Green stocks are good options for future but need cautious steps dgtl
Stock Market
Green stocks: পরিবেশবান্ধব পণ্য সংস্থা আগামী দিনের বাজি, নতুন সংস্থায় লগ্নির সাবধানতাও দরকার
গ্রিন স্টকস একটু দেখে শুনে কেনাই ভাল। কারণ কায়েমী স্বার্থ সুযোগ নেবে। ছোট লগ্নিকারীদের একাংশ সেগুলি কিনে, পরে আর তা লাভ রেখে বেচতে পারবেন না।
নীলাঞ্জন দে
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ১১:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
পরিবেশবান্ধব ব্যবসা বিনিয়োগের বাজারে আসল বাজি হয়ে উঠতে পারে। ইতিমধ্যে বহু দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক ও খুচরো, এই সব ব্যবসায় টাকা লগ্নি করতে শুরু করেছে। এরই সঙ্গে বাজারে চলছে একটু নতুন শব্দবন্ধ। ইএসজি। ইকনমিক বা আর্থিক, সোশ্যাল বা সামাজিক, গভর্ন্যান্স বা পরিচালন ব্যবস্থা।
০২১১
এখন আর ব্যবসায়িক সংস্থাকে শুধুই তার লাভের অঙ্কে বিচার করা হয় না। কোনও সংস্থার স্থায়িত্বের বিচারে এখন দেখা হয় তার আর্থিক শক্তি, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং তার পরিচালন ব্যবস্থা এই দায়বদ্ধতার প্রতি আনুগত্য। আর একেই ছোট করে বলা হচ্ছে ইএসজি। আবার এই শ্রেণির সংস্থার শেয়ারকে গ্রিন স্টকস বা পরিবেশ বান্ধব সংস্থার শেয়ার হিসাবেও অভিহিত করা হচ্ছে।
০৩১১
এই মুহূর্তে বাজারে কিন্তু অনেক ‘ইএসজি’ শ্রেণির ফান্ড। তাদের ঝুলিতে সম্পদের অঙ্কও কম নয়। এ দেশের শেয়ার বাজারও বুঝছে লগ্নিকারীরা পরিবেশবান্ধব, অপ্রচলিত শক্তির মতো পরিবেশবান্ধব পণ্য প্রস্তুতকারক সংস্থার উপর বাজি ধরছে। আর এর প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি নানান বিদ্যুৎ সংস্থায় লগ্নির প্রবণতায়। তেমনই পুরনো প্রযুক্তির গাড়ি নির্মাতারাও যখন বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির দিকে ঝুঁকছে তখন তার তাৎক্ষণিক প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি তাদের শেয়ারে।
০৪১১
সমস্যা হল একটাই। এই জাতীয় পরিবর্তনের সময় ভাল আর মন্দের ফারাক করা মুশকিল হয়ে পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে। কিছু ছোট কোম্পানির স্টক জনপ্রিয়তা লাভ করবে অকারণেই। কায়েমী স্বার্থ সুযোগ নেবে। ছোট লগ্নিকারীদের একাংশ সেগুলি কিনে, পরে আর তা লাভ রেখে বেচতে পারবেন না। কেউ ডুববেন লোভে আর বাকিরা অজ্ঞানতার কারণে।
০৫১১
উদাহরণ হিসাবে ২০০০-০১ এর টেকনোলজি ‘বুম’ (পরে ‘ব্লাস্ট’) মনে করতে পারেন। কয়েকটি বড় কোম্পানির সঙ্গে সঙ্গে এক গুচ্ছ ছোট (একাংশ ক্ষুদ্রও ছিল) সংস্থার শেয়ার লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল। তাদের বেশির ভাগেরই আর খোঁজ পাওয়া যায় না। আবার ২০০৭-০৮ সালে একাধিক ছোট-মাঝারি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সংস্থার উপর লগ্নিকারীদের নজর ছিল। এদেরও একটা বড় অংশ হারিয়ে গিয়েছে।
০৬১১
ইতিহাস বলে শেয়ার বাজারে অনেক সময়েই মানুষ সংস্থার মূল শক্তির কথা না ভেবেই ছুটতে থাকে কে কী শেয়ারে বিনিয়োগ করছে সেই খবরের উপর। যেমন যদি শোনা যায় কোন নামজাদা ইনভেস্টর নিজের পোর্টফোলিওর জন্য বিশেষ কোনও শেয়ারে নজর দিয়েছেন তখনই দৌড় শুরু হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। বেনো জল তখনই ঢোকে, নিম্নমানের স্টক নিয়ে উত্তেজনা বাড়ে। পরে লিকুইডির অভাব হওয়া কেউ রুখতে পারে না, বিক্রি করার সময় হোঁচট খেতে হয়, তুলনায় অল্প দামে ছেড়ে দিতে হয়। কারণ কেনার লোক পাওয়া যায় না।
০৭১১
এই মুহুর্তে এমনই হয়ত হচ্ছে সৌর বা অপ্রচলিত শক্তি প্রস্তুতকারী সংস্থার শেয়ারে। হচ্ছে বৈদ্যুতিক শক্তি নির্ভর যান তৈরির কারখানায়। বেশ কিছু সংস্থা এসে গিয়েছে এই সমস্ত ব্যবসায়। আগামী দিনে এই ক্ষেত্রগুলি থেকে আইপিও বাজারে আসবে।
০৮১১
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের মতে, তুলনায় অনামী শেয়ারের বাজারে হাত বদলের তথ্য খুঁটিয়ে দেখা উচিত। হঠাৎ যদি বাড়ে (বিনা কারণে, ভাল লাভ বা বিশেষ কোনও কারণ যা সংস্থার ব্যবসায় প্রভাব ফেলবে), তা হলে যথাযথ পরীক্ষা না করে কেনা উচিত নয়।
০৯১১
সংস্থার রেভেনিউ বা রোজগার ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে কি না, তাও বুঝে নেওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনে তা কোন দিকে যাচ্ছে, তা অবশ্য অত সহজে বলা যায় না। ম্যানেজমেন্টের ঘোষণার উপর নির্ভর করতে হয়, তবে তার সত্যতা যাচাই অনেক ক্ষেত্রেই দুরূহ। ব্রোকারদের রিপোর্টও অনেক লগ্নিকারীর দরকার পড়ে, বিশেষত যেখানে কেনা বা বিক্রি করার (হোল্ড করাও হতে পারে) পরামর্শ দেওয়া থাকে।
১০১১
মার্কেটে কায়েমি স্বার্থ প্রচুর, অনেক ভাবেই তা প্রতিফলিত হয় স্টক ভ্যালুয়েশনে। ছোট, সাধারণ লগ্নিকারী সে সবের ব্যাপারে যেন সতর্ক থাকেন, না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অসম্ভব নয়।
১১১১
‘গ্রিন স্টক’ এমনই এক বদলের মুখে। কাজেই সাবধানে এগোলেই মঙ্গল। চালু ও নামী কোম্পানির শেয়ার যা সূচকের অংশ পেশাদার ফান্ড ম্যানেজারও কেনেন, সেখানে পা পিছলে যাওয়ার সম্ভবনা কিছুটা কম। কিন্তু একেবারে নতুন, ও একদমই ছোট পরিসরে থাকা, কোম্পানি নিয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠা হয়তো সব সময় ঠিক ফল নাও দিতে পারে ।