Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Biplab Kumar Deb

‘পঞ্জাবি এবং জাঠদের বুদ্ধি কম’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিপ্লব দেবের

আলটপকা মন্তব্যের জন্য আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন বিপ্লব দেব।

ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিপ্লবের। —ফাইল চিত্র।

ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিপ্লবের। —ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ১২:৫২
Share: Save:

আলটপকা মন্তব্য করে ফের বিতর্কে জড়ালেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। বাঙালিদের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে জাঠ এবং পঞ্জাবিদের বুদ্ধি কম বলে মন্তব্য করলেন তিনি।এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তার জেরে শেষমেশ ক্ষমা চাইতে হয় বিপ্লবকে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রবিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিপ্লব দেব। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বলা হয়, বুদ্ধি এবং মেধার ক্ষেত্রে বাংলা এবং বাঙালিদের কখনও চ্যালেঞ্জ জানানো উচিত নয়। বুদ্ধিমত্তার জন্যই পরিচিত বাঙালি। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কেউ টক্কর দিতে পারবে না। ঠিক যেমন, পঞ্জাবি এবং জাঠরা পরিচিত তাঁদের শারীরিক গঠনের জন্য।’’

বিপ্লব আরও বলেন, ‘‘পঞ্জাবের মানুষজনকে পাঞ্জাবি বা সর্দার বলে সম্মোধন করি আমরা। ওদের বুদ্ধিসুদ্ধি তেমন নেই, তবে অত্যন্ত শক্তিশালী। গায়ের জোরে ওদের সঙ্গে পেরে ওঠা যাবে না। হরিয়ানায় জাঠদের একটা বড় অংশ বাস করেন। বলা হয়, বুদ্ধিসুদ্ধি কম থাকলেও জাঠদের শারীরিক গঠন মজবুত। জাঠকে চ্যালেঞ্জ জানালেই বিপদ। বাড়ি থেকে সটান বন্দুক নিয়ে হাজির হবে।’’

বিপ্লবের বক্তৃতার এই ভিডিয়োই টুইট করেছেন সুরজেওয়ালা।

আরও পড়ুন: ভারত মহাসাগরে চিনের বাড়াবাড়ি, আগামী বছরই সাবমেরিন ধ্বংসকারী বিমান হাতে পাচ্ছে ভারত​

বিপ্লবের বক্তৃতার একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এক জন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন কথা শোভা পায় না বলে এক দিকে যেমন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটাগরিকরা, তেমনই গোটা ঘটনায় বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিপ্লবের ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা লেখেন, ‘‘লজ্জাজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। ত্রিপুরায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পঞ্জাবের শিখ ভাইদের অপমান করেছেন। বুদ্ধিসুদ্ধি কম বলে অপমান করেছেন হরিয়ানার জাঠ সমাজকে।’’

বিপ্লবের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সুরজেওয়ালা আরও লেখেন, ‘‘এটাই বিজেপির আসল মানসিকতা। খট্টরজি, দুষ্মন্ত চৌটালা এখন চুপ কেন? মোদীজি বা নড্ডাজিই বা কোথায়? অবিলম্বে ক্ষমা চান এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন।’’

বিপ্লব দেবের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন প্রদেশ বাংলায় কংগ্রেস কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্রও। তিনি বলেন, ‘‘জাঠ এবং পাঞ্জাবিদের অপমান করেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সারা ক্ষণ সবকা সাথ সবকা বিকাশ আওড়ে চলেন, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এই নিন্দনীয় মন্তব্য কি তিনি সমর্থন করেন? মনোহরলাল খট্টর, হরদীপ পুরী এবং বিজেপির বাকি নেতারা কি বিপ্লব দেবের মন্তব্যকে সমর্থন করেন? এটাই কি বিজেপির আসল অবস্থান?’’

টুইটারে এ ভাবেই ক্ষমা চান বিপ্লব।

আরও পড়ুন: দেশে মোট আক্রান্ত ১১ লক্ষ ৫৫ হাজার, মৃত্যু ছাড়াল ২৮ হাজার​

এ নিয়ে বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা না হলেও, তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সোমবার টুইটারে ক্ষমা চেয়ে নেন বিপ্লব দেব। তিনি লেখেন, ‘‘আগরতলা প্রেস ক্লাবে পঞ্জাবি ও জাঠদের নিয়ে মানুষের কী ধারণা, তা-ই তুলে ধরেছিলাম মাত্র। কাউকে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। পঞ্জাবি এবং জাঠ, দুই সম্প্রদায়কে নিয়েই গর্ব বোধ করি। আমি নিজেও একটা দীর্ঘ সময় ওঁদের সঙ্গে ছিলাম। আমার অনেক বন্ধুও এই সম্প্রদায়ের অংশ। বিপ্লব আরও লেখেন, ‘‘আমার মন্তব্যে যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’

তবে এই প্রথম নয়, আলটপকা মন্তব্যের জন্য আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন বিপ্লব দেব। গত বছর নভেম্বরে তিনি বলে বসেন, বোমা মেরে ত্রিপুরার শিল্প এবং স্থাপত্য গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিল মুঘলরা। মহাভারতের সময়ও ভারতে ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের অস্তিত্ব ছিল বলেও দাবি করেন তিনি। হাঁস চরে বেড়ালে আপনাআপনি জলের অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায় বলে ২০১৮ সালে মন্তব্য করেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE