All you need to know about Bollywood singer Anwar Hussain, half brother of Bollywood actor Arshad Warsi dgtl
Anwar Hussain
১০০০ টাকার জন্য সুপারহিট ফিল্ম হাতছাড়া করেন, পানশালায় গেয়ে সংসার চালাতেন আরশাদের সৎভাই
এক সময়ে অনুষ্ঠানপিছু মাত্র দশ টাকা পারিশ্রমিক পেতেন আনওয়ার হুসেন। এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। হঠাত্ তাঁর জীবনে দেবদূত হয়ে আসেন সঙ্গীত পরিচালক কমল রাজস্থানি।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
আনওয়ার হুসেন। ‘রফিকণ্ঠী’ হিসাবে বলিপাড়ার সঙ্গীতজগতে অধিক পরিচিত তিনি। আশির দশকে বলিউডে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন আনওয়ার।
ছবি: সংগৃহীত।
০২২০
আনওয়ারের গান শুনে মহম্মদ রফি বলেছিলেন, বলিউডের সঙ্গীতজগতে একমাত্র আনওয়ারই তাঁর জায়গা নিতে পারবেন। সঙ্গীতের কেরিয়ারে সাফল্যের সিড়িতেও চড়তে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থের অতিরিক্ত চাহিদার জন্য ইন্ডাস্ট্রি থেকে ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যান আনওয়ার।
প্রতীকী ছবি।
০৩২০
১৯৪৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে জন্ম আনওয়ারের। তাঁর বাবা আশিক হুসেন ওরফে আহমদ আলি খান ছিলেন সেতার বাদক। হারমোনিয়াম বাদক হিসাবেও পরিচিতি ছিল আশিকের। উস্তাদ গুলাম হায়দারের মতো শিল্পীর সঙ্গে সহকারী সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪২০
পুত্র আনওয়ারের সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায় শৈশব থেকেই। তা আশিকের নজরে পড়ায় তিনি আনওয়ারকে নিয়ে যান উস্তাদ আব্দুল রহমান খানের কাছে। মহেন্দ্র কপূর, মহম্মদ রফির মতো তাবড় তাবড় সঙ্গীতশিল্পীরা আব্দুলের কাছে সঙ্গীতের তালিম নিতেন।
প্রতীকী ছবি।
০৫২০
প্রায় এক দশক আব্দুলের কাছে সঙ্গীতচর্চা করেছিলেন আনওয়ার। তার পর হিন্দি সিনেমাজগতে গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু নতুন গায়ক বলে গান গাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তাই বিভিন্ন হোটেল, পানশালা এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে গান করে উপার্জন করা শুরু করেন আনওয়ার।
প্রতীকী ছবি।
০৬২০
সেই সময়ে অনুষ্ঠানপিছু মাত্র দশ টাকা পারিশ্রমিক পেতেন আনওয়ার। এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। হঠাত্ তাঁর জীবনে দেবদূত হয়ে আসেন সঙ্গীত পরিচালক কমল রাজস্থানি। একটি গানের অনুষ্ঠানে আনওয়ারের সঙ্গে কমলের আলাপ হয়।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭২০
আনওয়ারের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান কমল। তখন ‘মেরে গরিব নওয়াজ়’ ছবির জন্য কাজ করছিলেন কমল। সেই ছবিতে একটি গান গাওয়ার জন্য আনওয়ারকে প্রস্তাব দেন তিনি। কমলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আনওয়ার সেই ছবিতে একটি গানও গেয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে ছবি মুক্তি পায়। ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তাঁর গানও হিট হয়নি। তবে রফি তাঁর গানের প্রশংসা করেন। রফি বলেন, ‘‘আমি না থাকলে একমাত্র আনওয়ারই আমার জায়গা নিতে পারবে।’’
ছবি: সংগৃহীত।
০৮২০
আনওয়ার ভেবেছিলেন যে, একটি ছবিতে গান গাওয়ার পর তাঁর কাছে প্রচুর সুযোগ আসবে। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা যেন বিপরীত দিকে ঘুরতে শুরু করল। রফির মতো গান করতেন বলে সকলে তাঁকে ফিরিয়ে দিতেন। অনেকে বলতেন, ‘‘রফি এখনও বেঁচে রয়েছেন। উনি থাকতে আবার তোমাকে দিয়ে গান গাওয়াতে যাব কেন?’’
ছবি: সংগৃহীত।
০৯২০
কাজ না পেয়ে অনুষ্ঠানে গান গেয়ে যাচ্ছিলেন আনওয়ার। তখন তাঁর পরিচয় হয় কৌতুকাভিনেতা মেহমুদের সঙ্গে। আনওয়ার যে রফিকণ্ঠী, তা জানতে পেরে খুশি হন মেহমুদ। সঙ্গীত পরিচালক রাজেশ রোশনের সঙ্গে আনওয়ারের আলাপ করিয়ে দেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
১০২০
১৯৭৭ সালে ‘জনতা হাবিলদার’ ছবিতে গান গাওয়ার জন্য আনওয়ারকে প্রস্তাব দেন রাজেশ। রাজেশের প্রস্তাব মেনে ওই ছবিতে রাজেশ খন্নার কণ্ঠে গান করেন আনওয়ার। দু’বছর পর ছবি মুক্তি পেলে ছবি এবং আনওয়ারের গান দুটোই হিট করে।
ছবি: সংগৃহীত।
১১২০
বলিপাড়ার সঙ্গীতজগতে আনওয়ারের পরিচিতি বেড়ে ওঠে। লক্ষ্মীকান্ত-প্যারেলাল, কল্যাণজি-আনন্দজি, বাপ্পি লাহিড়ি, অনু মালিক, দিলীপ সেন-সমীর সেনের মতো সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
১২২০
লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, অলকা যাজ্ঞিকের সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছিলেন আনওয়ার। কিন্তু আশার সঙ্গে ডুয়েট গাওয়ার সময় সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছিলেন গায়ক। তাঁর আচরণের জন্য আশা তাঁর সঙ্গে কাজ করা থামিয়ে দিয়েছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩২০
কানাঘুষো শোনা যায় যে, মিউজ়িক স্টুডিয়োতে মত্ত অবস্থায় এসেছিলেন আনওয়ার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আশা। আনওয়ার গান গাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। আনওয়ারকে এই অবস্থায় দেখে রেগে যান গায়িকা। এর পর আর আনওয়ারের সঙ্গে কোথাও গান গাইতে দেখা যায়নি তাঁকে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪২০
মনমোহন দেশাই ‘মর্দ’ ছবির জন্য আনওয়ারকে গান গাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গান গাইবেন বলে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে রাজি হয়েছিলেন মনমোহন। কিন্তু আনওয়ার আরও এক হাজার টাকা বেশি পারিশ্রমিক চান। বেশি টাকা চেয়েছিলেন বলে মনমোহন তাঁর পরিবর্তে শব্বির কুমার এবং মহম্মদ আজিজকে দিয়ে গান গাওয়ান।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫২০
এমনকি, রাজ কপূরের কাছেও বেশি টাকা চেয়েছিলেন আনওয়ার। ‘প্রেম রোগ’ ছবির গান গাওয়ার জন্য তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাজ। কানাঘুষো শোনা যায় যে, অভিনয়ের জন্য ঋষি কপূর যত পারিশ্রমিক পাচ্ছিলেন, তার থেকেও অধিক পারিশ্রমিকের দাবি করেছিলেন আনওয়ার।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬২০
আনওয়ারের আচরণে ক্ষুব্ধ হন রাজ এবং ঋষি। আনওয়ারের একটি গান ছাড়া ‘প্রেম রোগ’ ছবি থেকে তাঁর সমস্ত গান বাদ দিয়ে দেন রাজ। এর পর আর কেউ আনওয়ারের সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না।
ছবি: সংগৃহীত।
১৭২০
২০০৭ সালে দেওয়া একটি পুরনো সাক্ষাত্কারে আনওয়ার জানান যে, কুমার শানু আসার পর তাঁর কেরিয়ার ডুবে যায়। তাই তিনি বিদেশে চলে যান। সান ফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৮২০
আনওয়ারের সত্ভাই হলেন বলি অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি। কিন্তু আরশাদ কখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি বলে দাবি আনওয়ারের। বিদেশে যাওয়ার পর নিজের গানের দু’টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৯২০
সংবাদমাধ্যম মুম্বই মিরর আনওয়ারের আর্থিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরায় তাঁকে কয়েকটি টেলিভিশন শোয়ে গান গাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও বড় মাপের কাজ পাননি তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
২০২০
জীতেন্দ্র, রাজ বব্বর, দিলীপ কুমার, রাজেশ খন্না, জালাল আঘা, কুমার গৌরব, তারিক শাহ, আদিত্য পাঞ্চোলি, ঋষি কপূর, অমিতাভ বচ্চন, সানি দেওল, অনিল কপূরের মতো অভিনেতাদের কণ্ঠে গান করা আনওয়ার এখন হিন্দি মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রি থেকে বহু দূরে। এখন আবার আগের জীবনে ফিরে গিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রফির গান গেয়ে উপার্জন করেন আনওয়ার।