Auroras seen after recent solar storm are manmade, says Conspiracy Theorists dgtl
Solar Storm
সৌরঝড়ের পর তৈরি হওয়া মেরুপ্রভা ‘মানবসৃষ্ট’! হার্পের গোপন পরীক্ষায় বোকা বনেছে মানুষ?
নাসা জানিয়েছে, শুক্র এবং শনিবার দু’টি শক্তিশালী সৌরশিখা সূর্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। সৌর ঝড়ের প্রভাবে ইউরোপ, অস্ট্রেলেশিয়া অঞ্চলের বহু দেশে রাতের আকাশে দেখা গিয়েছে রঙবেরঙের মেরুপ্রভা বা মেরুজ্যোতি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ১৪:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
সৌরঝড় আছড়ে পড়েছে মহাকাশে। যার প্রভাব পড়েছে পৃথিবীতেও। আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসা জানিয়েছে, সূর্যে দু’টি বিস্ফোরণ ঘটেছে। যার কারণে সূর্য থেকে শক্তিশালী সৌরশিখা মহাকাশে ছড়িয়েছে। সৌরঝড় ধেয়ে এসেছে পৃথিবীর দিকে।
০২১৯
নাসা জানিয়েছে, শুক্র এবং শনিবার দু’টি শক্তিশালী সৌরশিখা সূর্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। সৌরঝড়ের প্রভাবে ইউরোপ, অস্ট্রেলেশিয়া অঞ্চলের বহু দেশে রাতের আকাশে দেখা গিয়েছে রঙবেরঙের মেরুপ্রভা বা মেরুজ্যোতি। সৌরঝড়ের প্রভাব ভারতের লাদাখেও পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৩১৯
যদিও ‘কনস্পিরেসি থিওরিস্ট’দের একাংশের দাবি, শুক্র এবং শনিবার ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজ়ি ল্যান্ডের অনেক জায়গায় যে মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছে, তা আদৌ সৌরঝড়ের কারণে তৈরি হয়নি। আদতে ওই মেরুজ্যোতি ‘মানবসৃষ্ট’ বলেই তাত্ত্বিকদের দাবি।
০৪১৯
‘কনস্পিরেসি থিওরিস্ট’দের একাংশ দাবি করেছেন, যে মেরুপ্রভা দেখা গিয়েছিল, তা আদতে ‘হাই-ফ্রিকোয়েন্সি অক্টিভ অরোরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম (এইচএএআরপি বা হার্প)’ পরীক্ষার কারণে তৈরি। তবে এই দাবির স্বপক্ষে কোনও পোক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি ওই ‘কনস্পিরেসি থিওরিস্ট’রা।
০৫১৯
‘হার্প’ হল আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা, যা বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ার স্তর নিয়ে গবেষণা করে।
০৬১৯
সমাজমাধ্যম ‘এক্স (সাবেক টুইটার)’ হ্যান্ডলে পুরো বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে অনেকে ব্যবহারকারীই দাবি করেছেন, ৮ মে থেকে ১০ মে আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস বিশ্ববিদ্যালয় ‘হার্প’ সংক্রান্ত পরীক্ষা চালিয়েছিল।
০৭১৯
‘কনস্পিরেসি থিওরিস্ট’দের অনেকে মনে করছেন, শুক্রবার এবং শনিবার আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া-ইউরোপ জুড়ে দেখতে পাওয়া মেরুজ্যোতি আসলে ওই পরীক্ষার ফসল।
০৮১৯
সৌরঝড়ের কারণে আকাশে ওই আলো দেখতে পাওয়া গিয়েছে, সে কথাও মানতে নারাজ তাঁরা।
০৯১৯
‘কনস্পিরেসি থিওরিস্ট’দের মতে, মেরুজ্যোতির আলোগুলি কৃত্রিম। এক জন ‘এক্স’ হ্যান্ডল ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘৮ মে থেকে ১০ মে আলাস্কায় হার্প এমন কিছু পরীক্ষা করেছিল যার কারণে আকাশে আলো দেখা গিয়েছে।’’
১০১৯
তাঁদের দাবি, হার্প পরীক্ষার কারণে সৃষ্ট আলোর মাধ্যমে পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে।
১১১৯
কিন্তু আদৌ কি কৃত্রিম মেরুজ্যোতি তৈরি করা যেতে পারে? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা? গত বছর, আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকার অন্যান্য বেশ কয়েকটি বিজ্ঞানী সংস্থার গবেষকরা ‘হার্প’ ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ারে রেডিয়ো তরঙ্গ পাঠিয়ে কৃত্রিম মেরুজ্যোতি তৈরি করেছিলেন।
১২১৯
তবে একই সঙ্গে ইউরোপ থেকে সূদুর উত্তর আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় কৃত্রিম ভাবে মেরুজ্যোতি তৈরি করা সম্ভব নয় বলেও বিজ্ঞানীদের একাংশ জানিয়েছেন।
১৩১৯
নাসা জানিয়েছে, শুক্রবার এবং শনিবার সৌরঝড় ধেয়ে এসেছিল পৃথিবীর দিকে। যার ফলে কয়েকটি দেশে কিছু সময়ের জন্য টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় সাম্প্রতিক সেই সৌরঝড়ের প্রভাব পড়ে বলে জানা গিয়েছে।
১৪১৯
নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরঝড়ে সূর্যের কেন্দ্র থেকে প্লাজ়মা এবং চৌম্বকীয় তরঙ্গের বিরাট বিস্ফোরণ হয়। এর ফলে কোটি কোটি সৌরপদার্থ চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যেতে পারে। সৌরজগতে তার প্রভাব পড়া অনিবার্য। গত ২০ বছরে এমন সৌরঝড় হয়নি বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
১৫১৯
নাসার বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, সৌরঝড়ের ফলে পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে ফাটল ধরতে পারে। জিপিএস, বেতার যোগাযোগ সাময়িক ভাবে বিচ্ছিন্ন হতে পারে তার প্রভাবে।
১৬১৯
এমনকি, সৌরঝড় প্রভাব ফেলতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ এবং মোবাইলের নেটওয়ার্কের উপরেও। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎবিভ্রাটের ঘটনাও বিরল নয়।
১৭১৯
আর সৌরঝড়ের কারণেই আমেরিকা এবং ইউরোপের বিস্তীর্ণ এলাকায় মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছে বলে অনেক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন।
১৮১৯
ঘটনাচক্রে সৌরঝড়ের পর রাতের আকাশে রহস্যময় লাল আলোর ছটা দেখা গিয়েছে লাদাখেও। শুক্রবার রাতে লাদাখের প্রান্তবর্তী গ্রাম হ্যানলের আকাশ লাল আলোয় ঢেকে যায়। সেই সময় যাঁরা ওই গ্রামে ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ সমাজমাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করেন।
১৯১৯
অনেকে মনে করছেন, সৌরঝড়ের প্রভাবেই লাদাখে লাল আলোর ছটা দেখা গিয়েছে। মেরুপ্রভা সচরাচর উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু ও সংলগ্ন অঞ্চলে লক্ষ করা যায়। ভৌগোলিক অবস্থানের নিরিখেই লাদাখের মতো জায়গায় মেরুপ্রভার দর্শন পাওয়া প্রায় বিরল ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।