Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Johnny Lever

রাস্তায় হকারি করতেন, পুত্রের ক্যানসারে বিপর্যস্ত জনিকে বলিউডে ফিরতে দেননি সহ-অভিনেতারা

‘বাজিগর’ ছবিতে অভিনয়ের পর জনির কেরিয়ারের রেখচিত্র ক্রমাগত উপরের দিকে উঠতে থাকে। নব্বইয়ের দশকের কৌতুকাভিনেতা হিসাবে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ ০৯:০১
Share: Save:
০১ ২০
Johnny Lever

নব্বইয়ের দশকে বলিউডে যে ছবিই হোক না কেন, প্রায় সব ছবিতেই কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জিতে নিতেন জনপ্রকাশ রাও জানুমালা ওরফে জনি লিভার। ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান’ হিসাবে দেশে তিনিই প্রথম জনপ্রিয় হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারের সূর্য যেন হঠাৎ অস্ত চলে গেল। বলিপাড়ার নামী কৌতুকাভিনেতা হয়েও এখন কাজের অভাব তাঁর।

০২ ২০
Johnny Lever

১৯৫৭ সালের ১৪ অগস্ট তেলুগু খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম জনির। মুম্বইয়েই বড় হয়ে ওঠা তাঁর। জনির বাবা একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। নামমাত্র পারিশ্রমিক পেতেন জনির বাবা। সেই টাকায় কোনও মতে সংসার চলত তাঁদের।

০৩ ২০
Johnny Lever

জনির স্কুলের খরচও মেটাতে পারতেন না তাঁর বাবা। তার উপর আবার মদের নেশা ছিল তাঁর। বেতনের বেশির ভাগ টাকা মদ কেনার জন্য খরচ করতেন তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন জনি।

০৪ ২০
Johnny Lever

স্কুলে থাকাকালীন বন্ধুবান্ধব এবং শিক্ষকদের কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করতে পারতেন জনি। ১৪ বছর বয়স থেকেই রোজগার করে সংসার চালানোর মানসিকতা তৈরি হয়ে যায় তাঁর। জনি যে বাড়িতে থাকতেন, তার কাছে সিন্ধি ক্যাম্প ছিল। যাতায়াতের পথে এক জনের সঙ্গে আলাপ হয়ে যায় জনির। জনিকে কাজের প্রস্তাব দেন তিনি।

০৫ ২০
Johnny Lever

রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে প্যান্ট বিক্রি করে প্রথম রোজগার শুরু করেছিলেন জনি। দিনের শেষে ২০ থেকে ২৫ টাকা উপার্জন করতেন। এক দিন বাড়ি ফেরার পথে একটি হলে প্রবেশ করেন জনি। দীনেশ হিঙ্গু নামের এক নামী কৌতুকাভিনেতা তখন তারকাদের গলা নকল করে মঞ্চ মাতিয়ে রেখেছিলেন।

০৬ ২০
Johnny Lever

দীনেশকে পারফর্ম করতে দেখে জনি তাঁর জীবনে নতুন দিশা পান। আগের মতোই রাস্তায় প্যান্ট বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু এ বার বলিপাড়ার তারকাদের গলা নকল করে প্যান্ট বিক্রি করতে দেখা যায় তাঁকে। এর ফলে রোজগারও বৃদ্ধি পায় জনির। দিনের শেষে ২৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করতেন তিনি।

০৭ ২০
Johnny Lever

জনির বাবা যে কারখানায় চাকরি করতেন ১৮ বছর বয়সে সেখানেই কাজ করা শুরু করেন জনি। তাঁর বাবা জনির ‘মিমিক্রি’ করার স্বভাব একদম পছন্দ করতেন না। তবুও বাবাকে লুকিয়ে কারখানার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলি তারকাদের গলা নকল করে লোকজনকে হাসাতেন জনি।

০৮ ২০
Johnny Lever

জনির পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে কারখানার এক উচ্চ আধিকারিক নির্দেশ দেন যে, জনি রাওয়ের বদলে জনি লিভার নামেই তিনি পরিচিত হবেন। সেই থেকে জনি লিভার নামে নিয়েই মুম্বইয়ের বিভিন্ন প্রান্তে ‘মিমিক্রি’ অনুষ্ঠান করে বেড়াতেন জনি।

০৯ ২০
Johnny Lever

অনুষ্ঠান করার সূত্রে বলিপাড়ার সুরকার কল্যাণজি-আনন্দজির সঙ্গে আলাপ হয় জনির। তাঁদের হাত ধরেই জনির প্রথম অডিয়ো ক্যাসেট বাজারে মুক্তি পায়। দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানও করতে শুরু করেন জনি। অমিতাভ বচ্চন এবং অনিল কপূরের মতো তারকাদের সঙ্গে পরিচিতি গড়ে ওঠে জনির।

১০ ২০
Johnny Lever

১৯৮০ সালের ঘটনা। কল্যাণজি-আনন্দজির দফতরে ক্যারম খেলছিলেন জনি। হঠাৎ তাঁদের দফতরে দক্ষিণী পরিচালক কে বিজয়ন দেখা করতে আসেন। ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’ ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

১১ ২০
Johnny Lever

নিজের ছবির জন্য কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে নতুন মুখ খুঁজছিলেন বিজয়ন। কল্যাণজিকে এমনটাই জানালেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে জনির নাম সুপারিশ করেন কল্যাণজি। চেন্নাই গিয়ে ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’ ছবির কাজ শেষ করেন জনি। ১৯৮১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে রাজ বব্বর, রাজেন্দ্র কুমার, বিনোদ মেহরার সঙ্গে অভিনয় করেন জনি।

১২ ২০
Johnny Lever

এর পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি জনিকে। সঞ্জয় দত্ত, গোবিন্দ, শাহরুখ খানের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন জনি। নিজের কেরিয়ারে সাড়ে তিনশোর বেশি ছবিতে কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

১৩ ২০
Johnny Lever

‘বাজিগর’ ছবিতে অভিনয়ের পর জনির কেরিয়ারের রেখচিত্র ক্রমাগত উপরের দিকে উঠতে থাকে। নব্বইয়ের দশকের কৌতুকাভিনেতা হিসাবে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। উপার্জনের দিক দিয়ে বলিপাড়ার নামকরা তারকাদের পাল্লা দিতেন জনি।

১৪ ২০
Johnny Lever

২০০০ সাল থেকে হঠাৎ করে হিন্দি ফিল্মজগৎ থেকে ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকেন জনি। ১৯৮৪ সালে সুজাতা নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা। পুত্রসন্তান জেসি এবং কন্যাসন্তান জেমিকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল জনির।

১৫ ২০
Johnny Lever

জনি জানতে পারেন যে, জেসি কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানান, জেসির শারীরিক অবস্থা এতটাই সঙ্কটজনক যে অস্ত্রোপচারও করা যাবে না। সামান্য ভুল হলে জনির পুত্র সারা জীবনের মতো পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। পুত্রের অসুস্থতার খবর জানার পর ভেঙে পড়েন জনি।

১৬ ২০
Johnny Lever

জেসিকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েন জনি। অভিনয় ছেড়ে মদের নেশায় ডুবে থাকতেন। বিভিন্ন গির্জায় জেসিকে নিয়ে যেতে শুরু করেন জনি। এক গির্জার পাদ্রি জনির পুত্রকে নিউ ইয়র্কের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পাদ্রির নির্দেশ মেনে সেখানে যান জনি।

১৭ ২০
Johnny Lever

২০০২ সালে নিউ ইয়র্কের হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করানো হয় জেসির। রাতারাতি সুস্থ হয়ে ওঠেন জনির পুত্র। এই ঘটনার পর ধর্মে আসক্তি বেড়ে যায় জনির। সারা দিন বাইবেল পাঠ করে সময় কাটাতেন তিনি। কয়েক বছর এ ভাবে থাকার পর আবার অভিনয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করেন জনি।

১৮ ২০
Johnny Lever

দ্বিতীয় বার অভিনয়ে ফেরার পর আবার নিজের পরিচিতি তৈরি করেন জনি। একের পর এক ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু সেই সময় বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

১৯ ২০
Johnny Lever

বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, জনির নামডাক হতে থাকায় বলিউডের কয়েক জন অভিনেতা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন। জনির অভিনীত দৃশ্য কেটে দেওয়া হত। এমনকি জনির মুখে যে মজাদার সংলাপ দেওয়া হত সেগুলিও তাঁর সহ-অভিনেতারা কেড়ে নিতেন।

২০ ২০
Johnny Lever

ধীরে ধীরে ছবিতে কাজ পাওয়া বন্ধ হয়ে যায় জনির। বর্তমানে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে মুম্বইয়ে থাকেন তিনি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান করে উপার্জন করেন জনি।

সকল ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy