ওড়িশি নৃত্যের প্রবাদপ্রতিম গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র। সম্প্রতি আইসিসিআর-এ তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে ওড়িশি ডান্সারস ফোরামের সদস্যবৃন্দ। দুই দিন ব্যাপী এই নৃত্যোৎসবের সূচনা হয় রঞ্জাবলী দে পরিবেশিত গুরুবন্দনার মাধ্যমে। এরপর পুরুষ ও প্রকৃতির মিলিত রূপটিকে অর্ধ্বনারীশ্বর নৃত্যপদটি সুন্দর অভিব্যক্তি সহকারে দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত করেন রাজীব ভট্টাচার্য। পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীলাঞ্জনা মুখোপাধ্যায়ের ভাগবতী স্ত্রোত্রম্ নৃত্যপদ দুটিতে তাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। তবে শাশ্বতী সরকার তথা কলাক্ষেত্রম্ পরিবেশিত দুর্গা ও দেবমিত্রা সেনগুপ্তর বর্ষার উপর আধারিত ‘মারে বানো ধারা’ নৃত্যপদে দেবমিত্রার পদকর্ম ও মুখজ অভিনয় মনে রাখার মতো। এছাড়া বেশ কিছু ওড়িয়া সঙ্গীত ও ভজনের উপর আধারিত সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে রীণা জানা, মায়া ভট্টাচার্য, কাকলি বসু এবং সম্প্রদায়। সহকারী শিল্পীদের পরিবেশনে আরও যত্নবান হওয়া উচিত ছিল। তুলনায় ছন্দমঞ্জরীর কিরওয়ানী পল্লবী, সয়োমিতা দাশগুপ্ত ও সুবিকাশ মুখোপাধ্যায়ের যুগমাদ্বণ্ড পল্লবী, অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজনীতা মেহরার হংসধ্বনি পল্লবী, কৃষ্ণেন্দু রায় ও অর্পিতা ভেঙ্কটেশ পরিবেশিত শঙ্করাভরনম্ পল্লবী ছিল চোখে পড়ার মতো। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে সৃজন পরিবেশিত বন্দেমাতরম্ দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। বিষ্ণুবন্দনা ছিল সৃজনের আরও একটি অভিনব উপস্থাপনা। গুরু রতিকান্ত মহাপাত্রের নিখুঁত নৃত্যবিন্যাস ও প্রতিটি শিল্পীর পরিশীলিত ও পরিমার্জিত দেহভঙ্গিমার অপূর্ব মেলবন্ধন অনুষ্ঠানটিকে নান্দনিক করে তোলে। বিশেষত কুব্জার মোক্ষলাভের অংশটিতে রাজশ্রী, প্রীতিশা ও মনোস্মিতার দক্ষ অভিনয় অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৃত্তিকা ভট্টাচার্যের মোক্ষম্ নৃত্যপদটির মাধ্যমে।
পূর্ণ আমেজ
পিনাকী চৌধুরী
সম্প্রতি আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল যোধপুর পার্ক গীতিকা প্রযোজিত ‘ফাগুনে বসন্তে’ শীর্ষক নৃত্য-গীত সমৃদ্ধ এক অনুষ্ঠানের। ঋতুরাজ বসন্ত যেন আমাদের জীবনে পূর্ণতা নিয়ে আসে, মন-প্রাণ রাঙিয়ে দিয়ে যায়। এইরকম এক সুন্দর ভাবনার প্রতিফলন ঘটল এদিনের অনুষ্ঠানে। কখনও কবিতার কোলাজ, আবার কখনও গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন। শুরুতেই সমবেত সঙ্গীত ‘নীল দীগন্ত’, তার সঙ্গে রুবেনা চট্টোপাধ্যায় এবং দেবজিত মুখোপাধ্যায়ের নৃত্য পরিবেশন বেশ লাগে। সুছন্দা ঘোষ এদিন দুটি সঙ্গীত পরিবেশন করেন, ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি’ এবং ‘ও মঞ্জরী’। পরিবেশনার গুণে সুখশ্রাব্য। সঙ্গে ছিল রুবেনার নৃত্য পরিবেশন। অপর শিল্পী অরিজিৎ রায়চৌধুরীর কণ্ঠে ‘জাগো বসন্ত’, রুদ্র দত্ত’র কণ্ঠে ‘এ কি লাবণ্যে’, ‘আজি কমল মুকুল’ গানটি শিল্পী গাইলেন দরদ দিয়ে। ঈশিতা দাস অধিকারীর কণ্ঠে ‘হোরী খেলা’ কবিতায় নির্মেদ উচ্চারণ শুনতে বেশ লাগে। প্রদীপ দত্ত গাইলেন ‘অনন্তেরো বাণী তুমি’ গানটি। অপর শিল্পী দীপাবলি দত্তের কণ্ঠে ‘বাসন্তি ভুবনমোহিনী’ এবং একটি দাদরা ‘রংগ সারী গুলাবি চুনরিয়া রে’ শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণ করে। ভাল লাগে বাচিক শিল্পী কাজল সুরের আবৃত্তি ‘দেখা হবে’। অপর এক শিল্পী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘দিয়ে গেনু বসন্তেরো’ গানটি পরিবেশনায় আন্তরিকতার অভাব লক্ষ করা যায়। মধুমিতা বসুর কণ্ঠে মন্দাক্রান্তা সেনের কবিতা ‘অর্জুন কৃষ্ণচূড়া কথা’ শুনতে ভাল লাগে। তবে চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্তের গাওয়া গান ‘আলো
ছায়া দোলা’ এদিনের সেরা প্রাপ্তি।
অনুষ্ঠান সংযোজনায় ছিলেন মধুমিতা বসু।
পরম্পরায়
সম্প্রতি অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হল শেক্সপিয়রের সাড়ে চারশো জন্মবর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠান। সেই আবহেই মঞ্চগানের পরম্পরায় শেক্সপিয়রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ রূপান্তর কথায় ও গানে উপস্থাপন করলেন দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও রাগসঙ্গীত, লোকসঙ্গীত, কখনও মূল বিদেশি গানের অনুরণনে মাতিয়ে দিলেন শিল্পী। সে দিন শুরুতেই গাইলেন দীনবন্ধু মিত্রের নবীন তপস্বিনীর গান ‘মালতীর মালা গামচা হারায়ে’। পরে মধুসূদন দত্তের ‘তারে না হেরে আঁখি ঝুরে’। ম্যাকবেথের ডাইনি কথার রূপান্তর রবীন্দ্রনাথের ভাষায় আবার গিরিশচন্দ্রের অনুবাদে মঞ্চগান ‘ধলা কালী কটা লালী’তে মিলল মূলেরই ছন্দ-সুর। শিল্পী শেষ করলেন ‘ওথেলোর’ মঞ্চগানে যেখানে শেক্সপিয়রের রূপায়ণে মিলেছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘পুরানো সেই দিনের কথা’।
শুধু গান নয়
সম্প্রতি বাংলা অ্যাকাডেমিতে ‘আবির্ভাব’ আয়োজন করেছিল গান-কবিতা-আবৃত্তির অনুষ্ঠান। শুরুতেই তাপস নাগ পরিবেশন করলেন রবীন্দ্রনাথের ‘বোঝাপড়া’ কবিতাটি। অন্যান্য আবৃত্তিকারদের মধ্যে মধুছন্দা তরফদার ও নীহারেন্দু ভট্টাচার্যের পাশাপাশি অন্যান্যরাও সাড়া জাগায়। রবীন্দ্রনাথ গৌতম স্বল্প পরিসরে নিজেকে তুলে ধরেন। শিশুশিল্পী দেবরূপ নাহার মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে। স্বরচিত কবিতা পাঠে অগ্নিদীপ নাগ ছিলেন আত্মমগ্ন। কৃষ্ণা মজুমদার সম্ভাবনাময় শিল্পী। সঙ্গীতাংশে সুছন্দা ঘোষ তাঁর নামের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন। এছাড়া অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে মধুমিতা ঘোষ ভট্টাচার্য, কাকলি দেব, সুচিন সিংহ, চন্দ্রা মহালানবীশ, মালবিকা ভট্টাচার্য, দীপ্তি গুহ, শুদ্ধদেব সান্ন্যাল ছিলেন স্বচ্ছন্দ। সংযোজনায় ছিলেন মৌ গুহ।
এখনও তিনি
সম্প্রতি বঙ্গীয় সঙ্গীত পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। অবশ্য এর আগেও এই সংস্থা বহু গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্বর্ধনা দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত রবিশঙ্কর, মান্না দে, ভি বালসারা, গিরিজা দেবী প্রমুখ। এ বছর সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের হাতে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দিলেন সংস্থার কর্ণধার সুবোধ গঙ্গোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy