অরুণ জেটলি বেঁচে থাকলে এমনটা হত না। রাজধানীর উপকণ্ঠে এক মাস ধরে চলে আসা কৃষক আন্দোলন নিয়ে সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল প্রবীণ বিজেপি নেতা সুশীল মোদীকে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহকেই এ বার ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামাল কেন্দ্রীয় সরকার। বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামায় এত দিন গেরুয়া শিবির থেকে ‘খালিস্তানি’, ‘নকশাল’ তকমা জুটছিল কৃষকদের। কিন্তু রাজনাথ জানিয়ে দিলেন, কৃষকরা দেশের মেরুদণ্ড। তাঁদের সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য কাম্য নয়।
বুধবার সপ্তম দফায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার আগে এ দিন সকালে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘কৃষকদের সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য একেবারেই কাম্য নয়। কৃষকদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল আমরা। ওঁরা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। শ্রদ্ধায় ওঁদের সামেন মাথা নত হয়ে আসে আমাদের। কৃষকরা আমাদের অন্নদাতা। মন্দার সময় নিজের কাঁধে দায়িত্ব নিয়ে ওঁরাই দেশকে সমস্যা থেকে বের করে আনেন।’’
কেন্দ্রীয় আইনকে ‘কৃষক বিরোধী’ বলে উল্লেখ করায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীকেও একহাত নেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘রাহুল আমার থেকে বয়সে ছোট। কৃষির ব্যাপারে ওঁর থেকে বেশি জানি আমি। কারণ একজন কৃষক-মায়ের গর্ভেই আমার জন্ম। কৃষকের ছেলে আমি। তাই কৃষকবিরোধী কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারি না আমরা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেও দরিদ্র মায়ের সন্তান। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার প্রয়োজন বোধহয় নেই।’’
#WATCH These allegations should not be made by anyone against farmers. We express our deepest respect towards farmers. They are 'annadatas': Defence Minister Rajnath Singh on being asked about farmers being termed 'naxals' and 'khalistanis' pic.twitter.com/d8B8i3C8qc
— ANI (@ANI) December 30, 2020
আরও পড়ুন: ঘৃণার রাজনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ, যোগীকে চিঠি শতাধিক আইএএস-এর
আরও পড়ুন: নিষ্ফলা ছ’বারের পর আজ ফের বৈঠক, আইন রদেই অনড় চাষিরা
কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য করা উচিত নয়। ভারত বাইরের কারও হস্তক্ষেপ চায় না। নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে নেব আমরা। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তা নিয়ে বাইরের কোনও দেশের মন্তব্য করার অধিকার নেই।’’
কৃষকদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইনে সংশোধন ঘটিয়েছে বলেও দাবি করেন রাজনাথ। তাঁর মতে, আগামী দু’বছর অন্তত আইনটি কার্যকর হতে দেওয়া উচিত। তাতে যদি কৃষকরা লাভবান না হন, তখন তাঁদের দাবি মেনে সংশোধন ঘটানো যেতে পারে। কৃষকদের এই আন্দোলন অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক বলেও মন্তব্য করেন রাজনাথ।