Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বাঙালির হাতে চাঁদ

স্বপ্ন দেখানো একটি দলে ঢাকুরিয়ার ছেলে! খোঁজ দিচ্ছেন অরিজিৎ চক্রবর্তীসব কিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরের শেষে চাঁদের মাটি ছুঁতে চলেছে এক বাঙালি ছেলের আবিষ্কার।শুধু বাঙালি নয়। তিনি কলকাতার। ঢাকুরিয়ার ছেলে।বয়স মাত্র পঁচিশ।নাম রুদ্র ভাস্বত রায়চৌধুরী।

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সব কিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরের শেষে চাঁদের মাটি ছুঁতে চলেছে এক বাঙালি ছেলের আবিষ্কার।

শুধু বাঙালি নয়। তিনি কলকাতার। ঢাকুরিয়ার ছেলে।

বয়স মাত্র পঁচিশ।

নাম রুদ্র ভাস্বত রায়চৌধুরী।

‘‘ভাবতেই পারছি না আমাদের ইনোভেশন চাঁদে যেতে পারে,’’ চেন্নাই থেকে ফোনে বলছিলেন রুদ্র। সাউথ পয়েন্টের প্রাক্তন ছাত্র। এখন মাস্টার্স করছেন ‘আইআইটি মাদ্রাজ’-এ।

রুদ্র ভাস্বত রায়চৌধুরী

যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠা। ঢাকুরিয়ার বাড়িতে ফোন করে বাবা-মা, কাকা-কাকিমা, খুড়তুতো দিদি-ভাইকে সুসংবাদটা দিলেও, বিরাশি বছরের ঠাকুমাকে এখনও কিছু বলেননি। সকালে ‘আনন্দবাজার’-এর এই খবরটা দিয়েই ‘সারপ্রাইজ’ দিতে চান ঠাকুমাকে!

এ বছর চাঁদে পাড়ি দেবে ‘টিমইন্ডাস’-এর পাঠানো যান। আর সেই চন্দ্রাভিযানে যোগ দেওয়ার জন্য পঁচিশ বছরের কমবয়সিদের এক বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়। তিন হাজার এমন আবিষ্কারের মধ্য থেকে যে পঁচিশটা বাছাই করা হয়েছে, রুদ্রর টিম লুনার ক্রুসেডার তার একটি।

ভোপালের রামকৃষ্ণ সোয়েন ও ভবানী সিংহের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি তৈরি করেছেন ‘স্মার্টস্কোপ’। আপাতদৃষ্টিতে সরল একটি ‘ডিভাইস’। যেখানে মামুলি স্মার্টফোনকে ব্যবহার করা হচ্ছে মাইক্রোস্কোপ হিসেবে।

‘‘স্মার্টফোন তো এখন অনেকের হাতে। আমরা সেই স্মার্টফোনের ক্যামেরাকে ব্যবহার করছি মাইক্রোস্কোপ হিসেবে। নাম দিয়েছি ‘স্মার্টস্কোপ’। বেঙ্গালুরুতে ড. সুনীল লক্ষ্মণের ল্যাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম অনেক দিন ধরে। ল্যাব২মুন-এর প্রতিযোগিতার খবর পেয়েই সাবমিট করে দিই। তার পর এখনও ভাবতে পারছি না পনেরোটা দেশের তিন হাজার সাবমিশনের মধ্য থেকে আমাদেরটা সিলেক্টেড হয়েছে,’’ বেশ উত্তেজিত রুদ্র।

এই সেই স্মার্টস্কোপ

এর মধ্যেই তাঁদের তৈরি ‘স্মার্টস্কোপ’‌য়ে রক্তের নমুনা, ব্যাকটেরিয়া সফলভাবে পরীক্ষিত হয়েছে। বলছিলেন, ‘‘যে কোনও কিছুকে ৩৪০ গুণ বড় করে দেখা যাবে আমাদের যন্ত্রের নীচে রেখে। সবথেকে বড় কথা হল, পুরো ব্যবস্থাটার ওজন ১৭০ গ্রামেরও কম। খরচ সাড়ে মাত্র তিন হাজার টাকা।’’

ওঁদের দাবি, চাঁদের মাটির গুণাগুণ বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না ইত্যাদি নানান কিছু পরীক্ষা করা যাবে এই স্মার্টস্কোপ-এ।

তবে এটিকে শুধু চাঁদে পাঠানোই একমাত্র লক্ষ্য নয় এই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রের। চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও ব্যাপক কাজে লাগবে তাঁদের বানানো ‘স্মার্টস্কোপ’— এমনটাই মনে করেন তিনি।

‘‘গ্রামেগঞ্জে যেখানে প্যাথোলজি ল্যাবের অভাবে রক্ত পরীক্ষা করা যায় না, সেখানে আমাদের এই যন্ত্র আমূল পরিবর্তন এনে দেবে। নামমাত্র খরচে করা যাবে রক্ত পরীক্ষাও। আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্যও ছিল সেটা। দামি আর ভারী মাইক্রোস্কোপের বিকল্প যদি কিছু করা যেতে পারে,’’ বলছিলেন রুদ্র।

তবে বাঙালি ছেলের তৈরি ‘ডিভাইস’ শেষমেশ চাঁদের মাটি ছুঁতে পারল কি না, সেটা জানতে আরও একটু অপেক্ষা করতেই হবে। যদিও বাড়ির চিলেকোঠা থেকে দেখা চাঁদে যে নিজের বানানো যন্ত্র কোনও দিন যেতে পারে — স্বপ্নেও ভাবেননি রুদ্র।

এ সুযোগ যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার মতোই!

অন্য বিষয়গুলি:

SmartScope
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy