশ কমেছে।
১৭২০
অগস্টে পাওয়া তথ্য অনুসারে ভারতের বৃহত্তম যাত্রিবাহী গাড়ি প্রস্তুতকারক হিসাবে মারুতি সুজ়ুকির পাইকারি বিক্রি ৯.৬৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। যদিও এর ছোট গাড়ির বিক্রি স্থিতিশীল ছিল। মাঝারি আকারের সেডান গাড়ির বিক্রি বড় পতনের সম্মুখীন হয়েছে।
১৮২০
ডিলারেরা যাতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন না হন, তার জন্য অতিরিক্ত মজুত করা বন্ধ করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ফাডা।
১৯২০
এই মুহূর্তে বাজারে ‘স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকলের’ (এসইউভি) চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে মাঝারি আকারের এসইউভির। অল্প সময়ের মধ্যে ভারতে এই গাড়ির চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে।
২০২০
ছোট গাড়ির বাজারের ক্ষেত্রে মারুতি ছাড়াও ভারতীয় ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে টাটা। তবে খুচরো বিক্রিতে মন্দা আসায় গাড়ির মজুতের পরিমাণ এ বছর সমস্ত পরিসংখ্যান ছাড়িয়ে গিয়েছে।