Bidisha De Majumdar's hanging body found in Netaji Nagar flat, many questions remain unanswered after the incident dgtl
Pallavi Dey
Bidisha Death: অবসাদেই কি ‘আত্মঘাতী’? বান্ধবী পল্লবীর পরই বিদিশার অকালমৃত্যু ঘিরে উঠছে বহু প্রশ্ন
সাদামাটা জীবন থেকে মডেলিং দুনিয়ার ঝাঁ-চকচকে জগৎ। আপাত ভাবে মনে হয়, দুই পরিবেশেই বেশ খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন বিদিশা। সত্যিই কি তাই?
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৯:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বছর চারেক আগে গ্ল্যামার জগতে পা রেখেছিলেন। বেশ জমিয়েও নিয়েছিলেন নিজের পরিসর। আচমকাই ছন্দপতন! বুধবার বিকেলে বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে নাগেরবাজারের রামগড় কলোনির ফ্ল্যাট থেকে।
০২২০
নৈহাটি থেকে কলকাতা। উত্তর ২৪ পরগনার সাদামাটা জীবন থেকে মডেলিং দুনিয়ার ঝাঁ-চকচকে জগৎ। আপাত ভাবে মনে হয়, দুই পরিবেশেই বেশ খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন বিদিশা। সত্যিই কি তাই? নৈহাটির ২১ বছরের মেয়েটির অকালপ্রয়াণে উঠছে প্রশ্ন।
০৩২০
মডেলিং জগতের মানুষজনের কাছে বিদিশার পেশাদার চেহারাই ফুটে উঠেছে। তবে আঁকায় পটু, মিশুকে, হাসিখুশি স্বভাবের বিদিশার মনের কোণে কি অন্ধকার জমা হয়েছিল? অবসাদেই কি ‘আত্মঘাতী’ হলেন তিনি? তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর এমন বহু প্রশ্ন তুলছেন ঘনিষ্ঠরা।
০৪২০
নৈহাটিতে মা-বাবা এবং কিশোরী বোনের সঙ্গে থাকতেন বিদিশা। তাঁর পরিচিতরা জানিয়েছেন, ওয়াল পেন্টিংয়ে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন এই মডেল। বহু বন্ধুর বাড়িতে সে দক্ষতার ছাপও রেখেছিলেন তিনি। তবে পেশা হিসাবে চিত্রশিল্পের বদলে বিদিশা বেছে নিয়েছিলেন মডেলিংকে।
০৫২০
বিদিশার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মডেলিং থেকে রোজগার শুরু করেন তিনি। তার আগের বছরে এই নেটমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলেন।
০৬২০
ফেসবুকে বিদিশা জানিয়েছিলেন, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন তিনি। মডেলিংয়ের ফাঁকে সম্প্রতি অনলাইনে স্নাতকস্তরের পড়াশোনাও শেষ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
০৭২০
বছর চারেক ধরে মডেলিং থেকে ভালই নাকি আয় করতেন বিদিশা। হাতে কাজের অভাবও ছিল না। তবে কেন চলে গেলেন তিনি? পেশাদার জগতে বা ব্যক্তিগত জীবনে— কোথাও কি কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছিল? এ সবই অবশ্য তদন্তাধীন বিষয়।
০৮২০
সম্প্রতি নৈহাটি ছেড়ে রামগড় কলোনির ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেছিলেন বিদিশা। নৈহাটিতে থেকে গিয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী বিশ্বনাথ দে মজুমদার। বিদিশার বাবা। মা পম্পা মজুমদার সংসার সামলাতে ব্যস্ত থাকেন। তাঁদের সঙ্গেই নৈহাটিতে থেকে পড়াশোনা করে ১৩-১৪ বছরের ছোট বোন।
০৯২০
নৈহাটির সেই মধ্যবিত্ত জগৎ ছে়ড়ে গ্ল্যামার দুনিয়ার পা রেখেছিলেন বিদিশা। ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, আর্থিক ভাবে সচ্ছল মেয়েটি সম্প্রতি অবসাদে ভুগছিলেন। যদিও তা নিয়ে তিনি চিকিৎসকের সাহায্য নিয়েছিলেন কি না অথবা আদৌ এই দাবি যথার্থ কি না, তা জানা নেই।
১০২০
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার রামগড় কলোনির দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া বিদিশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও।
১১২০
বিদিশার এই চরম পরিণতির পিছনে কে বা কারা অথবা কোন পরিস্থিতি দায়ী, তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। আপাতত তাঁর এই পরিণতি জন্ম দিয়েছে অজস্র প্রশ্নের।
১২২০
তিন দিন আগেও একটি গয়নার বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে বিদিশাকে। বুধবারের ওই ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা আগে বদলেছিলেন নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিও। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোন পরিস্থিতির জেরে এই চরম পরিণতি হল?
১৩২০
বস্তুত, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো নেটমাধ্যমে দিনে অসংখ্য বার যাতায়াত ছিল বিদিশার। দিনেরাতে তাতে নানা পোস্ট করতেন। ফেসবুকে কোনও কোনও দিন একটার বেশি পোস্টও দেখা গিয়েছে।
১৪২০
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের জন্য সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে বিদিশার দেহ পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরই এই মৃত্যু নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করতে পারবেন তদন্তকারীরা।
১৫২০
পেশাদার জীবনে সফল বিদিশা কি তবে ব্যক্তিজীবনে হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলেন? গ্ল্যামার জগতে তাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলেন পল্লবী দে। ১৫ মে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ফেসবুকে বিদিশা লিখেছিলেন, ‘মানে কী এ সব, মেনে নিতে পারলাম না পল্লবী দে’।
১৬২০
১৫ মে বিকেলে পল্লবীর উদ্দেশে ওই মন্তব্যের পর সে দিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বিদিশা লিখেছিলেন, ‘আমি নত হই, তাই আমি ভেঙে পড়ি না।’
১৭২০
এ হেন ‘ঋজু অথচ দৃঢচেতা’ মনের মেয়েটির অকালমৃত্যুতে হতবাক তো হতেই হয়! মডেলিং থেকে অভিনয়ের জগতেও বোধ হয় এগোতেন তিনি।
১৮২০
মডেলিংয়ের ফাঁকে বছর দু’য়েক আগে বিদিশা একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বলে এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
১৯২০
কাকতালীয় ভাবে, ‘ভাঁড়’ নামে সেই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির বিষয়বস্তুও যেন মিলে যায় ১৫ মে সন্ধ্যায় লেখা বিদিশার মন্তব্যের সঙ্গে। লকডাউনে থমকে যাওয়া জীবনেও যে লড়াই ক্রমাগত চলতেই থাকে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছিল ‘ভাঁড়’।
২০২০
তবে পল্লবীর ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’-র দিন দশেকের মধ্যেই বদলে গেল বাস্তব পরিস্থিতি। কী কারণে বিদিশার এ হেন পরিণতি? উত্তর আপাতত অজানা!