সাধারণ একটি ভালুক। অথচ তাকে নিয়েই তৈরি হয়েছে কিংবদন্তি। মিউজিয়ামে তার মূর্তি আছে। তাকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে সিনেমাও। কী তার কাহিনি?
সংবাদ সংস্থা
জর্জিয়াশেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পাবলো এসকোবার মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক মাফিয়া। আর পাবলো এসকো-বিয়ার জর্জিয়ার জঙ্গলের অতি সাধারণ একটি কালো ভালুকের নাম। দু’জনের মধ্যে এক বিন্দু মিল থাকার কথা নয়। যদিও মাফিয়ার নামে ভালুকের নামকরণ করা হয়েছিল মিল রয়েছে বলেই।
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৮
দু’জনকে নিয়েই রয়েছে কিংবদন্তি। মেক্সিকোর পাবলো মাদকের বেআইনি ব্যবসা-সহ আরও নানা বেআইনি কাজের দৌলতে শিরোনামে এসেছিলেন। তাঁকে নিয়ে হলিউডে তৈরি হয়েছে সিনেমাও। জর্জিয়ার পাবলোর কীর্তিও লোকের মুখে মুখে ফেরে। জর্জিয়ার মিউজিয়ামে একটি মূর্তি রয়েছে তাঁর। আবার তাঁকে নিয়েও সিনেমা বানিয়েছে হলিউড।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৮
কোকেন পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মেক্সিকোর মাদক মাফিয়া পাবলো এসকোবার। জর্জিয়ার ভালুকটিরও কোকেন যোগ রয়েছে। বস্তুত এই কোকেন যোগের দৌলতেই জর্জিয়ার এসকো-বিয়ারের একটি দ্বিতীয় নামও রয়েছে— ‘কোকেন বিয়ার’।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৮
শোনা যায়, ভালুকটি নাকি এক বার একসঙ্গে ৪০ প্যাকেট কোকেন সেবন করেছিল। যার দাম কম করে হলেও ১১৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৮
এই পরিমাণে কোকেন একেবারে খাওয়া তো দূর, খাওয়ার কথা ভাবাও সম্ভব নয়। কারণ এর অর্ধেক কোকেনও শরীরে গেলে বেঁচে থাকা সম্ভব নয় কারও পক্ষে। ভালুকটি যদিও ৪০টি প্যাকেটেরই মাদক খেয়ে শেষ করেছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৮
ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৫ সালে। জর্জিয়ার জঙ্গলে মাদকের ব্যাগ ফেলতে এসেছিলেন এক পাচারকারী। নাম অ্যান্ড্রু থর্নটন। বয়স ৪০। অ্যান্ড্রু ছিলেন কেনটাকির এক ধনী ঘোড়া ব্যবসায়ীর ছেলে। নিজের ব্যক্তিগত বিমান চালিয়ে জর্জিয়ায় এসেছিলেন অ্যান্ড্রু।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৮
অ্যান্ড্রুর দায়িত্ব ছিল জঙ্গলে ১০টি মাদক ভর্তি ব্যাগ ছুড়ে ফেলা। যে ব্যাগ পরে জঙ্গল থেকেই সংগ্রহ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কিন্তু ৯টি ব্যাগ ফেলে ১০ নম্বর ব্যাগটি ফেলার সময়েই বাধে গোলমাল।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৮
ব্যাগ ছুড়তে গিয়ে প্লেনের কোনও একটি অংশে মাথায় ধাক্কা লেগে আহত হন অ্যান্ড্রু। সজোরে নীচে পড়তে শুরু করেন। সংজ্ঞা হারানোয় প্যারাশ্যুট খুলতে পারেননি। ফলে মাটিতে পড়ে মৃত্যু হয় থর্নটনের। আর তাতেই বদলে যায় জর্জিয়ার ওই জঙ্গলের একটি কালো ভালুকের জীবন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৮
থর্নটনের মৃতদেহ যখন উদ্ধার করে পুলিশ তখন তাঁর পরনে ছিল বহুমূল্য পোশাক, একটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, রাতের অন্ধকারে দেখা যায় এমন গগলস এবং জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড গুচির জুতো।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৮
এ ছাড়া একটি বন্দুক, ছুরির গোছা আর প্রায় লাখ চারেক টাকার সমান অর্থও পাওয়া যায় থর্নটনের কাছ থেকে। তবে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সেই মাদক ভর্তি ব্যাগটি পাওয়া যায়নি, যা নামাতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন থর্নটন।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৮
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন ১০টি ব্যাগ নামানোর কথা ছিল থর্নটনের। তার বিমানটি খুঁজে পাওয়ার পর সেই বিমানের গতিপথ দেখে ৯টি ব্যাগ খুঁজে বের করেছিল পুলিশ। কিন্তু ১০ নম্বর ব্যাগটি পেতে প্রায় তিন মাস সময় লেগে যায় তদন্তকারীদের।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৮
জঙ্গলেরই আরও গভীর এলাকায় ছেঁড়া ব্যাগটি পড়েছিল একটি ভালুকের মৃতদেহের পাশে। তার ভিতরে থাকা কোকেনের ৪০টি প্যাকেট ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল আশপাশেই, তবে সবক’টিই ছিল ফাঁকা।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৮
পুলিশের সন্দেহ হয়, হয়তো ভালুকটিই ওই মাদক খেয়েছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভালুকের মৃতদেহটি সংগ্রহ করে তারা নিয়ে যায় হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য। রিপোর্ট দেখে অবাক হয়ে যায় তারা।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৮
চিকিৎসকেরা জানান, ভালুকটির পাকস্থলীতে ঠাসা ছিল কোকেনের গুঁড়ো। বস্তুত ভালুকটির পাকস্থলী থেকে উপচে বেরোচ্ছিল কোকেন। মাদকের জন্যই যে ভালুকটির মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানান তাঁরা।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৮
তদন্তকারীদের কাছে ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করে ঘটনাটি। তাঁরা বুঝতে পারেন, মাটিতে পড়া বেওয়ারিশ মাদকের ব্যাগটি দেখে সেটি তুলে নিয়েছিল জর্জিয়ার জঙ্গলের ওই কালো ভালুক। তার পরেই সেটি ছিঁড়ে ভিতরের মাদকের প্যাকেট টেনে বের করে আনে সে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৮
এই পরিমাণ মাদক সেবন করলে মৃত্যু হওয়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু তদন্তকারীদের অবাক করে দিয়েছে ভালুকের মৃত্যুর আগের আচরণ। ক্রমান্বয়ে ৪০টি প্যাকেট খুলে তার ভিতরে থাকা কোকেন অবিরাম খেয়েই গিয়েছিল নেশাতুর ওই ভালুক।
ছবি: সংগৃহীত।
১৭১৮
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কোকেন সেবনের জন্য হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে কিডনি, ফুসফুস বিকল হওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, স্ট্রোক, হাইপারথারমিয়া-সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ভালুকটির।
ছবি: সংগৃহীত।
১৮১৮
কী ভাবে কেটেছিল কোকেন বিয়ারের অন্তিম মুহূর্ত? সেই কাহিনি কল্পনা করে সম্প্রতিই হলিউডে একটি থ্রিলার ছবি তৈরি হয়েছে— নাম ‘কোকেন বিয়ার’। এলিজাবেথ ব্যাঙ্ক পরিচালিত ওই ছবিটি শীঘ্রই মুক্তি পাবে।