সাতারায় নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ফৈজাবাদে গিয়েছিলেন তিনি। সে জেলার নাম তখনও অযোধ্যা হয়নি। তবে সে দফায় রামলালা দর্শন করেননি নরেন্দ্র মোদী। এ বার ভোটের আগেও অযোধ্যার বিতর্কিত স্থলের ধারেকাছে ঘেঁষেননি তিনি। তিরিশ কিলোমিটার দূরে জনসভা করে ফিরে এসেছেন। দু’বার ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলেছেন। কিন্তু মন্দির নির্মাণ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি।
এ বার সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যার শুনানি শেষ। সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী আজ বলেন, ‘‘আদালত থেকে ইতিবাচক ফল আশা করছি। তবে এই নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। আমার ধারণা, রায়ের আগেই দু’পক্ষ থেকে ইতিবাচক কিছু আসবে।’’ তিনি রেখেঢেকে বললেও গত কাল থেকেই গেরুয়া শিবিরে উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। অনেকে ধরেই নিয়েছেন, রায় তাঁদের পক্ষেই আসবে।
আর তেমনটা হলে এ বার মোদীকে অযোধ্যায় চান সাধুসন্তরা। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাধুরা ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন, রামমন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজ যেন প্রধানমন্ত্রীর হাতেই হয়। ধুমধাম করে শুরু হবে মন্দির নির্মাণের কাজ। এত বছর ধরে গোটা হিন্দু সমাজ যার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য টুঁ শব্দটি করছেন না। তাঁদের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের রায় কী হবে, তা দেখেই তো সিদ্ধান্ত হবে! এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা চাই রায় ইতিবাচক হোক। তা সব পক্ষই মেনে নিক। বিচারপতিদের মধ্যে যদি মতভেদ থাকেও সে ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় আমাদের পক্ষে এলে পরিস্থিতির কোনও বদল হবে না। কিন্তু যদি উল্টো হয়?’’
এ নিয়ে খুব বেশি আশঙ্কা অবশ্য নেই বিজেপি শিবিরে। রায় পক্ষে না হলে কী হবে, এ প্রশ্নের জবাবে আজ গডকড়ী বলেন, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে সংখ্যালঘুরাও কোনও পথ বার করতে আগ্রহী।’’ আইন করে মন্দির তৈরির দাবি অনেক দিন ধরেই জানাচ্ছে সঙ্ঘ। খোদ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতও অধ্যাদেশ এনে মন্দির নির্মাণের দাবি তুলেছিলেন গত বছর। কিন্তু ভোটের আগে হিন্দুত্বের হাওয়াকে উস্কে দিয়ে কোনও লাভ নেই বলেই মনে করেছিলেন মোদীরা। তাঁরা ভোটে যান দেশভক্তির তাস খেলে। বিজেপির মন বুঝে মন্দির-আন্দোলনে বিরাম ঘোষণা করেছিলেন ভাগবতই।
তবে গেরুয়া শিবিরের একাংশ মনে করছে, রায় পক্ষে এলে পথ সুগম। পক্ষে না এলে সমীক্ষা হবে, মন্দির-আবেগ কতটা। সেই বুঝেই পা ফেলবেন মোদী। ‘মন্দির হয়ে গেল’ আর ‘মন্দির হবে’-র মধ্যে ফারাক আছে। আন্দোলন জিইয়ে রাখলে লাভ বেশি না আন্দোলন শেষ হলে? সময়ই বলবে, আসল পথ কোনটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy