Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bihar Home

ধর্ষণের আগে ৬৭ রকমের মাদক খাওয়াতেন ‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’

এবার সামনে এল আরও একটি হোমের কথা।  মুজফফরপুরের যৌনপল্লীর কাছে চতুর্ভূজ স্থান নামে আরও একটি হোম চালাত এই ব্রজেশ ঠাকুর।  জুন মাসে এখান থেকেও নিখোঁজ হয়েছেন ১১ মহিলা ও ৪ নাবালিকা।

‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’ নামেই পরিচিত ছিলেন ব্রজেশ ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।

‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’ নামেই পরিচিত ছিলেন ব্রজেশ ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ১৫:২১
Share: Save:

শুধু চৌত্রিশ জন নাবালিকা নয়, ‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’ –এর ফাঁদে পড়েছিলেন আরও অনেক মহিলা। মুজফফরপুর ধর্ষণকাণ্ডে উঠে এল ব্রজেশ ঠাকুরের নাম, যাকে হোমের মেয়েরা চিনত ‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’ নামে। হোমে এই ব্রজেশ ঘুরে বেড়াত চাবুক হাতে। ভয়ে কাঁপত মেয়েরা।

সমাজের উপরতলাতে অবাধ গতিবিধি ছিল ব্রজেশের। তিনটি সংবাদপত্রের মালিক ব্রজেশের বিরুদ্ধে উঠেছে সীমাহীন নিষ্ঠুরতার অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের আগে জোর করে মাদক খাওয়ানো হত নাবালিকাদের। এ রকম ৬৭ রকমের মাদক মিলেছে হোম থেকে। ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত করে দেওয়া হত নাবালিকাদের।

আগেই সামনে এসেছিল সেবা সংকল্প সমিতির হোমের কথা। মুজফফরপুরের এই হোমে শিশুকন্যা ও কিশোরীদের ওপর ভয়াবহ অত্যাচারের খবরে স্তব্ধ হয়েছিল সারা দেশ। দিনের দিন দিন, রাতের পর রাত, নাবালিকাদের ওপর চলত নিরন্তর যৌন হেনস্থা, ধর্ষণ। ওযুধ খাইয়ে তাঁদের বেহুঁশ করে দেওয়া হত। কারও বয়সই আঠারোর বেশি নয়, আর ধর্ষণ করা হত নিয়মিত। ৪২ জন নাবালিকার মধ্যে ৩৪ জনের মেডিক্যাল রিপোর্টেই যৌন অত্যাচারের প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগে সবাই জানিয়েছে হোমটির চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার রবি কুমার রোশন আর ব্রজেশ ঠাকুরের নাম। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে বিহার পুলিশ।

বিহারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র।

এবার সামনে এল আরও একটি হোমের কথা। মুজফফরপুরের যৌনপল্লীর কাছে চতুর্ভূজ স্থান নামে আরও একটি হোম চালাত এই ব্রজেশ ঠাকুর। জুন মাসে এখান থেকেও নিখোঁজ হয়েছেন ১১ মহিলা ও ৪ নাবালিকা। মহিলাদের ‘সেবা’ করার জন্যই এই হোমটি খুলেছিল ব্রজেশ। আর সেবার নামে সবাইকেই যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হত। হোম হিসেবে তৈরি করা চতুর্ভূজ স্থান হয়ে উঠেছিল যৌনপল্লী। পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ মহিলাদের বয়স কুড়ি থেকে পঞ্চাশের মধ্যে। এই হোমটি চালাতে বিহার সরকারের সমাজকল্যাণ দফতরের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্যও পেয়েছিল ব্রজেশ। হোমে তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার। ধর্ষণের পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাতও করানো হত এখানেই।

আরও পড়ুন: পর্ন ভিডিয়োয় অভিনয় করে স্ত্রীকে পাঠালেন স্বামী, কেন জানেন?

হোম থেকে উদ্ধারের পর। ফাইল চিত্র

বিহারের হোমের এই নারকীয় চিত্র ও তার পিছনে থাকা প্রভাবশালী ব্রজেশ ঠাকুরের কথা প্রথম সামনে আসে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের একটি রিপোর্টে। অত্যাচারিত মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরাই প্রথম রিপোর্টটি সামনে আনেন। সমাজের ওপরতলার মানুষ ব্রজেশের স্বচ্ছন্দ চলাফেরা ছিল রাজনৈতিক জগতের উচ্চ মহলে। নাম জড়ায় বিহারের শাসকদলের একাধিক নেতারও। এরপরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার। গ্রেফতার করা হয় দশজনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: গো-রক্ষার নামে হিংসা ৪১৫০% বেড়েছে মোদী জমানায়!

অন্য বিষয়গুলি:

Bihar Home Rape Brajesh Thakur Muzaffarpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE