Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Presents
এটিএমে নিরাপত্তা

মেশিনে কার্ড ঢোকানোর সময়ে সাবধান

সিসিটিভি-র ফুটেজেই ধরা পড়েছিল ছবিটা। সাতসকালে বেঙ্গালুরুতে এটিএমে টাকা তুলতে আসা মহিলার উপর ছুরি হাতে চড়াও হচ্ছে দুষ্কৃতী। যেখানে এটিএম বসানো, সেই চার দেওয়ালের মধ্যেই! এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছে দেশ। এটিএমে নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নতুন করে। সকলেই জানতে চান, টাকা তোলার সময়ে ‘আমি সত্যিই কতটা সুরক্ষিত?’ কিংবা সাবধান হতে ‘আর কী কী করতে পারি আমি?’ আজ এ সব নিয়েই সিকিউরেন্স সিস্টেমস-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল উদুপা-র সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরীসিসিটিভি-র ফুটেজেই ধরা পড়েছিল ছবিটা। সাতসকালে বেঙ্গালুরুতে এটিএমে টাকা তুলতে আসা মহিলার উপর ছুরি হাতে চড়াও হচ্ছে দুষ্কৃতী। যেখানে এটিএম বসানো, সেই চার দেওয়ালের মধ্যেই! এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছে দেশ। এটিএমে নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নতুন করে। সকলেই জানতে চান, টাকা তোলার সময়ে ‘আমি সত্যিই কতটা সুরক্ষিত?’ কিংবা সাবধান হতে ‘আর কী কী করতে পারি আমি?’ আজ এ সব নিয়েই সিকিউরেন্স সিস্টেমস-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল উদুপা-র সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

• আলোচনার শুরুতে বোধহয় পাঠকদের সঙ্গে আপনার পরিচয় করিয়ে দেওয়া জরুরি। কারণ, আপনি তো শুধু একটি সংস্থার কর্ণধার নন, বরং গত দু’দশক ধরে প্রথম সারির এটিএম বিশেষজ্ঞ। ভারতে প্রথম এটিএম চালুর পিছনে আপনার হাত রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন একই কার্ড বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএমে ব্যবহারের পরিকাঠামো গড়ায়। সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থাও এনেছেন এটিএমে নিরাপত্তা আরও মজবুত করার লক্ষ্যে।

দেখুন, আজকের জেট গতির যুগে এটিএম ছাড়া আমাদের চলবে না। শুধু টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়াতে আমরা অনেকেই ভুলে গিয়েছি। তা এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা চালু বা প্রসারের ক্ষেত্রে যে সামান্য হলেও কাজ করতে পেরেছি, তাতেই আমি খুশি।

• সরাসরি আলোচনার বিষয়ে আসি। পিন নম্বর চুরি করে গ্রাহকের টাকা হাতানো কিংবা এটিএম ভেঙে লুঠের ঘটনা বার বার প্রশ্ন তুলেছে তার নিরাপত্তা নিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর ঘটনা এই উদ্বেগকে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা দিয়েছে। মানুষ জানতে চাইছেন, এটিএমগুলির নিরাপত্তা সত্যিই কতটা জোরদার?

স্পষ্টই বলি, আমাদের দেশে এটিএমের নিরাপত্তা এখনও অত্যন্ত নিম্নমানের। তবে হ্যাঁ, তা উন্নত করতে চেষ্টা চলছে। এখন দেশে মোট এক লক্ষ চল্লিশ হাজার এটিএম রয়েছে। বেঙ্গালুরুর ওই ঘটনার আগে তার এক-তৃতীয়াংশেরও কমে (৩০%) নিরাপত্তারক্ষীর দেখা মিলত। সিসিটিভি ঠিকঠাক কাজ করত ৬০ শতাংশে। বেঙ্গালুরুতে ওই মহিলা আক্রান্ত হওয়ার পর এখন দক্ষিণী রাজ্যটিতে প্রায় ৯০% এটিএমেই রক্ষী রয়েছেন। কাজ করছে সিসিটিভি-ও। কিন্তু অন্যান্য রাজ্যে ছবিটা কিন্তু তেমন বদলায়নি।

• আর ঠিক সেই কারণেই তো নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ভাবাচ্ছে সকলকে। তাঁরা জানতে চাইছেন, এটিএম কাউন্টারে টাকা তুলতে ঢোকার পর কী কী বিপদ ওত পেতে থাকতে পারে?

এই প্রশ্নটাকে বরং আরও একটু বিস্তৃত করে নিয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি। দেখুন, এটিএমের চার দেওয়ালে যে- সমস্ত ঝুঁকি রয়েছে, তাদের মূলত দু’টি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়— (১) গ্রাহকের নিরাপত্তা (২) এটিএমের নিজের নিরাপত্তা।

এটিএমে টাকা তুলতে ঢুকে গ্রাহক কেমন বিপদে পড়তে পারেন, তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ বেঙ্গালুরুর ঘটনা। যেখানে গ্রাহকের টাকা লুঠ হতে পারে। দুষ্কৃতীর হাতে তিনি জখম হতে পারেন। এমনকী মৃত্যুও অসম্ভব নয়।

আবার অন্য দিকে, এটিএম মেশিনের উপরেও আক্রমণ করতে পারে দুষ্কৃতীরা। এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুঠের নজির রয়েছে। কিছু দিন আগে তো পুরো মেশিনটিকেই তুলে কিছু দূর নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পরে অবশ্য তা মাঝপথে ফেলেই পালিয়ে গিয়েছিল তারা।

• এই যে অনেক সময় শোনা যায়, গ্রাহকের অজান্তেই তাঁর এটিএম পিন ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে?

খাঁটি কথা। প্রতিটি ব্যাঙ্কই এটিএমে প্রতারণা রুখতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নিচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ রকম ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। কারণ, কোনও ভাবে (যেমন ধরুন, ব্যাগ হারালে) গ্রাহকের এটিএম কার্ড প্রতারকের হাতে চলে যেতে পারে। আর তখন কোনও ভাবে পিন নম্বর বার করে ফেলতে পারলে টাকা তোলার জন্য তা কাজে লাগাতে পারে তারা। আবার কোনও ভাবে প্রথমে গ্রাহকের পিন নম্বর এক বার জোগাড় করে ফেলতে পারলে, নকল (ডুপ্লিকেট) কার্ড বানিয়ে নেওয়াও অসম্ভব নয়। অনেক সময়েই আগে সে রকম কার্ড তৈরি করে নিয়ে তারপর হাতিয়ে নেওয়া পিন ব্যবহার করে কাজ সারে প্রতারক।

• কিন্তু গ্রাহকের গোপন পিন প্রতারক জানবে কী ভাবে?

বিভিন্ন ভাবেই তা করা সম্ভব। যেমন, অনেক সময় মেশিনে যেখানে আমরা কার্ড ঢোকাই, সেখানে ‘ডুপ্লিকেট কার্ড রিডার’ লাগিয়ে রাখে প্রতারকরা। চেষ্টা করে তার মাধ্যমে এটিএম কার্ডের পিন নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য হাতানোর। হয়তো দেখা গেল, কার্ড রিডারটি লাগিয়ে এটিএমের বাইরেই অপেক্ষা করছে সে। তার পর গ্রাহক বেরিয়ে যেতেই ভিতরে ঢুকে বার করে নিয়ে যাচ্ছে রিডারটি।

এটিএম বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার (সোয়াইপ) করে জিনিসপত্র কেনাকাটার সময়েও তথ্য হাতানোর চেষ্টা হতে পারে একই ভাবে।

ডুপ্লিকেট কার্ড রিডারের মতো ব্যবহার করা হতে পারে নকল পিন প্যাডও। যেখানে পিন নম্বর বা টাকার অঙ্ক লেখার বোতাম থাকে, নকল বা ডুপ্লিকেট পিন প্যাড লাগানো থাকে তার উপরেই। এটিএমের মেশিনে ছোট ক্যামেরা (যার মুখ নম্বরের বোতামের দিকে) লাগিয়েও আপনার পিন নম্বর দেখে ফেলা সম্ভব।

• এ তো দেখছি প্রতারণার ফাঁদ পাতা ভুবনে! তা হলে উপায়?

এক কথায় উত্তর দেওয়া শক্ত। তবে বুঝতেই পারছেন উপরে যে-বিষয়গুলি উল্লেখ করলাম, তা থেকে সাবধান থাকতে হবে। যেমন—

১. টাকা তুলতে অচেনা এটিএমের ব্যবহার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। কোথাও বেড়াতে গেলে কিংবা হঠাৎ প্রয়োজন হলে, হয়তো উপায় থাকবে না। কিন্তু হয়তো মাসের শুরুতে আপনি মাস-খরচের মোটা টাকা তুলছেন। তখন তা কাছের, সুরক্ষিত, চেনা এটিএমে তোলাই ভাল।

২. মেশিনে কার্ড ঢোকানোর আগে দেখে নিন যে, সেখানে ডুপ্লিকেট কার্ড রিডার লাগানো আছে কিনা। হয়তো সাধারণ মানুষের পক্ষে তা চেনা শক্ত। তাই কার্ড ঢোকানোর জায়গায় বাড়তি কিছু লাগানো রয়েছে কিনা, সেটুকু অন্তত খেয়াল করুন। সন্দেহ হলে জায়গাটা সামান্য নেড়েচেড়ে, খুঁচিয়ে দেখতে হবে। যাতে লাগানো থাকলে তা ধরা পড়ে।

৩. এটিএমে ঢুকে টাকা তোলার আগে শুরুতেই খুঁটিয়ে দেখুন মেশিনের সঙ্গে (সাধারণত উপরের দিকে) কোনও ছোট ক্যামেরা (যার মুখ পিন প্যাডের দিকে) লাগানো আছে কিনা। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে পিন নম্বর টাইপ করার সময় অন্য হাত দিয়ে তা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন।

৪. দেখে নিন, মেশিনের পিন প্যাডটি নড়বড় করছে কি না। কিংবা তার উপর ডুপ্লিকেট পিন প্যাড লাগানো নেই তো?

৫. কার্ডে জিনিসপত্র কেনাকাটার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। দোকানে কেনাকাটা বা রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়া সারার পর কার্ড সোয়াইপ করানোর জন্য তা অন্য কারও হাতে দেবেন না।

৬. টাকা তোলার সময়ে অন্য কাউকে এটিএমে ঢুকতে বাধা দিন।

৭. নিয়মিত ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করে দেখুন।

• এ তো গেল কার্ড ব্যবহারে সাবধানতার কথা। কিন্তু এটিএমে টাকা তোলার সময়ে বা তার ঠিক পরেই গ্রাহকের নিরাপত্তা? সেখানে নিরাপত্তারক্ষীদের উপর কতখানি ভরসা করা সম্ভব?

শুনতে হয়তো অদ্ভুত লাগবে। কিন্তু আমার মনে হয় না যে, তাঁরা আদৌ কার্যকরী। তেমন বিপদ হলে, তাঁরা সত্যিই কতটা কী করতে পারবেন, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখি তাঁরা নিরস্ত্র। অনেক সময়ে তাঁদের বয়স বা শারীরিক শক্তিও ভরসা জোগানোর মতো নয়। ফলে এঁদের কাজে লাগাতে হলে, আগে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। লাগবে উপযুক্ত পরিকাঠামোও।

এখন দেখছি, এটিএমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রক্ষী মোতায়েনের কথা ব্যাঙ্কগুলিকে বার বার বলছে পুলিশ। এ ক্ষেত্রেও একটা আশঙ্কা আছে। কারণ, এর ফলে ব্যাঙ্কগুলি শুধু রক্ষী মোতায়েন করেই নিরাপত্তার বিষয়ে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারে। পরে কিছু ঘটলে বলবে, ‘গার্ড তো রেখেছিলাম।’

• আর সিসিটিভি?

মনে রাখবেন, সিসিটিভি কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারে না। কোনও অঘটন ঘটলে, বড়জোর তা রেকর্ড করে রাখতে পারে। যা পরে তদন্তে কাজে লাগে। কিন্তু তার আগে ক্ষতি যা-হওয়ার তা তো হয়েই যায়।

• তার মানে এখানেও আমরা সেই অথৈ জলে। তা হলে সার্বিক ভাবে গ্রাহক ও মেশিনের নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কি কোনও রাস্তা নেই?

নিশ্চয়ই আছে। আমি শুধু বলতে চাইছি যে, বর্তমান ব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়। কারণ, শুধু ঘটনা রেকর্ড করে কী হবে? বরং গ্রাহক যে মুহূর্তে এটিএমে ঢুকবেন, তখন থেকেই তাঁর চার পাশে একটা অদৃশ্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে দিতে হবে। তা সত্ত্বেও অঘটন ঘটলে তৈরি থাকতে হবে চটজলদি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর একমাত্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই তা সম্ভব।

• একটু ভেঙে বলবেন?

মনে হতে পারে নিজেদের ঢাক পেটাচ্ছি। কিন্তু এ বিষয়ে সম্প্রতি আমাদের সংস্থা সিকিউরেন্স সিস্টেমস একটি পরিকাঠামো তৈরি করেছে। যার মাধ্যমে সারা দেশের এটিএমে নজরদারি করা সম্ভব। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে দুষ্কৃতীকে নিরস্ত্র করার ক্ষেত্রেও। এবং পুরো ব্যবস্থাটিই পরিচালনা করা যাবে দেশের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসে। প্রযুক্তিটির পরিচালন কেন্দ্র থেকে।

যে-সব ব্যাঙ্ক এই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, তাদের প্রতিটি এটিএমে বসানো হবে মোশন সেন্সর, সিসিটিভি, ভয়েস সিস্টেম এবং সাইরেন। এটিএমে কেউ ঢোকামাত্র সেন্সরের মাধ্যমে পরিচালন কেন্দ্রে তার খবর যাবে। হদিস পাওয়া যাবে কারও অস্বাভাবিক গতিবিধির। সিসিটিভি মারফত কেন্দ্রে বসে অফিসারেরা তা দেখতেও পাবেন। ধরুন যদি দেখা যায়, কোনও ব্যক্তি গ্রাহককে আক্রমণ করছে, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে এটিএমে বসানো ভয়েস সিস্টেমের মাধ্যমে দুষ্কতীকে সতর্ক করা হবে। জানানো হবে যে, ক্যামেরার মাধ্যমে নজর রাখা হয়েছে তার গতিবিধির উপর। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেও সঙ্গে সঙ্গে এ ব্যাপারে বার্তা পাঠানো হবে।

• তাতে লাভ?

আশা করা যায় গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে শুনলে দুষ্কৃতী পালিয়ে বাঁচতে চাইবে। তা ছাড়া, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝলে ওই এটিএমে সাইরেন বাজাতে পারবেন পরিচালন কেন্দ্রের অফিসারেরা। যার মাধ্যমে স্থানীয় লোকদের বোঝানো যাবে যে, কেউ ওই এটিএমে বিপদে পড়েছেন। স্থানীয় থানার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের বন্দোবস্তও করা যেতে পারে। তা ছাড়া মনে রাখবেন, কোনও গ্রাহক এটিএমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেও এই প্রযুক্তি যথেষ্ট উপযোগী।

কী করবেন?

• খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চেনা এটিএম থেকেই টাকা তোলার চেষ্টা করুন।

• এটিএমে ঢোকার আগে দেখুন যে, কেউ আপনার পিছু নিচ্ছে কিনা। টাকা তোলার সময় কেউ ‘পিন-প্যাড’-এর দিকে তাকিয়ে নেই তো?

• খেয়াল রাখুন, মেশিনে যেখানে পিন নম্বর দিচ্ছেন (পিন-প্যাড), তার উপরের দিকে কোনও ছোট ক্যামেরা লাগানো আছে কিনা।

• মেশিনে কার্ড ঢোকানোর জায়গায় ডুপ্লিকেট কার্ড রিডার লাগানো নেই তো? বাড়তি কিছু লাগানো আছে বলে সন্দেহ হলে, তা একটু নেড়েচেড়ে কিংবা খুঁচিয়ে দেখুন।

• ঘরে একটিই এটিএম থাকলে, টাকা তোলার সময়ে সেখানে দ্বিতীয় কেউ ঢুকতে চাইলে বাধা দিন। একাধিক এটিএম থাকলে এবং আপনি থাকাকালীন অন্য কেউ তা ব্যবহার করলে, একটু বাড়তি সতর্ক থাকুন।

• মাঝেমধ্যেই পিন নম্বর বদলান। বিশেষত অন্য কেউ জেনে থাকতে পারে বলে মনে হলে, তা সঙ্গে সঙ্গে করা জরুরি।

• নিয়মিত ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চেক করুন। আপনি করেননি, এমন কোনও লেনদেনের উল্লেখ সেখানে থাকলে অবিলম্বে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে জানান।

• কোনও ভাবে এটিএম কার্ড চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ‘হেল্পলাইন’ বা কাস্টমার কেয়ারে ফোন করুন। নিশ্চিত করুন যাতে ওই কার্ড আর কেউ ব্যবহার করতে না-পারে।

• কোনও এটিএমে সুরক্ষার অভাব রয়েছে বলে মনে হলে তা এড়িয়ে চলুন। ভিড় বেশি থাকলেও অন্য এটিএমের খোঁজ করা ভাল।

***

বিপদের তিন মূর্তি। সবিস্তার...

***

কী করবেন না?

• এটিএম কার্ড এবং পিন নম্বর কোনও ভাবেই এক সঙ্গে রাখবেন না। কারও হাতে পড়লে কিন্তু সর্বনাশ!

• অন্য কারও হাতে এটিএম কার্ড নয়। পিন নম্বরও বলবেন না কাউকে।

• অনেক সময় ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও বিশ্বস্ত সংস্থার নাম করে ফোন, ই-মেল ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতারক কার্ডের পিন নম্বর জানার চেষ্টা করে। ভুলেও সেই ফাঁদে পা দেবেন না।

• এটিএমে টাকা তুলতে সড়গড় না-হলে, ভুলেও অপরিচিত কারও সহায়তা চাইবেন না। প্রয়োজনে ব্যাঙ্কের কিংবা সিকিউরিটি গার্ডের সাহায্য নিন।

• পিন নম্বর লেখার সময় মেশিনের পর্দায় তা দেখা যাওয়ার কথা নয়। তার বদলে সেখানে XXXX ফুটে ওঠার কথা। তেমনটা না-হলে, পুরো নম্বর লিখবেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই সমস্যার কথা ব্যাঙ্ককে জানান।

• মেশিনে কাজ শেষে কার্ড বেরোতেই সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসবেন না। ফের সেখানে পর্দায় (স্ক্রিন) ‘ওয়েলকাম’ ভেসে উঠতে দিন। বেরোনোর আগে ‘ক্যান্সেল’ বোতাম টিপে আসা ভাল।

• দোকানে কেনাকাটা বা রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়া সারার পর কার্ড সোয়াইপ করানোর জন্য তা অন্য কারও হাতে দেবেন না। কার্ড সোয়াইপের সময়ে আপনি নিজে সেখানে উপস্থিত থাকুন।

• এটিএম ব্যবহারের পর ‘ট্রানজাকশন স্লিপ’ ঘরের মধ্যে ফেলবেন না। পরে একটু দূরে কোথাও তা কুচিয়ে ছিঁড়ে ফেলা ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bisoy asoy atm card sunil udupa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE