All you need to know about KIIT Row, death of Nepali student, Protest In KIIT Campus and more dgtl
KIIT Row
ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু, বিক্ষোভ দমন থেকে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ! কোন দিকে এগোচ্ছে কেআইআইটি-কাণ্ড
পুরো ঘটনা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। কলিঙ্গের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে তৃতীয় বর্ষের নেপালি ছাত্রী প্রকৃতি লামসালের দেহ মেলে। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নেপালি ছাত্রছাত্রীরা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কেআইআইটি)-তে এক নেপালি ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে নানা মহলে।
০২২২
এ বার সেই ঘটনায় পদক্ষেপ করল নেপালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে ওই নেপালি ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্ত করার অনুরোধ করেছে তারা।
০৩২২
পাশাপাশি, বিক্ষোভরত নেপালি পড়ুয়াদের উপর হামলা এবং তাঁদের ক্যাম্পাস থেকে উচ্ছেদ করা নিয়েও তদন্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে। নেপালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যুগ্ম মুখপাত্র শ্যাম বাবু কাফলে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানিয়েছেন।
০৪২২
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারত-নেপাল সম্পর্ক কোন দিকে যায়, এখন সে দিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল।
০৫২২
পুরো ঘটনা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ওড়িশার কলিঙ্গের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে তৃতীয় বর্ষের নেপালি ছাত্রী প্রকৃতি লামসালের দেহ মেলে। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নেপালি ছাত্রছাত্রীরা।
০৬২২
পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অদ্বিক শ্রীবাস্তবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মৃতার। অভিযোগ, অদ্বিক তাঁকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে হেনস্থা করতেন। হেনস্থা সহ্য করতে না পেরেই নাকি আত্মহত্যা করেন প্রকৃতি।
০৭২২
অদ্বিককে আটক করে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
০৮২২
এর পর দেখা যায়, অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রকৃতি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
০৯২২
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন প্রকৃতির বাবাও। তাঁর দাবি, গত বেশ কয়েক মাস ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তাঁর মেয়ে। তাঁকে বার বার ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। নানা ভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল তাঁর উপর। অভিযোগ, একাধিক বার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দরজায় কড়া নাড়লেও সাড়া মেলেনি।
১০২২
প্রকৃতির মৃত্যুর পর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন কেআইআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য নেপালি ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবাদ করার কারণে আচমকাই তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। প্রকৃতির আত্মহত্যার বিষয়টিও ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছিল।
১১২২
তাঁদের দাবি, এই দুইয়ের মধ্যে ‘যোগ’ থাকতে পারে। এই মৃত্যু নিয়ে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভও দেখান। বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
১২২২
বিক্ষোভরত নেপালি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে ‘জাতিবিদ্বেষী’ এবং ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করার অভিযোগও ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে। এই আবহে দেশে ফিরে যান শতাধিক নেপালি ছাত্রছাত্রী!
১৩২২
পড়ুয়াদের জোর করে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপত্তারক্ষী-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরের দিনই তাঁরা জামিন পেয়ে যান।
১৪২২
বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দেশে ফেরার পরেও আতঙ্কের রেশ কাটেনি পড়ুয়াদের। কাঠমান্ডুতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁদের সঙ্গেও ‘অমানবিক’ আচরণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
১৫২২
অনেকের আবার অভিযোগ, শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কর্মীদের সামনেই তাঁদের মারধর করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কর্তৃপক্ষের তরফে অবিলম্বে তাঁদের হস্টেল খালি করে চলে যেতে বলা হয়। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আশ্বাস’ সত্ত্বেও সেখানে ফিরতে নিরাপদ বোধ করছেন না পড়ুয়ারা।
১৬২২
এর পরেই ওড়িশার ওই ঘটনা নিয়ে পদক্ষেপ করে নেপাল সরকার। ওড়িশায় আক্রান্ত নেপালি পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য নয়াদিল্লির নেপাল দূতাবাস থেকে দুই আধিকারিককে ওড়িশা গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখার নির্দেশ দেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি শর্মা।
১৭২২
যাঁরা হস্টেলে থাকতে চান কিংবা যাঁরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চান, তাঁদের সকলকেই সব রকমের সাহায্য করা হচ্ছে। এ জন্য একটি পৃথক সহায়তা ডেস্ক খোলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সে দেশের শিক্ষা মন্ত্রক।
১৮২২
নেপাল থেকে বহু পড়ুয়া উচ্চ শিক্ষার জন্য এ দেশে আসেন। ওড়িশার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অন্তত হাজারখানেক পড়ুয়া রয়েছেন। তাই এই ঘটনায় তৎপর হয়েছে দুই দেশের প্রশাসন।
১৯২২
সে দেশের বিদেশমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা ওড়িশার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন। ওড়িশা সরকারের তরফেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নেপালি পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদ বোধ করেন, সে জন্য সব রকম সাহায্য করা হবে।
২০২২
নেপাল সরকার জানায়, পরিস্থিতির উন্নতি না-হলে ওড়িশায় উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাওয়া নেপালি পড়ুয়াদের ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হবে তারা।
২১২২
এর পরেই ওড়িশা প্রশাসনের তরফে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। অবিলম্বে নেপালি ছাত্রছাত্রীদের আস্থা ফেরাতে কেআইআইটি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
২২২২
এ বার ভারতীয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছে নেপাল মানবাধিকার কমিশন। চিঠিতে ভারতের মানবাধিকার কমিশনকে ভারতে পড়তে আসা নেপালি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাঁরা যাতে ভয়মুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারেন তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্তের আবেদন করা হয়েছে।