All need to know about recent PTI Protest at Islamabad in support of Imran Khan dgtl
Pakistan Unrest
উত্তপ্ত ইসলামাবাদে চলছে গুলি, জ্বলছে গাড়ি! পথে হাজার হাজার মানুষ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ
মঙ্গলবার ইসলামাবাদের বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত করেন ইমরান-সমর্থকেরা। বিভিন্ন গাড়ি থেকে দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। পুলিশের বসানো ব্যারিকেডও ভেঙে দেন বিক্ষোভকারীরা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২:১৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তপ্ত ইসলামাবাদ। পুলিশ এবং ইমরান-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ছ’জন সরকারি নিরাপত্তাকর্মীর। মঙ্গলবার রাত থেকে আরও ভয়ানক চেহারা নিয়েছে সেই সংঘাত। পুলিশের গুলিতে একাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর।
০২২০
মঙ্গলবার ইসলামাবাদের বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত করেন ইমরান-সমর্থকেরা। গাড়ি থেকে দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। পুলিশের বসানো ব্যারিকেডও ভেঙে দেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে যে শিপিং কন্টেনার বসানো হয়েছিল, কেউ কেউ তার মাথায় চড়ে বসেন।
০৩২০
ধীরগতির মিছিলে বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদনৃত্য করতে দেখা যায়। কেউ কেউ স্লোগান তোলেন, “বিপ্লব! বিপ্লব!”
০৪২০
মঙ্গলবার বিকালে জমায়েত ‘রেড জোন’-এর কাছে একত্রিত হতে শুরু করলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাস্তায় নামে পুলিশ এবং সেনা। উল্লেখ্য, ‘রেড জোন’ এলাকায় পাকিস্তানের সংসদ ভবন এবং বিদেশি দূতাবাস-সহ গুরুত্বপূর্ণ নানা সরকারি ভবন রয়েছে।
০৫২০
এর পরেই দু’পক্ষের সংঘাত শুরু হয়। সংঘাত তীব্র হতেই ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি, যাঁর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল চলছিল, তিনি এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান। রাত বাড়তে সংঘাতের উত্তাপ বৃদ্ধি পায়। হিংসার চেহারা নেয় বিক্ষোভ মিছিল।
০৬২০
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সংঘর্ষের জেরে আহত হন অনেকে। বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস। অভিযান চলাকালীন এলাকার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় বলেও খবর। এমনকি, ইমরানের সমর্থকদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয় পাক সেনাকে।
০৭২০
২০২৩ সালের অগস্ট থেকে জেলবন্দি ইমরান। সম্প্রতি কারাবন্দি অবস্থাতেই রাজধানী ইসলামাবাদ-সহ পাকিস্তানের বড় শহরগুলি জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ) প্রধান।
০৮২০
ইমরানের অভিযোগ, তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এমনটা করছে সরকারপক্ষ।
০৯২০
ইমরান এ-ও দাবি করেন, নির্বাচনে গায়ের জোরে জনাদেশ বদলে ক্ষমতা দখল করেছে শাহবাজ় শরিফের পিএমএল(এন) ও পিপিপি-র জোট সরকার। সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী পাশ নিয়েও আপত্তি জানান তিনি।
১০২০
এর পরেই ২৪ নভেম্বর দেশ জুড়ে তাঁর দল এবং সাধারণ মানুষের উদ্দেশে পথে নামার ‘শেষ আহ্বান’ জানান ইমরান। টনক নড়ে শাসক জোটের। রাজধানী ইসলামাবাদে পরবর্তী দু’মাসের জন্য জারি হয় ১৪৪ ধারা।
১১২০
এর পর রবিবার ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে রাজধানীর উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কর্মী এবং সমর্থকেরা। সোমবার সন্ধ্যায় মিছিল ইসলামাবাদে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীরা আরও এগোনোর সিদ্ধান্ত নিলে নামানো হয় সেনাবাহিনী।
১২২০
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে ইমরানের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের গুলিতে প্রথমে মৃত্যু হয় এক পুলিশকর্তার। পরে নিহত হন আরও পাঁচ জন নিরাপত্তাকর্মী।
১৩২০
সেই সংঘর্ষের উত্তাপ আরও বেড়েছে। পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, বিক্ষোভ দমনে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পাক সেনাকে। মঙ্গলবার থেকে ইসলামাবাদের রাস্তা সেনা জওয়ানে ছয়লাপ।
১৪২০
ইসলামাবাদের একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে চার জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৫০ জনেরও বেশি। ইসলামাবাদের দু’টি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের।
১৫২০
যদিও মঙ্গলবার রাতে একটি সংবাদিক সম্মেলনে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মহসিন নকভি এবং তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশের গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
১৬২০
নকভি আরও স্পষ্ট করেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে তাঁরা রাজি নন। সরকারের তরফে ইসলামাবাদের বুকে কোনও রকম জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বলেও অভিযোগ পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীর।
১৭২০
পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সেনাদের মৃত্যু এবং উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য ইমরানের দলের কর্মী এবং সমর্থকদের দায়ী করেছেন। অন্য দিকে, পিটিআই মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বুখারির অভিযোগ, পুলিশ এক জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে খুন করেছে। অন্য এক জনকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জেল থেকে লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন ইমরানও।
১৮২০
তবে ইমরানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানে বিক্ষোভ এই প্রথম নয়। গত সেপ্টেম্বরেও রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে জড়ো হয়েছিলেন ইমরানের অগণিত সমর্থক। ক্যাপ্টেনের মুক্তির দাবিতে সরব হন তাঁরা। স্লোগান দিয়ে মিছিলও করেন। জনতার ঢল নামে ইসলামাবাদে।
১৯২০
পাক ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন থেকে রাজনীতির আঙিনায় পা দেওয়া ইমরান রাজনীতিবিদ হিসাবেও দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ২০১৮ সালে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন তিনি।
২০২০
২০২২ সালে পাক আইনসভায় অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়ে ক্ষমতাচ্যূত হন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমে। পরে গ্রেফতারও হন। তবে তাঁর সমর্থকদের দাবি, ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। পাক জনগণ এবং রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে জোর করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে তাঁকে।