Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

মানবাধিকারের ভারতীয় সংজ্ঞা প্রয়োজন, মত অমিতের

শাহের যুক্তি, ভারত ও বিশ্বের পরিস্থিতিকে কখনওই এক সূত্রে ফেলা উচিত নয়।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

মানবাধিকারের সংজ্ঞার ভারতীয়করণের উপরে জোর দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ২৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন, ভারত ও বিশ্বের পরিস্থিতি এক নয়। তাই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিরিখে এ দেশের মানবাধিকারের সংজ্ঞাকে ব্যাখ্যা করা ঠিক নয়। তাই কমিশনের শীর্ষ কর্তাদের কাছে মানবাধিকারের ভারতীয় ব্যাখ্যা নির্মাণের জন্য আজ সওয়াল করেন শাহ।

আজ নিজের বক্তব্যে অমিত শাহ একাধিক বার বোঝাতে চেয়েছেন, এ দেশে মানবাধিকার বলতে যা বোঝায় তা আসলে বিদেশি ধারণা। বিদেশিদের দৃষ্টিকোণ থেকেই এখনও পর্যন্ত ভারতে মানবাধিকারকে ব্যাখ্যা করে আসা হয়েছে। যা ঠিক নয়। ঠিক যে ভাবে বিজয়াদশমীর দিন নাগপুরে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত দাবি করেছিলেন, ‘লিঞ্চিং’ বা গণপ্রহারে হত্যা আসলে পশ্চিমি ব্যাপার। ‘লিঞ্চিং’ কোনও ভারতীয় শব্দই নয়। ভারতে যা ঘটে তা হল সামাজিক হিংসা। আজ অনেকটা সেই সুরেই অমিত শাহ বোঝাতে চেয়েছেন, গত ২৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক সূচকের নিরিখে এ দেশে মানবাধিকারের সংজ্ঞা ঠিক হয়েছে। যা পরিবর্তনের সময় এসেছে। কারণ এ দেশের কিছু নিজস্ব সমস্যা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সূচকে যা ধরা সম্ভব নয়। শাহের মতে, ‘‘মানবাধিকার মাপার আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে সব সময়ে এ দেশের সমস্যা ঠিক ভাবে প্রতিফলিত হয় না। তাই মানবাধিকারের প্রশ্নে নতুন দেশীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন।’’

শাহের যুক্তি, ভারত ও বিশ্বের পরিস্থিতিকে কখনওই এক সূত্রে ফেলা উচিত নয়। মানবাধিকার লঙ্ঘন মানে শুধু পুলিশি অত্যাচার বা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু বোঝায় না। বরং এর পরিধি আরও বাড়ানোর উপরে জোর দেন শাহ। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দেশের যে পাঁচ কোটি লোকের ঘর নেই, যে সাড়ে তিন কোটি লোকের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, যে পঞ্চাশ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাঁদের কি মানবাধিকার থাকতে পারে না?’’ তাঁর কথায়, পুলিশের অত্যাচার কিংবা নিরাপত্তাবাহিনীর হেফাজতে থাকা বন্দির মৃত্যুর যেমন মানবাধিকার রয়েছে, তেমনই সন্ত্রাসবাদ বা নকশাল হানায় নিহত ব্যক্তি বা পরিবারেরও ঠিক ততটাই মানবাধিকার রয়েছে। অমিতের বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে গত তিন দশকে চল্লিশ হাজার মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। নকশালবাদের জন্য দেশের একটি বড় অংশ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মানবাধিকার প্রশ্ন উঠলে সন্ত্রাস ও নকশালবাদের শিকার হওয়া মানুষের কথাও ভাবার সময় এসেছে।’’

গত সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনে একাধিকবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে শাসক শিবিরকে। সরকার-বিরোধিতায় মুখ খোলায় রাজরোষের শিকার হয়েছেন একাধিক বিশিষ্ট জন। এ নিয়ে বিরোধী শিবির সরব হলেও আজ অমিত শাহ দাবি করেন, ‘‘বর্তমান সরকার নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে সবর্দা সজাগ।’’ এর পরেই কমিশন কর্তাদের উদ্দেশে শাহ বলেন, ‘‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগগুলি উঠেছে, সেই তালিকা তৈরি করে দেওয়া হোক সরকারকে। খামতি মেটাতে তৎপর

হবে সরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Amit Shah BJP Human Rights Mob Lynching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE