Arne bye, gynaecologist facing charges of biggest scandal in the history of Norway dgtl
case of Arne Bye
চিকিৎসার নাম করে ৮৭ জনকে ধর্ষণ! মেলে ছ’হাজার ঘণ্টার ভিডিয়ো, ২০ বছর পর উদ্ঘাটিত অপরাধ
আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
পেশায় নামদাজা চিকিৎসক। অথচ সেই ভদ্র, মার্জিত মুখের আড়ালে লুকোনো ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চেহারা। ২০ বছর ধরে চিকিৎসার অছিলায় একের পর এক নারকীয় ঘটনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে এক স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
০২১৬
আর্নে বাই। নরওয়ের বাসিন্দা ৫৫ বছরের এই সুদর্শন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৮৭ জন মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ভয়াবহ সব অভিযোগ জমা পড়ে আর্নের বিরুদ্ধে। আর্নের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে নড়ে গিয়েছে নরওয়ে প্রশাসন।
০৩১৬
নরওয়ের ফ্রোস্টা নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা এই স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণের দু’টি মামলা-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর মামলা দায়ের হয়েছে।
০৪১৬
এই ঘটনাটিকে নরওয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যৌন কেলেঙ্কারি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ জন তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।
০৫১৬
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, আর্নের শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ছিল এক ১৪ বছরের কিশোরী। তাঁর যৌন লালসার হাত থেকে রেহাই পাননি এক বৃদ্ধাও। ৬৭ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে তাঁর লালসার শিকার হতে হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।
০৬১৬
গ্রেফতারের সময় আর্নের কাছ থেকে ছ’হাজার ঘণ্টার বেশি ভিডিয়ো ফুটেজ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। যার মধ্যে তাঁর স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষার সমস্ত রেকর্ডিং রয়েছে। রোগীদের অজান্তেই তাঁদের চিকিৎসার দৃশ্য রেকর্ড হয়ে যেত ক্যামেরায়।
০৭১৬
রেকর্ডিংগুলি পরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে, এতে এমন ভিডিয়ো তোলা হয়েছে, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। চিকিৎসকের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একাধিক ক্যামেরার হদিস পায়। এগুলি ব্যবহার করেই রোগীদের চিকিৎসার সময় ভিডিয়ো তৈরি করতেন আর্ন।
০৮১৬
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহিলাদের পরীক্ষা করার সময় নানা উদ্ভট পদ্ধতি বেছে নিতেন আর্নে। সম্পূ্র্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে মহিলাদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার জন্য ছোট গোলাকার বোতল এবং নলের মতো বস্তু ব্যবহার করতেন বলে দাবি উঠেছে রোগীদের তরফ থেকে।
০৯১৬
বিগত কয়েক বছর ধরে নিজের গ্রামে বসেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে গিয়েছেন এই চিকিৎসক। একটি-দু’টি করে অভিযোগ জমা পড়তেই বহু মহিলাই এই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরব হন। আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানা অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
১০১৬
আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন এক রোগিণী। তিনি আদালতকে জানান, এমন কিছু যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসাপদ্ধতি আর্নে প্রয়োগ করেছিলেন, যাতে তাঁর মনে হয়েছিল তিনি মারা যেতে পারেন।
১১১৬
অন্য এক জন মহিলা অভিযোগ এনেছেন, গলায় ব্যথার জন্য আর্নের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষানিরীক্ষার পর জ্ঞান ফিরলে ওই মহিলা দেখেন, একটি বেঞ্চে অন্তর্বাস পরে শুয়ে রয়েছেন তিনি। যে হেতু আর্নে তাঁদের গ্রামের চিকিৎসক ছিলেন, তাই তিনি যা যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছিলেন ওই মহিলা।
১২১৬
‘দ্য সান’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় মহিলাদের তলপেটে মাসাজের নাম করে যৌন নিগ্রহ করতেন তিনি। নিজের চেম্বারে বসেই রোগী দেখার নাম করে যৌন লালসা মেটাতেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।
১৩১৬
নরওয়ের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২২ সালের অগস্ট মাসে আর্নের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে নরওয়ের পুলিশ।
১৪১৬
২০২৩ পর্যন্ত আর্নের বিরুদ্ধে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি। তাই আর্নের পেশার উপর কোনও সরকারি বাধা আরোপ করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
১৫১৬
বিচার চলাকালীনও আর্নেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ২১ বছর কারাদণ্ড হতে পারে এই চিকিৎসকের।
১৬১৬
মাত্র ২ হাজার ৬০০ বাসিন্দা থাকেন নরওয়ের ফ্রস্টার নামের এই ছোট্ট শহরটিতে। আর্নে একজন নামজাদা ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি খ্যাতনামী চিকিৎসক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই তা নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে নরওয়ের এই ছোট্ট জনপদের বাসিন্দাদেরও।