নৃত্যশিল্পী সুতপা তালুকদারের তত্ত্বাবধানে সাউথ গুরুকুল সোসাইটির প্রয়াসে ‘গুরুকুল’ সম্প্রতি কলামন্দিরে মঞ্চস্থ করে মনোগ্রাহী নৃত্যসমারোহ ‘গুরুদক্ষিণা’। ওড়িশি নৃত্যে আধারিত এই নৃত্য সমারোহে গুরুকুলের সদস্য ছাড়াও রাজীব ভট্টাচার্য, অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাবর্নিক দে প্রমুখ নৃত্যশিল্পী ও তাদের গোষ্ঠীরা অংশগ্রহণ করে। গুরু রতিকান্ত মহাপাত্রের নৃত্যপরিকল্পনায় রাজীব ভট্টাচার্য ও তার সংস্থা পরিবেশিত গণেশ-বন্দনা ছিল সেদিনের প্রথম নিবেদন। ‘জটাটাবি’ নৃত্যপদটির মাধ্যমে শিবের আনন্দতান্ডব অপূর্ব দেহ ভঙ্গিমায় ও অভিব্যক্তি দ্বারা ফুটিয়ে তোলে সুতপা তালুকদারের সুযোগ্য শিষ্যরা। এছাড়া সিংহেন্দ্র রাগে আধারিত পল্লবী ও জয়দেবের গীতগোবিন্দ-গৃহীত ‘হরিরাভিসারিত’ নৃত্যপদ দুটিতে তার অনবদ্য নৃত্যবিন্যাস মুগ্ধ করার মতো। বিশেষত ‘ভজমনবামা’ নৃত্যপদটির মাধ্যমে রামচন্দ্রের পাদুকাস্তুতি ও পাদুকা সংক্রান্ত পুরাণে প্রচলিত গঙ্গাবতরণ, ধীবরের মোক্ষলাভ, অহল্যাখ্যান- কাহিনিগুলিকে নিখুঁত নৃত্যনির্মাণ ও পরিচালনার দ্বারা ছবির মতো দর্শকের কাছে উপস্থাপিত করে নৃত্য জগতে সুতপা তালুকদার তাঁর অবদানের কথা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন। পরে শিবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবেশিত ‘শান্তাকারনম’ ও সাবর্নিকের ‘ব্রক্ষ্মকমল’ পরিবেশিত ‘যুগ্মদ্বন্ত’ বেশ প্রশংসনীয়। সুবিকাশ মুখোপাধ্যায়ের অপূর্ব নৃত্য বিন্যাসে দেবদাসীদের শৃঙ্গার ও নিজেদের সুসজ্জিত করে তোলার প্রয়াসটিকে ‘জুরাবন্ধিনা’ নৃত্যপদটির মাধ্যমে পরিবেশিত করে দর্শক মন জয় করে ‘সংকল্প নৃত্যায়নের’ শিল্পিরা। এ ছাড়া পল্লবী ও স্বাগতমকৃষ্ণা-পদটির নৃত্যবিন্যাসে অর্ণবের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। নৃত্যপদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভিন্ন ভিন্ন মঞ্চসজ্জা ও শিঙা, মার্দলা, ডমরু, রামের পাদুকা, লৌহবৃক্ষ প্রভৃতির ব্যবহার ছিল অত্যন্ত অর্থবাহী ও অভিনব।
দ্বিতীয় দিনে কিছু নজরকাড়া নৃত্যপদে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy