টি এন শেষন। ফাইল চিত্র।
‘শেষন বনাম নেশন’। এক সময়ে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টি এন শেষন সম্পর্কে এমনই স্লোগান দিতেন রাজনীতিকদের একাংশ। আজ চেন্নাইয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এনে গোটা দেশের ‘আইকন’ হয়ে ওঠা সেই শেষনের। বয়স হয়েছিল ৮৬। চেন্নাইয়ের এক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের শরীর কয়েক বছর ধরেই ভাল ছিল না।
১৯৩২ সালের ডিসেম্বর মাসে কেরলের পলাক্কড় জেলার তিরুনেল্লাইয়ে জন্ম তিরুনেল্লাই নারায়ণ আইয়ার শেষনের। পদার্থবিদ্যার স্নাতক শেষন এক সময়ে কাজ করতেন মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজে। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন সিভিল সার্ভিসে। পরে এডওয়ার্ড ম্যাসন ফেলোশিপ পেয়ে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন প্রশাসন সম্পর্কে। প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য পেয়েছিলেন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার আগে ক্যাবিনেট সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন শেষন। কিন্তু স্মরণীয় হয়ে আছে ১৯৯০ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তাঁর কার্যকালই।
সচিত্র পরিচয়পত্র চালু করা, ভোটে টাকা ছড়ানো বন্ধের মতো পদক্ষেপ করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এনেছিলেন শেষন। এর ফলে কম বিপাকেও পড়তে হয়নি তাঁকে। পদে পদে আক্রমণ করেছেন রাজনীতিকেরা। বোঝাতে চেয়েছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বেশি কড়াকড়ি করে মানুষকেই সমস্যায় ফেলছেন শেষন।
শেষনকে আক্রমণ করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুও। ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে সচিত্র পরিচয়পত্র চালু না হলে, ভোট করতে দেবেন না বলে জানিয়েছিলেন শেষন। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জ্যোতিবাবু বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে এক জন পাগল বসে রয়েছেন বলেই যত সব ঝামেলা হচ্ছে।’’ যে রাজনীতিকদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন, পরবর্তীকালে পা রেখেছিলেন তাঁদেরই আঙিনায়। গুজরাতের গাঁধীনগর কেন্দ্রে লালকৃষ্ণ আডবাণীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে সে যাত্রায় হার মানতে হয়েছিল তাঁকে।
শেষনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy