অনেক সময়ই এক একটা আসবাবে চোখ আটকে যায়। কিন্তু নিজের বাড়ির আসবাব বা রঙের সঙ্গে মানাবে না বলে আমরা পিছিয়ে আসি। এ বার বরং কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে সেই আসবাবই বাড়িতে নিয়ে আসুন। এই আসবাবই হবে আপনার বাড়ির স্টেটমেন্ট পিস। কী এই স্টেটমেন্ট পিস, কী ভাবে তা বাছবেন নিজের বা়ড়ির জন্য, জেনে নিন এ বার।
আগে বাছুন, পরে কিনুন
•কথায় আছে, যদি সবই স্পেশ্যাল হয়, তা হলে কোনওটারই বিশেষত্ব থাকে না। তাই ঘর ভর্তি কারুকার্য করা বা রঙিন আসবাব না কিনে একটাই আকর্ষক আসবাব বাছুন সেই ঘরের জন্য।
•ঘর সাজানোর সময়ে সাধারণত ঘরের রঙের সঙ্গে মানানসই রঙের আসবাবই বাছা হয়। কিন্তু স্টেটমেন্ট পিস বাছার সময়ে মাথায় রাখবেন, সেটা যেন ঘরের রঙের কনট্রাস্ট কালারের হয়। ধরুন, পুরো ঘর সাদা বা হালকা রঙের দেওয়ালে হালকা রঙের আসবাব দিয়ে সাজানো। সেখানে একটা পাঁচমিশেলি রঙের দেওয়ালচিত্র সেই ঘরের স্টেটমেন্ট পিস। আপনার পুরো বাড়িটা যে ধাঁচে সাজানো, সেই ধরন ভাঙতেই এই ধরনের আসবাবের ব্যবহার করতে পারেন।
•বিপরীত ধরনের আসবাব বাছুন। হালকা ব্যাকগ্রাউন্ডে গাঢ়, গোলাকার আসবাবের মাঝে ষড়কোণ, কাঠের মাঝে মেটাল বা মডার্ন আসবাবের মাঝে অ্যান্টিক।
•এই ধরনের আসবাব বাছাটাই আসল। কেনার সময়ে আসবাবের পালিশ, রং, গুণাগুণ যাচাইয়ের জন্য তা কাছ থেকে দেখা জরুরি ঠিকই। কিন্তু স্টেটমেন্ট পিস একটু দূর থেকেও এক বার পরখ করে নিন। দেখুন তা বাকি সব আসবাবের মাঝে নজর কাড়ছে কি না। নিজের বাড়ির কথাও মাথায় রাখুন। ঘরের রং বা আকারের সঙ্গে মানানসই হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখুন।
•স্কেলটা মাথায় রাখতে হবে। যে জিনিসটা কিনছেন, তার আয়তন যেন ঘরের অন্যান্য আসবাবের তুলনায় বিশাল বা একদম ছোট্ট না হয়ে যায়! তা হলে দৈনন্দিন জীবনে তা ব্যবহার করা মুশকিল হবে।
•ঘরের কোথায় স্টেটমেন্ট পিস রাখবেন, সেটাও বিবেচ্য। একটা আকর্ষক আসবাব কিনে তা ঘরের এমন জায়গায় রাখবেন না, যেখানে দৃষ্টিপথে বাধা তৈরি হতে পারে। ধরুন, সোফার ঠিক পিছনে একটা দারুণ ল্যাম্পস্ট্যান্ড রাখার কোনও মানে নেই। বরং সেই সুন্দর ল্যাম্পস্ট্যান্ডটি সোফা থেকে একটু দূরে এমন জায়গায় রাখুন, যা সহজেই চোখে পড়ে।
কত শত স্টেটমেন্ট পিস
বিভিন্ন ধরনের আসবাবে বা ঘরের একটা অংশের সাজ পাল্টে কী ভাবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু তৈরি করবেন, সেটা জেনে নিন।
শ্যান্ডেলিয়র : খাবার টেবিল বা বৈঠকখানায় বসার জায়গার উপরে একটা সুন্দর ঝাড়লণ্ঠন ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
আয়না: কোনও একটা ঘরের দেওয়াল জুড়ে অ্যান্টিক মোটিফের বর্ডারওয়ালা আয়না বসিয়ে নিন।
চেয়ার: বোহো চেয়ার এখন ভীষণ ইন। রংবেরঙের কাপড় সাঁটা এই চেয়ার এনে ঘরের একটা কোণে বসিয়ে দিতে পারেন।
পেন্টিং: একটা দেওয়ালচিত্রও কিন্তু হয়ে উঠতে পারে স্টেটমেন্ট পিস। তবে খেয়াল রাখবেন, ঘরের রঙের সম্পূর্ণ বিপরীত রংই যেন ফুটে ওঠে সেই ছবিতে।
জানালা: ঘরে একাধিক কাঠের জানালা থাকলে, যে কোনও একটা জানালায় ব্যবহার করতে পারেন শকিং কালার।
কার্পেট: হাতে বোনা রঙিন কার্পেটও কিন্তু হয়ে উঠতে পারে আপনার ঘরের স্টেটমেন্ট পিস।
সেন্টার টেবিল: রাজস্থানি ছবি আঁকা, কাঠের নকশা কাটা, ধাতব রং করা সেন্টার টেবিল বাছতে পারেন বৈঠকখানার জন্য।
চাদর বা পর্দা: নতুন আসবাব রাখার জায়গা না থাকলে কুশন কভার, বেডকভার বা জানালার পর্দাতেও ঘরের ইমেজ বদলাতে পারেন।
মনে রাখবেন, একটা ঘরে একটাই স্টেটমেন্ট পিস রাখা ভাল। তবেই তা আকর্ষণ তৈরি করবে। সারা বা়ড়ি এ রকম অজস্র স্টেটমেন্ট পিসে ভরিয়ে ফেললে কিন্তু বাড়িটা দোকান মনে হবে।
নবনীতা দত্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy