E-Paper

রবিকন্যাকে যথাযোগ্য সম্মান

সঙ্গীত পরিবেশনায় শিল্পীরা

সঙ্গীত পরিবেশনায় শিল্পীরা

শ্রীনন্দা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২৫
Share
Save

সম্প্রতি রবি পরম্পরা দু’দিন ব্যাপী আয়োজন করেছিল ‘কে গো অন্তরতর সে’ সঙ্গীতানুষ্ঠান। প্রথম দিনের অনুষ্ঠান ‘শুনেছে সে সঙ্গীতের মতো’ ভাষ্য ও সঙ্কলন ছিল অমিত দাশগুপ্তের। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও গবেষণা এই সঙ্কলন। ভাষ্য থেকে আমরা জানতে পারি, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সেই সময়ের প্রেক্ষাপট। কখনও জানালেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ নিষিদ্ধ হওয়ার কাহিনি। সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথের ভূমিকা ও শরৎচন্দ্রের প্রতিক্রিয়া। ‘তোর আপনজনে ছাড়বে তোরে’ গানে ঈপ্সিতা প্রামাণিক স্বচ্ছন্দ। মনে গেঁথে গেল ‘ওরে ভীরু’, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ (প্রিয়ঙ্কা চট্টোপাধ্যায় ও চৈতালী বন্দ্যোপাধ্যায়) সুন্দর ছবি আঁকল। প্রসঙ্গত আসে ক্ষুদিরাম বসু ও অন্যান্য বাঙালির ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দেওয়ার কথা। আসে কৃষ্ণগোপাল চৌধুরীর কথা, যাঁর কণ্ঠে ফাঁসির মঞ্চেও ছিল রবীন্দ্রনাথের গান। এঁদের প্রাণে ছিল সেই মন্ত্র ‘ও আমার দেশের মাটি’। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে ধৃত কল্পনা দত্তের মুক্তি চেয়ে রবীন্দ্রনাথের বারবার অনুরোধের কথা মনে আনে দেশপ্রেমের কথা। থেকে যায় গান। ডগলাস হত্যাকাণ্ডে ধৃত প্রদ্যোৎকুমার ভট্টাচার্য জেলের সেলে বসেই গেয়ে ওঠেন ‘আসা যাওয়ার পথের ধারে’। শাঁওলি দাশগুপ্ত ও সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে গানের যথার্থ রূপ ফুটে ওঠে। কী অমোঘ শক্তি এই গানের! জালিয়ানওয়ালাবাগের শতশত মানুষের মৃত্যু রবীন্দ্রনাথকে কী ভাবে বিচলিত করেছিল, তা আবার এই ভাষ্য স্মরণ করাল। নাইটহুড বর্জন ও সেই প্রভাতে গেয়ে ওঠা গান সময়টিকে সবার সামনে ফিরিয়ে আনে। সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’ মুগ্ধ করে।

দ্বিতীয় দিন ছিল ‘সব হতে আপন’ সঙ্গীতানুষ্ঠান ও অনিতা পালের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান। অনিতা পালের গাওয়া ‘আমার একটি কথা’, ‘তুমি যে আমারে চাও’ ও ‘আজ যেমন করে গাইছে’ মুগ্ধ করে। মুক্তছন্দের গানেও যে একটি সুন্দর ছন্দ থাকে, তা সুচিত্রা মিত্রের কাছেই শিক্ষণীয়। অভিজিৎ পাল ও মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের পাঠ অনুষ্ঠানকে সম্পূর্ণ করে। সমবেত সঙ্গীত ‘বিশ্ববিদ্যা তীর্থপ্রাঙ্গণ’, ‘জাগো জাগো রে’ প্রশংসনীয়। ‘এই তো ভাল লেগেছিল’ গানের কিছু অংশ পাঠ করায় নতুনত্বের ছোঁয়া পেলাম। চমৎকার গবেষণামূলক এই অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দিকটিতে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন। ‘স’-এর উচ্চারণ কানকে পীড়া দেয়। ভিডিয়োগ্রাফিতে আরও অনেক যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল। সাল-তারিখের দিকে নজর না দিলে ভুল বার্তা পৌঁছয়। শান্তিদেব ঘোষের কথা ও শান্তিনিকেতনের নানা গৃহের ছবি দেখানো হল। শান্তিদেব ঘোষের বাড়ি— যেখানে সুচিত্রা মিত্র আজীবন শিক্ষাগ্রহণ করেছেন, সেই বাড়ির ছবি দেখালে সম্পূর্ণ হত। বিপ্লব মণ্ডল, যিনি সুচিত্রা মিত্রের সঙ্গে বহু দিন যুক্ত ছিলেন— তাঁর বাজনা আজও অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও দেবাশিস হালদার মুগ্ধ করেন। সুচিত্রা মিত্র স্মরণের এই অনুষ্ঠান ওঁর দেখানো পথেই সঠিক সময়ে শুরু হয় এবং এর অত্যন্ত রুচিশীল মঞ্চ শ্রদ্ধা কাড়ে।

অনুষ্ঠান

  • সম্প্রতি কলকাতার শিশির মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল একটি সঙ্গীত সন্ধ্যা। আয়োজনে উত্তরপাড়া রবিরাগ। সঙ্গীতশিল্পী মায়া সেনের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন তাঁর শিষ্য সৌমিত। মায়া সেনের শিষ্যরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন কথায় ও গানে। উপস্থিত ছিলেন বিভা সেনগুপ্ত, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, রাজশ্রী ভট্টাচার্য, অপলা বসু সেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন মধুমিতা বসু। বিভা সেনগুপ্তর কণ্ঠে শোনা যায় ‘আজি দক্ষিণপবনে’র মতো গান। স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত এ দিনের অনুষ্ঠানে গানের পাশাপাশি স্বরচিত কবিতাও পাঠ করেন।
  • সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সঙ্গীতশিল্পী অজয় সিংহ রায়ের স্মৃতিতে এক মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘বন্দীশ’ (কসবা)। অনুষ্ঠানে ‘রাগ ও রবি’ শীর্ষক একটি সিডি প্রকাশ করেন প্রধান অতিথি শিল্পী সমর সাহা। অনুষ্ঠানের সূচনায় অজয় সিংহ রায় সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন অম্লান দত্ত, ভবানীশঙ্কর দাশগুপ্ত ও শান্তা দেব। প্রথম শিল্পী সোহিনী রায়চৌধুরী ঠুমরি, দাদরা ও ভজন পরিবেশন করেন। তবলা সঙ্গতে ছিলেন ইমন সরকার ও হারমোনিয়ামে দেবাশিস অধিকারী। এর পর ছিল সেতার ও সন্তুরের যুগলবন্দি। সেতারে সঙ্গীতাচার্যের শিষ্য পার্থপ্রতিম রায় ও সন্তুরে সুবীর মুখোপাধ্যায়। রাগ চারুকেশিতে আলাপ, জোড়, ঝালা এবং ঝাঁপতাল ও ত্রিতাল গত পরিবেশন করেন তাঁরা। দর্শকদের অনুরোধে চৈতি ধুন বাজিয়ে অনুষ্ঠানে দাঁড়ি টানেন। এই পর্বে তবলায় ছিলেন অমিতানন্দ রায়। অনুষ্ঠানের শেষ শিল্পী কর্নাটকের পণ্ডিত অশোক নাদগিড় পরিবেশন করেন খেয়াল এবং ভজন। তবলা সঙ্গতে ছিলেন রাজনারায়ণ ভট্টাচার্য ও হারমোনিয়ামে সায়ন চট্টোপাধ্যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন মৌমিতা পাল। আয়োজনে ‘বন্দীশ’-এর সম্পাদিকা সুলগ্না রায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rabindranath Tagore Sarat Chandra Chattopadhyay

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।