নতুন বিমা বিলের প্রসঙ্গ উঠলেই অনেকে প্রশ্ন করেন, এতে বিদেশি লগ্নি না হয় বাড়বে, কিন্তু গ্রাহকের উপকার হবে কি? চলুন আজ সেটা দেখি।
কী রয়েছে বিলে?
• দেশীয় বিমা সংস্থায় সর্বোচ্চ প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি ২৬% থেকে বাড়িয়ে ৪৯% করা।
• বাজার থেকে টাকা তুলতে পারবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলি।
• বিমা শিল্প নিয়ন্ত্রণে আগের চেয়ে বেশি ক্ষমতা পাবে নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ। যার মধ্যে রয়েছে বিমা এজেন্ট নিয়োগের যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া, এজেন্টদের কমিশনে সর্বোচ্চ সীমা ধার্য করা, ভুল বুঝিয়ে বিমা বিক্রির ঘটনায় আরও বেশি জরিমানা করা ইত্যাদি।
• গ্রাহক স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য চালু হবে বিশেষ কিছু বন্দোবস্ত।
• আইআরডিএ-র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আদালতে যেতে পারবে বিমা সংস্থাগুলি।
• স্বাস্থ্যবিমার নতুন সংজ্ঞায় এখন থেকে এর আওতায় আসবে ভ্রমণ এবং ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমাও।
আপনার সুবিধা কোথায়?
চাকরি শুরুর পরে আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশীর কাছ থেকে জীবনবিমা প্রকল্প কেনার আবদার শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিমা এজেন্ট পলিসি বেচার চেষ্টা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হল, আপনার প্রয়োজন, চাহিদা ও সাধ্য অনুযায়ী ঠিক প্রকল্প কিনতে বলা হচ্ছে কি? নাকি ফাঁদে ফেলা হচ্ছে লম্বা মেয়াদ শেষে মোটা টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে। এজেন্টের প্রতিশ্রুতি কতটা সত্যি? ভবিষ্যতে বিমার টাকা দাবি করলে কিংবা মেয়াদ শেষে প্রাপ্য পেতে সমস্যা হবে না তো? এমন বহু প্রশ্নের উত্তর এখনই পাওয়া কঠিন। তবে আইন কড়া হলে, তা ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা অবশ্যই কমে।
কষ্টের রোজগারে প্রিমিয়াম গোনার বদলে গ্রাহকের যে-সুরক্ষা পাওয়া উচিত, এই বিমা বিলে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হয়েছে। স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে পলিসি বিক্রির ব্যাপারে। যেমন—
• ভুল বুঝিয়ে পলিসি বিক্রির ক্ষেত্রে এজেন্টদের জরিমানার সর্বোচ্চ অঙ্ক বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
• গ্রাহককে ভুল বুঝিয়ে বিমা বেচলে বা নিয়ম-কানুনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সংশ্লিষ্ট আইন ভাঙলে বিমা সংস্থাগুলিরও ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
• টানা তিন বছর প্রিমিয়াম দেওয়া হয়ে গেলে, সংস্থা সেই পলিসি বাতিল করতে পারবে না। আগে গ্রাহক অনিচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দিলে, পলিসি চালুর ২ বছরের মধ্যে তা বাতিল করতে পারত সংস্থাগুলি। আর ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও কিছু লুকিয়ে ভুল তথ্য পেশ করার ক্ষেত্রে তা বাতিল করা যেত যে কোনও সময়ে। ফলে ওই সময়ের মধ্যে বিমাকারীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ত।
• গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে আইআরডিএ-র হাতে।
লেখক এইচডিএফসি লাইফ ইনশিওরেন্সের এমডি-সিইও
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy