নামদেও দাস ত্যাগী
বেজায় চটে আছেন ‘কম্পিউটার বাবা’!
একে গোমাতাদের জন্য কোনও প্রকৃত মায়া মমতা নেই, তায় লোক দেখানো গো মন্ত্রক খুলে বসে আছে শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার। ‘মাতা’ নর্মদার উন্নতিসাধনের সরকারি চেষ্টাকেও সুনজরে দেখছেন না কাঁধে অ্যাপেলের ল্যাপটপ ঝোলানো এই জটাজুটধারী। লাগাতার অবাধ খনন চলছে নর্মদার দুই তিরে— এটাই তাঁর চটার কারণ।
মধ্যপ্রদেশে ভোট ২৮ নভেম্বর। এক মাসও নেই তার আগে ‘বিশুদ্ধ’ রাম নাম করার কথা বলে মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে বেশ হইচই বাধিয়েছেন এই ‘কম্পিউটার বাবা’ ওরফে নামদেও দাস ত্যাগী। শুধু শিবরাজের উপরেই নয় বিজেপির রাজ্য শাখার উপরেই ক্ষুব্ধ এই সাধুর কথায়, ‘‘এই গেরুয়া বাহিনী শুধু আখের গোছাতে ব্যস্ত। সাধুসন্তদের জন্য কোনও মাথাব্যথাই নেই।’’
শিবরাজের যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন তাঁর সরকারের এই প্রাক্তন মন্ত্রী। এ বছরই এপ্রিল মাসে আরও চার জন সাধুর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সরকারে যোগ দিয়েছিলেন নামদেও। ছ’মাসের মধ্যেই বনিবনার অভাব ঘটে। মধ্যপ্রদেশ সরকার পৃথক একটি গো মন্ত্রক তৈরি করার পরে মনকষাকষি বাড়ে আরও। নামদেও ইস্তফা দেন মন্ত্রিত্বে। আপাত কারণ গো মন্ত্রকে বাবাজিকে রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। কম্পিউটার বাবা বলেন, ‘‘আলাদা করে এই মন্ত্রক তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। আমরাই দেখে নিতে পারতাম। আমাকে যখন কোনও কাজই করতে দেওয়া হচ্ছে না, তখন এই সরকারে থেকে লাভ কি!’’ নামদেওদের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছিল নর্মদা পরিশোধন বিষয়ক বিভাগের। এ প্রসঙ্গে নামদেওয়ের মন্তব্য, ‘‘আমি শিবরাজজিকে বলেছি নমর্দায় অবৈধ খনন হচ্ছে। যদি আপনার সরকার অথবা পুলিশ এটা বন্ধ না করে তাহলে আমরা সাধুরা গিয়েই তা বন্ধ করব। শিবরাজজির লজ্জা হওয়া উচিত যে নর্মদার কাছে জন্মেও তার জন্য কিছুই করছেন না।’’
রাজ্য রাজনীতির লোকজন বলছেন, শিবরাজের বিরুদ্ধে বিজেপির বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপের খেলা চলছে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে সাধুসন্তদের এই ক্ষোভে। বিজেপির অন্দরের খবর, আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারও খুশি নয় শিবরাজকে নিয়ে। বিজেপি জিতে এলেও তাঁকে ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে কি না তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
প্রথম থেকেই শিবরাজ মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া অন্য সাধুদের তুলনায় নামদেও বেশি নজর কেড়েছেন তাঁর কম্পিউটার প্রীতির জন্য। ল্যাপটপ ছাড়া তিনি থাকেন না। দিগম্বর আখরার এই প্রাক্তন সদস্যের নাকি আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির সমস্ত খুঁটনাটি হাতের মুঠোয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে মধ্যপ্রদেশে আমির খানের ‘পিকে’ ছবিটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে রাজনীতির জগতের নজরে আসেন তিনি। হিন্দু ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করা হয়েছে ওই ছবিতে— এটাই ছিল কম্পিউটার বাবার মূল অভিযোগ। এর পর চলতি বছরের মার্চে নর্মদার দু’পার জুড়ে বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগ তুলে নর্মদা রথযাত্রার ডাক দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আর এক সাধু যোগেন্দ্র মহন্ত। বেগতিক দেখে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। বন্ধ করানো হয় ওই যাত্রা। কংগ্রেসে শিবিরের বক্তব্য, বিনিময়মূল্য হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিত্ব। কিন্তু এখন আর পড়তায় পোষাচ্ছে না। তাই ‘বাবার’ এই অসন্তোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy